Last Updated on [modified_date_only] by Debu Das
ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল : ভারত বিশ্বের অন্যতম সামরিক শক্তি হিসেবে দ্রুত এগিয়ে চলেছে(Future Weapons of India)। ক্রমবর্ধমান ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা এবং প্রতিবেশী দেশগুলির সঙ্গে কৌশলগত প্রতিদ্বন্দ্বিতার প্রেক্ষাপটে ভারত তার প্রতিরক্ষা খাতে বিশেষ জোর দিচ্ছে। দেশের প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থা (ডিআরডিও), ভারতীয় নৌ, স্থল ও বায়ুসেনা মিলে আগামী দিনের জন্য বেশ কিছু অত্যাধুনিক অস্ত্রশস্ত্র তৈরি করছে। এই অস্ত্রগুলি কেবল ভারতীয় সেনার শক্তি বাড়াবে না, বরং বৈশ্বিক প্রতিরক্ষা প্রযুক্তির মানচিত্রে ভারতের অবস্থানকেও আরও উঁচুতে নিয়ে যাবে। নিচে ভারতের ভবিষ্যতের ৫টি গুরুত্বপূর্ণ সামরিক অস্ত্রের বিবরণ দেওয়া হল।
১. এএমসিএ যুদ্ধবিমান (Future Weapons of India)
ভারতের প্রতিরক্ষা প্রযুক্তির অন্যতম বড় প্রকল্প হল এএমসিএ(Future Weapons of India)। এটি একটি পঞ্চম প্রজন্মের স্টেলথ যুদ্ধবিমান, যা সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি হচ্ছে।
- বৈশিষ্ট্য:
- রাডার এড়ানোর ক্ষমতা বা স্টেলথ টেকনোলজি
- সুপারসনিক গতিতে ওড়ার ক্ষমতা
- উন্নতমানের অস্ত্র সিস্টেম সংযুক্ত করার সুবিধা
- নেটওয়ার্ক-সেন্ট্রিক ওয়ারফেয়ার বা ডিজিটাল যুদ্ধের জন্য উপযোগী
এই বিমান ভারতীয় বায়ুসেনাকে ভবিষ্যতে আরও আধুনিক ও প্রতিযোগিতামূলক করে তুলবে, বিশেষত চিন ও পাকিস্তানের যুদ্ধবিমানের মোকাবিলায় এটি কার্যকরী ভূমিকা রাখবে।
২. কেএ-৪ সাবমেরিন উৎক্ষেপণযোগ্য ব্যালিস্টিক মিসাইল
ভারত ইতিমধ্যেই পারমাণবিক সক্ষম সাবমেরিন অরিহন্ত তৈরি করে বিশ্বে নজর কেড়েছে(Future Weapons of India)। এবার তার সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে কেএ-৪ মিসাইল।
- বৈশিষ্ট্য:
- সাবমেরিন থেকে উৎক্ষেপণযোগ্য
- ৩,৫০০ কিমি দূরত্ব পর্যন্ত আঘাত হানতে সক্ষম
- পারমাণবিক ওয়ারহেড বহনের ক্ষমতা
এই মিসাইল ভারতের নিউক্লিয়ার ট্রায়াড-কে (স্থল, জল ও আকাশ থেকে পারমাণবিক আঘাত হানার ক্ষমতা) আরও শক্তিশালী করবে। ফলে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় নির্ভরযোগ্য প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক গুণ বৃদ্ধি পাবে।

আরও পড়ুন : SCO Summit 2025 : সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন কী? কারা সদস্য ? কী কাজ এই সংস্থার ?
৩. সি-আরএএম প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা (Future Weapons of India)
ভারতের (DRDO) সীমান্তবর্তী এলাকাগুলি বারবার শত্রুর গোলা, মর্টার ও রকেট হামলার মুখে পড়ে(Future Weapons of India)। এই পরিস্থিতিতে ভারতের ভবিষ্যতের প্রতিরক্ষা পরিকল্পনায় বড় ভূমিকা নেবে সি-আরএএম ব্যবস্থা।
- বৈশিষ্ট্য:
- স্বল্প-দূরত্বে শত্রুর নিক্ষেপ করা গোলা বা রকেট শনাক্ত ও ধ্বংস করতে সক্ষম
- উন্নতমানের রাডার ও সেন্সর প্রযুক্তি ব্যবহার
- সীমান্তে মোতায়েন করা হলে সেনা শিবির, গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা এবং শহর রক্ষা করা সম্ভব হবে
এই প্রযুক্তি কার্যকর হলে সীমান্ত সুরক্ষা অনেকটাই জোরদার হবে।

আরও পড়ুন : Myanmar Crisis : মায়ানমারের জুন্টা প্রধানের সঙ্গে বৈঠক, নির্বাচনে সহায়তা ভারতের
৪. হাইপারসনিক ক্রুজ মিসাইল (Future Weapons of India)
বর্তমানে ভারত-রাশিয়া যৌথভাবে তৈরি ব্রহ্মোস বিশ্বের দ্রুততম ক্রুজ মিসাইলগুলির একটি(Future Weapons of India)। তবে ভবিষ্যতে এর আরও উন্নত সংস্করণ BrahMos-II তৈরি হচ্ছে।
- বৈশিষ্ট্য:
- শব্দের গতির ৭ গুণ (ম্যাক ৭) বেগে ছুটতে সক্ষম
- ১,০০০ কিমি পর্যন্ত রেঞ্জ
- ভূমি, আকাশ ও জাহাজ থেকে উৎক্ষেপণযোগ্য
এই হাইপারসনিক মিসাইল ভারতীয় সেনাকে বিশাল কৌশলগত সুবিধা দেবে। শত্রুপক্ষের প্রতিরক্ষা ভেদ করে মুহূর্তে আঘাত হানতে সক্ষম হবে এটি।
৫. ডিরেক্টেড এনার্জি ওয়েপন (Future Weapons of India)
লেজার বা উচ্চ-শক্তির বিম ব্যবহার করে শত্রু ড্রোন, মিসাইল ও বিমান ধ্বংস করার প্রযুক্তিকে বলা হয় ডিরেক্টেড এনার্জি ওয়েপন। ভারত এই প্রকল্পে কাজ করছে(Future Weapons of India)।
- বৈশিষ্ট্য:
- শত্রুপক্ষের ড্রোন ও মিসাইল দ্রুত ধ্বংস করার ক্ষমতা
- প্রচলিত গোলাবারুদের মতো ব্যয়বহুল নয়
- স্যাটেলাইট প্রতিরক্ষার ক্ষেত্রেও ব্যবহার করা যাবে
ডিইডব্লিউ ভারতের ভবিষ্যতের প্রতিরক্ষা নীতিতে একেবারেই নতুন দিগন্ত খুলে দেবে।
কৌশলগত তাৎপর্য(Future Weapons of India)
এই পাঁচটি অস্ত্র কেবল প্রযুক্তিগত উন্নয়ন নয়, বরং ভারতের আত্মনির্ভর ভারত উদ্যোগের সঙ্গেও যুক্ত(Future Weapons of India)। এগুলি চালু হলে—
- চিনের জে-২০ স্টেলথ ফাইটার বা পাকিস্তানের নতুন যুদ্ধবিমানের মোকাবিলায় ভারতের অবস্থান মজবুত হবে।
- পারমাণবিক প্রতিরক্ষা ক্ষমতা বাড়বে।
- সীমান্ত ও কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ স্থানে হামলার ঝুঁকি অনেকটাই কমে যাবে।
- ভবিষ্যতের যুদ্ধক্ষেত্রে ড্রোন ও সাইবার-ভিত্তিক হুমকি প্রতিহত করা সম্ভব হবে।
ভারতের সামরিক শক্তি বর্তমানে বিশ্বের সেরা পাঁচের মধ্যে অন্যতম(Future Weapons of India)। তবে ভবিষ্যতের যুদ্ধ শুধু মানুষ ও প্রচলিত অস্ত্রের ওপর নির্ভর করবে না। প্রযুক্তি হবে আসল হাতিয়ার। সেই দিক থেকেই এএমসিএ, কেএ-৪ মিসাইল, সি-আরএএম, ব্রহ্মোস-২ এবং ডিরেক্টেড এনার্জি ওয়েপন ভারতকে এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে। প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের মতে, এই অস্ত্রগুলি পূর্ণমাত্রায় কার্যকর হলে ভারত শুধু দক্ষিণ এশিয়ায় নয়, বৈশ্বিক সামরিক শক্তির ক্ষেত্রেও বড় ভূমিকা পালন করবে।