ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: একদিকে ইজরায়েলি বাহিনীর লাগাতার হামলা, অন্যদিকে গাজ়ায় যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনার নতুন দিগন্ত খুলছে (Gaza Ceasefire) । মধ্যস্থতাকারী দেশ হিসেবে মিশর এবং কাতার যুদ্ধবিরতির জন্য নতুন একটি প্রস্তাব দিয়েছে, যা ইতিমধ্যেই স্বাধীনতাপন্থী প্যালেস্টাইনি গোষ্ঠী হামাস মেনে নিয়েছে। হামাসের নেতা খলিল আল-হায়া এক বিবৃতিতে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন এবং আশাপ্রকাশ করেছেন যে ইজরায়েল এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করবে না। তবে কূটনৈতিক মহল মনে করছে, তেল আভিভ এই প্রস্তাবে সম্মতি দেবে কি না, তা নিয়ে যথেষ্ট সংশয় রয়েছে।
গাজ়ায় লাগাতার ইজরায়েলি হামলা (Gaza Ceasefire)
সোমবার ঈদের দিনেও গাজ়ায় ব্যাপক হামলা চালিয়েছে ইজরায়েলি সেনাবাহিনী (Gaza Ceasefire)। ভোর থেকে শুরু হওয়া বিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় নারী ও শিশু-সহ অন্তত ৭০ জন প্যালেস্টাইনি নিহত হয়েছেন এবং শতাধিক আহত হয়েছেন। পাশাপাশি, ইজরায়েলি সেনার তরফে প্যালেস্টাইনি শরণার্থীদের রাফার শরণার্থী শিবিরগুলি দ্রুত খালি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গাজা ভূখণ্ডের দক্ষিণতম শহর রাফার বিভিন্ন শরণার্থী শিবিরে কয়েক লক্ষ গৃহহীন প্যালেস্টাইনি আশ্রয় নিয়েছেন। সেখানে ইজরায়েলি বাহিনী স্থল-অভিযান শুরু করলে ব্যাপক প্রাণহানির আশঙ্কা রয়েছে।
ইজরায়েলের অবস্থান ও যুদ্ধবিরতির শর্ত (Gaza Ceasefire)
ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর (Benjamin Netanyahu) সরকার স্পষ্ট জানিয়েছে যে, হামাসের হাতে বন্দি ৫৯ জন ইজরায়েলি নাগরিককে মুক্তি না দেওয়া পর্যন্ত যুদ্ধবিরতি হবে না (Gaza Ceasefire)। নেতানিয়াহু সরকারের দাবি, হামাসকে পুরোপুরি নির্মূল না করা পর্যন্ত সামরিক অভিযান চলবে।এদিকে বিশ্লেষকরা বলছেন, ইজরায়েলি বাহিনীর হামলার লক্ষ্য শুধুমাত্র হামাসকে ধ্বংস করা নয়, বরং গাজার ভৌগোলিক ও কৌশলগত দখল নেওয়াও হতে পারে। কারণ ইজরায়েল পূর্বে গাজার উত্তরাংশে হামাসের শক্ত ঘাঁটিগুলো ধ্বংস করেছে এবং এখন তারা দক্ষিণের দিকে ক্রমশ অগ্রসর হচ্ছে।

যুদ্ধবিরতির অতীত ও বর্তমান প্রেক্ষাপট (Gaza Ceasefire)
গত জানুয়ারিতে কাতারের মধ্যস্থতায় এবং আমেরিকা ও মিশরের প্রচেষ্টায় সাময়িক যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছিল ইজরায়েল ও হামাস (Gaza Ceasefire)। ১৯ জানুয়ারি থেকে তা কার্যকর হয়েছিল, তবে মার্চের গোড়াতেই ইজরায়েল একতরফাভাবে যুদ্ধবিরতি ভেঙে আবার হামলা শুরু করে।এই মুহূর্তে, যুদ্ধবিরতির প্রয়োজনীয়তা আরও তীব্র হয়ে উঠেছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের একাংশ আশাবাদী যে ইজরায়েল ও হামাস উভয়ই একটি স্থায়ী সমাধানের পথে এগোবে। তবে বাস্তবতা হচ্ছে, ইজরায়েলি বাহিনীর চলমান হামলা এবং নেতানিয়াহুর কঠোর অবস্থানের কারণে যুদ্ধবিরতির বাস্তবায়ন নিয়ে বড় প্রশ্ন রয়ে গেছে।

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া (Gaza Ceasefire)
গাজ়ায় পরিস্থিতি প্রতিদিন আরও ভয়াবহ হয়ে উঠছে (Gaza Ceasefire)। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন এবং রাষ্ট্রসংঘ গাজার সাধারণ মানুষের জন্য জরুরি মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর আহ্বান জানিয়েছে। তবে ইজরায়েলি অবরোধ এবং অবিরাম হামলার কারণে সেসব সাহায্য পৌঁছানো কঠিন হয়ে উঠেছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ যুদ্ধবিরতির জন্য আহ্বান জানালেও, ইজরায়েলি সরকার আমেরিকা ও অন্যান্য পশ্চিমা শক্তিগুলোর সমর্থন পেয়েই তার সামরিক অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে, মিশর ও কাতার যুদ্ধবিরতির জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
কূটনৈতিক অনিশ্চয়তা ও ভবিষ্যৎ (Gaza Ceasefire)
মিশর ও কাতারের প্রস্তাবের ভবিষ্যৎ এখন ইজরায়েলের সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করছে। যদিও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের একাংশ আশা করছে, একটি শান্তিপূর্ণ সমাধান বেরিয়ে আসবে, তবে কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তেল আভিভের বর্তমান অবস্থান অনুযায়ী, যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা এখনও নিশ্চিত নয়। পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ গাজায় শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপের আহ্বান জানাচ্ছে। তবে বাস্তবতা হলো, এই যুদ্ধবিরতি কবে কার্যকর হবে এবং কতদিন স্থায়ী হবে, তা এখনো অনিশ্চিত।