Last Updated on [modified_date_only] by Aditi Singha
ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: উত্তম কুমারের ব্যক্তিগত জীবনের আচার-অনুষ্ঠান (Ganesh Chaturthi), তাঁর বিশ্বাস, এবং সেই সঙ্গে টলিউড ইন্ডাস্ট্রিতে তাঁর অবদান—সবকিছুই আজ কিংবদন্তির অংশ। অনেকেই জানেন, মহানায়কের ভবানীপুরের বাড়ির লক্ষ্মীপুজো ছিল একসময় বিশেষভাবে জনপ্রিয়। সেই পুজোয় টলিউডের নামজাদারা হাজির হতেন, এবং নিজে মহানায়ক কোমর বেঁধে নেমে পড়তেন সব আয়োজনের কাজে। কিন্তু খুব কম মানুষই জানেন, ময়রাস্ট্রিটের বাড়িতে তিনিই প্রথম বাংলার নায়ক হিসেবে গণেশ পুজোর প্রচলন করেছিলেন।

মুম্বই থেকে শেখা, নাকি স্বপ্নে নির্দেশ? (Ganesh Chaturthi)
লার দর্শকের কাছে তিনি ছিলেন শুধু সিনেমার তারকা নন, বরং এক সামাজিক আইকন (uttam kumar)। বাংলা ছবির পাশাপাশি কয়েকটি হিন্দি ছবিতেও কাজ করেছিলেন উত্তম কুমার। যদিও মায়ানগরীতে তিনি বিশেষ সাফল্য পাননি। “ছোটি সি মুলাকাত” ছবির ব্যর্থতা তাঁকে প্রযোজক হিসেবেও আঘাত করেছিল। কিন্তু এই সময়ে মুম্বইয়ে থাকার ফলে কাছ থেকে তিনি দেখেছিলেন গণেশ উৎসবের আড়ম্বর। রাজ কাপুরের বাড়ির গণেশ পুজোর আমন্ত্রণে গিয়ে জমকালো উৎসব দেখে তিনি মুগ্ধ হয়েছিলেন।
অনেকে মনে করেন, সেই থেকেই তাঁর মনে গণেশ পুজো করার বাসনা জন্ম নেয়। কিন্তু ঘনিষ্ঠদের মতে, আসল কাহিনি আরও রহস্যময়। ষাটের দশকে মুম্বই থেকে কলকাতায় ফেরার কিছুদিন পর এক ভোরে হঠাৎ ঘুম ভেঙে উঠে বসেন উত্তম কুমার। তিনি জানালেন স্ত্রী সুপ্রিয়াকে—“স্বপ্নে গণেশ পুজো দেখেছি। আমাকে বাড়িতে গণেশ প্রতিষ্ঠা করতেই হবে।” আর ঠিক তেমনটাই ঘটেছিল।
নিজের হাতে প্রতিষ্ঠা (Ganesh Chaturthi)
ময়রাস্ট্রিটের বাড়ির ঠাকুরঘরে নিজেই গণেশ মূর্তি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন মহানায়ক। কোনো পুরোহিতকে ডাকেননি, নিজেই নিয়মকানুন মেনে নিত্যপুজো করতেন। হাওড়া ফুলবাজার থেকে প্রতিদিন আসত পদ্মফুল আর জুঁইফুলের মালা। সতীশ ময়রার দোকান থেকে বিশেষ মোদক আনা হত—যেটা নাকি তিনি স্বপ্নেই দেখেছিলেন গণেশের ভোগ হিসেবে।
আরও আশ্চর্যের বিষয়, তাঁর গণেশের সাজ-সজ্জায় ছিল খাঁটি বাঙালি ছাপ। মহারাষ্ট্রীয় গণপতির মতো নয়, একেবারেই অনন্য, বাংলার ঘরানায় সাজানো দেবমূর্তি।
গণেশ চতুর্থীর বিশেষ আয়োজন (Ganesh Chaturthi)
নিত্যপুজোর থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন রূপ নিত গণেশ চতুর্থী। সেদিন পুজো করতেন উত্তম নিজেই, আর ভোগ রান্না করতেন সুপ্রিয়া দেবী। ভোগের মেনু ছিল রাজকীয়—
- খিচুড়ি
- লাবড়া
- পোলাও
- আলুর দম
- ছানার ডালনা
- চাটনি
- মিষ্টি
- সতীশ ময়রার বিশেষ মোদক
- পায়েস
আরও পড়ুন: Language: বলা ও লেখার ভাষা গুলিয়ে ফেলছেন না তো ?
দিনভর পুজো শেষে সন্ধ্যা নামলেই বসত আসর। টলিউডের অজস্র তারকা, পরিচালক, সংগীতশিল্পীরা হাজির হতেন সেই উত্তমের বাড়ির জলসায়। সাদা ধুতি-পাঞ্জাবি পরে পুজোর শেষে গান গাইতেন মহানায়ক নিজেও। শোনা যায়, একবার হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে যুগলবন্দিতে গান শুনেছিল পুরো ইন্ডাস্ট্রি—যা আজও কিংবদন্তির মতো শোনা হয়।