ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: বিশ্বভারতীর (Sonajhuri Forest) তরফে আগেই জানানো হয়েছে, ১৪ মার্চ নয়, ১১ মার্চ বসন্তোৎসব অনুষ্ঠিত হবে। সেখানেও প্রবেশ নিষিদ্ধ বহিরাগতদের। এ বার সোনাঝুরি হাটেও আবির বা রং খেলা যাবে না। বন দপ্তরের তরফে ইতিমধ্যেই সেখানে দোল খেলার উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করে ব্যানার টাঙানো হয়েছে। জানানো হয়েছে, সোনাঝুরি জঙ্গলে আবির খেলা, গাড়ি পার্কিং, ড্রোন উড়িয়ে ছবি তোলা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। তবে হস্তশিল্প ও ব্যবসায়ীদের স্বার্থেই সোনাঝুরি হাট স্বাভাবিক রাখা হয়েছে।
বিশ্বভারতীতেও হচ্ছে না বসন্তোৎসব (Sonajhuri Forest)
জেলার বনদপ্তরের (Sonajhuri Forest) আধিকারিক রাহুল কুমার বলেন, “বন সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী সোনাঝুরি জঙ্গলে লক্ষাধিক মানুষের সমাগমে কোনভাবেই বসন্তোৎসব বাঞ্ছনীয় নয়। তাই আমরা বিজ্ঞপ্তি দিয়ে স্পষ্ট করেছি দোলের দিন সোনাঝুরি জঙ্গলে আবির খেলা, গাড়ি পার্কিং, ড্রোন ওড়ানো, ছবি তোলা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।” দোলের দিন বিশ্বভারতীতেও হচ্ছে না ঐতিহ্যবাহী বসন্তোৎসব। পরিবর্তে ১১ মার্চ ঘরোয়া ভাবে ক্যাম্পাসের মধ্যেই গৌরপ্রাঙ্গণে পড়ুয়া, অধ্যাপক-অধ্যাপিকা, আশ্রমিকদের নিয়েই বসন্তোৎসব করবে বিশ্বভারতী। সেখানে বাইরের কেউ ঢুকতে পারবে না বলে জানা যাচ্ছে।
সোনাঝুরি জঙ্গলে বসন্তোৎসব নিষিদ্ধ (Sonajhuri Forest)
২০১৯ সালের পর থেকে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ শুধুমাত্র ঘরোয়া ভাবে বসন্ত উৎসব পালন করছে (Sonajhuri Forest)। সেখানে বহিরাগতদের কোনওরকম প্রবেশাধিকার থাকে না। সেই কারণেই বোলপুর ও শান্তিনিকেতনের বিভিন্ন এলাকায় আলাদাভাবে বসন্ত উৎসব পালিত হয়। ২০২৪ সালে স্থানীয় বোলপুর পুরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের পুর প্রতিনিধি সংগীতা দাসের তত্ত্বাবধানে সোনাঝুরি জঙ্গলে বসন্তোৎসব হয়েছিল। অত্যাধিক ভিড় ও যানজটে নাজেহাল হতে হয়েছিল সকলকেই। বিঘ্নিত হয়েছিল জঙ্গলের পরিবেশ। তাই এবছর বনদপ্তর সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী, সোনাঝুরি জঙ্গলে বসন্তোৎসব নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে।
আরও পড়ুন: Malda Hawkers Market: ভারত জয়ের সেলিব্রেশন, বাজি ফাটাতে গিয়ে মালদহের হকার্স মার্কেটে আগুন
হস্তশিল্পদের স্বার্থে সোনাঝুরি হাট স্বাভাবিক
এই প্রসঙ্গে হাট কমিটির সভাপতি তন্ময় মিত্র বলেন, “বনদপ্তর এবছর নির্দেশ দিয়েছে জঙ্গলে কোনও রকম আবির খেলা বসন্তোৎসব করা যাবে না। দোলের দিন দূরদূরান্তের পর্যটক সহ স্থানীয়দের ভিড় হয়, যানজট তৈরি হয়। লক্ষাধিক মানুষের সমাগমে জঙ্গল নষ্ট হয়। তাই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বনদপ্তর। তবে হস্তশিল্প ও ব্যবসায়ীদের স্বার্থেই সোনাঝুরি হাট স্বাভাবিক রাখা হয়েছে। সকলে কেনাকাটা করতে হাটে আসতে পারবেন।”
জঙ্গলের পরিবেশ নষ্ট হয়
প্রতিবছর প্রচন্ড ভিড় হয় শান্তিনিকেতনে। সোনাঝুরি জঙ্গলে প্রচুর পর্যটক আসেন। এই বছরেও দোলের দিন ভিড়ের আশা রয়েছে। হোটেল-গেস্ট হাউসে বুকিং প্রায় সব শেষ। তবে প্রতিবছর অনেকেই পলাশ গাছ নিধন করে ফুলের মালা গলায় পড়ে ঘুরে বেড়ান বলে অভিযোগ। এছাড়াও লক্ষাধিক মানুষের সমাগমে জঙ্গলের পরিবেশ নষ্ট হয়। বোলপুর বনদফতর সূত্রে খবর, জঙ্গল এলাকায় বিপুল মানুষের যাতায়াত এবং রঙ খেলার জেরে ক্ষতিগ্রস্ত হয় গাছ। প্রচুর সংখ্যক গাড়ি আসায় পার্কিং করতে গিয়েও বন দফতরের জমি ও গাছ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সেই কারণেই এই সিদ্ধান্ত বলে মনে করা হচ্ছে।
পর্যটকদের মন ভারাক্রান্ত
দোল পূর্ণিমার দিন সেখানে পর্যটক এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের প্রবেশাধিকার থাকলেও রঙ খেলা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই অন্যান্য জায়গা থেকে যেসব পর্যটক শান্তিনিকেতনে যাওয়ার জন্য টিকিট কেটে ছিলেন তা বাতিল করতে শুরু করেছেন। আর তাই শান্তিনিকেতনে ঘুরতে আসা পর্যটকদের মন এখন ভারাক্রান্ত।