ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ফলহারিণী অমাবস্যা (Folharini Kalipuja) বাংলার তিথি-ক্যালেন্ডারে বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। এই অমাবস্যার দিনটি মা কালীর বিশেষ আরাধনার সঙ্গে জড়িত থাকায় তৎকালীন আধ্যাত্মিকতা ও ধর্মচর্চায় এর গুরুত্ব অপরিসীম। ২০২৫ সালের ফলহারিণী অমাবস্যা ২৬ মে, সোমবার সকাল ১১টা ৯ মিনিটে শুরু হয়ে ২৭ মে, মঙ্গলবার সকাল ৪টা ৪৬ মিনিট পর্যন্ত চলবে। এই সময়কালকে সফল ও পুণ্যময় করতে কিছু বিশেষ আচার-অনুষ্ঠান পালন করার প্রচলন রয়েছে।
গঙ্গা স্নান (Folharini Kalipuja)
জ্যোতিষী রাহুল দে জানাচ্ছেন, অমাবস্যার দিনে (Folharini Kalipuja) গঙ্গায় স্নান করার বিশেষ পুণ্য রয়েছে। যদি সম্ভব হয়, এই দিনে গঙ্গা নদীতে নৈবেদ্যস্বরূপ স্নান করলে শারীরিক ও মানসিক অশুভতা দূর হয় এবং জীবনে শুদ্ধি ও সাফল্যের পথ সুগম হয়। এটি এক প্রাচীন বিশ্বাস যে গঙ্গাজল ও গঙ্গাস্নান পাপক্ষয়ী এবং জীবনের কষ্ট দূর করার অন্যতম মাধ্যম।
মৌনী ব্রত পালন (Folharini Kalipuja)
এছাড়াও, ফলহারিণী অমাবস্যার একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নিয়ম (Folharini Kalipuja) হল মৌনী ব্রত পালন। এই ব্রত পালনকারীরা সম্পূর্ণ নীরবতা ও মননশীলতা অবলম্বন করেন। সেই সঙ্গে মা কালীর প্রতি শ্রদ্ধাস্বরূপ একটি ফল দান করতে হয়, যা পুরো বছর ভক্ষণ করা যাবে না। এই ফল এক বছরের জন্য সংরক্ষণ করতে হয় এবং এই দানের মাধ্যমে ব্রতধারীরা মা কালীর আশীর্বাদ লাভ করে। এটি কেবল দানের এক সহজ ক্রিয়া নয়, বরং আত্মত্যাগ ও ধার্মিকতার এক প্রতীক।
শিবের আরাধনা
অমাবস্যার দিন মা কালীর পুজো করার পাশাপাশি শিবের আরাধনাও অত্যন্ত উপকারী। শিব ও কালীর সম্মিলিত পুজো জীবনের সমস্ত বাধা ও সমস্যার নাশ করে আনন্দ ও সমৃদ্ধি আনে। পুজো করার সময় সততা ও বিশ্বাস অপরিহার্য। নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী দরিদ্র ও অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানো এই দিনটির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এতে সামাজিক কল্যাণের সঙ্গে ব্যক্তিগত সাফল্যের দ্বার উন্মুক্ত হয়।

তেল বা ঘি দিয়ে প্রদীপ জ্বালিয়ে রাখা অত্যন্ত শুভ
সন্ধ্যার পর মূল দরজার সামনে তেল বা ঘি দিয়ে প্রদীপ জ্বালিয়ে রাখা অত্যন্ত শুভ বলে ধরা হয়। এই প্রদীপ অশুভ শক্তিকে দূর করে, ঘরে শান্তি ও সমৃদ্ধি আনে। পাশাপাশি, মাতৃস্থানীয় কোনো মহিলাকে পাঁচটি ফল দান করে প্রণাম করলে আশীর্বাদ লাভ হয়। এই দানের মাধ্যমে পরিবার ও সমাজে সুরক্ষা ও সুসমাচার স্থায়ী হয়।
উন্নতির পথ সুগম হয়
ফলহারিণী অমাবস্যার এই অনুষ্ঠানগুলো পালন করলে ব্যক্তিগত জীবনে শুধু শান্তি ও কল্যাণই আসে না, বরং সামগ্রিক সামাজিক ও আধ্যাত্মিক উন্নতির পথও সুগম হয়। তাই এই পবিত্র দিনে প্রতিটি কর্ম ও দানের প্রতি মনোযোগী হওয়া উচিত। ফলহারিণী অমাবস্যা শুধু একটি দিন নয়, এটি আমাদের জীবনের মনোভাব ও আচার-আচরণকে উন্নত করার এক মূল্যবান সুযোগ।
আরও পড়ুন: Research on Malaria: মশাকেই দেওয়া হবে ওষুধ, এতেই কমবে ম্যালেরিয়া! নয়া আবিস্কারে চক্ষু চড়কগাছ!
সুতরাং, ২০২৫ সালের ২৬ মে থেকে ২৭ মে পর্যন্ত ফলহারিণী অমাবস্যার এই সময়সীমায় গঙ্গায় স্নান করা, মৌনী ব্রত পালন করা, মা কালীর ও শিবের পুজো করা, দরিদ্রদের সাহায্য করা এবং সন্ধ্যায় প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করা যেন একান্ত নিয়ম হয়ে ওঠে। এতে আমরা জীবনের সমস্ত কষ্ট ও অশুভতা দূর করে সুখ-শান্তির সঞ্চার করতে পারব। এই অমাবস্যা আমাদের জন্য এক নতুন শুরু ও আত্মশুদ্ধির প্রতীক হয়ে উঠুক।