ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: দুর্ঘটনার মাত্র কয়েক ঘন্টা আগে (Felix Baumgartner dead), বমগার্টনার ইনস্টাগ্রামে “অত্যধিক বাতাস” সম্পর্কে পোস্ট করেছিলেন, যা চ্যালেঞ্জিং উড়ানের পরিস্থিতির দিকে ইঙ্গিত করেছিল।
মাঝআকাশে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু ফেলিক্স বমগার্টনারের (Felix Baumgartner dead)
বিশ্ববিখ্যাত অস্ট্রিয়ান স্কাইডাইভার ফেলিক্স বমগার্টনার (Felix Baumgartner dead), যিনি ২০১২ সালে ‘এজ অব স্পেস’ থেকে লাফিয়ে বিশ্বরেকর্ড গড়েছিলেন, ৫৬ বছর বয়সে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। ২০২৫ সালের ১৭ জুলাই ইতালির পোর্তো সান্ত’এলপিদিও-তে প্যারাগ্লাইডিং করার সময় এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় তার মৃত্যু হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, ওইদিন powered paraglider চালানোর সময় মাঝআকাশেই ফেলিক্স আচমকা অসুস্থ হয়ে পড়েন। অনুমান করা হচ্ছে, তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন। এর ফলে তিনি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি হোটেলের সুইমিং পুলে পড়ে যান। দুর্ঘটনায় হোটেলের এক তরুণ কর্মী সামান্য আহত হন, তবে ফেলিক্স মারাত্মকভাবে জখম হন। দ্রুত এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ডাকা হলেও চিকিৎসার আগেই ঘটনাস্থলেই তাঁকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
সমাজ মাধ্যমে পোস্ট (Felix Baumgartner dead)
দুর্ঘটনার কয়েক ঘণ্টা আগে ইনস্টাগ্রামে ‘অতিরিক্ত হাওয়া’-র উল্লেখ করে তিনি প্যারাগ্লাইডিং পরিস্থিতি নিয়ে সতর্কতার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। পরে স্থানীয় প্রশাসন ও জরুরি পরিষেবা বাহিনী তার পরিচয় ও মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে। পোর্তো সান্ত’এলপিদিও-র মেয়র মাসিমিলিয়ানো চিয়ারপেলা গভীর শোক প্রকাশ করে বলেন, ফেলিক্স “চরম উড়ানের সাহস ও আবেগের প্রতীক”।
আরও পড়ুন: US President: হাতে একাধিক আঘাতের দাগ! জটিল রোগে আক্রান্ত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প
মহাকাশের প্রান্ত থেকে লাফিয়ে বিশ্বরেকর্ড (Felix Baumgartner dead)
২০১২ সালের ১৪ অক্টোবর ‘রেড বুল স্ট্র্যাটোস’ প্রকল্পে ফেলিক্স বমগার্টনার হেলিয়াম বেলুনে চড়ে পৃথিবীর পৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৩৯ কিলোমিটার উচ্চতায় উঠে যান। সেখানে পৌঁছে প্রেসার স্যুট পরে তিনি লাফ দেন, এবং হয়ে ওঠেন পৃথিবীর প্রথম মানুষ যিনি ফ্রি-ফলে শব্দের গতিকে অতিক্রম করেন। তার এই লাফ বিশ্বরেকর্ড তৈরি করে — এটি ছিল সর্বোচ্চ মানববাহী বেলুন ফ্লাইট, সর্বোচ্চ ফ্রি-ফল এবং দ্রুততম মানব ফ্রি-ফল। মাত্র একটি ছোট লাফে ফেলিক্স পড়ে যান প্রায় শূন্য-মাধ্যমে। ৪ মিনিট ১৯ সেকেন্ড ধরে ফ্রি-ফল করে তিনি ১৩৫৭.৬৪ কিমি প্রতি ঘণ্টা (৮৪৩.৬ মাইল/ঘণ্টা) গতিতে পৌঁছান। এই গতি শব্দের গতিকে ছাড়িয়ে গিয়েছিল।
এই অবতরণ তাকে তিনটি বিশ্বরেকর্ড এনে দেয় — সর্বোচ্চ মানববাহী বেলুন ফ্লাইট, সর্বোচ্চ ফ্রি-ফল এবং দ্রুততম ফ্রি-ফল। আন্তর্জাতিক বিমানচালনা ফেডারেশন (FAI) তার এই কৃতিত্বকে স্বীকৃতি দেয়, যদিও পরবর্তী সময়ে কিছু রেকর্ড অতিক্রম করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: Flesh eating Bacteria: বিশ্বজুড়ে মাংসখেকো ব্যাক্টেরিয়ার আতঙ্ক, জারি সতর্কতা!
“জন্ম উড়বার জন্য” — এক সাহসিকতার প্রতীক
“Born to fly” — এই কথাটি ছিল ফেলিক্সের জীবনের মন্ত্র। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত তিনি এই বিশ্বাসকে বুকে ধরে রেখেছিলেন। বিশ্বের নানা প্রান্তে সাহসী বেস-জাম্পিং করেছেন, মহাকর্ষ ও সীমারেখাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন। তিনি শুধুই একজন স্কাইডাইভার ছিলেন না, ছিলেন এক্সট্রিম খেলাধুলার এক অনুপ্রেরণা। তার মৃত্যুর মাধ্যমে একটি যুগের সমাপ্তি ঘটলেও, ফেলিক্স বমগার্টনারের সাহস, উদ্যম এবং স্বপ্ন আজীবন স্মরণীয় হয়ে থাকবে। এক্সট্রিম ক্রীড়ার জগতে এবং উড়ানপ্রেমী মানুষের মনে তার জায়গা চিরস্থায়ী।