ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজ়ার খান ইউনিস শহরে যখন ইজ়রায়েলি বোমার আঘাতে একের পর এক শিশু ও সাধারণ নাগরিকের মৃত্যু ঘটছে, তখন নাসের হাসপাতালে চিকিৎসা করছিলেন শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ড. আলা-আল-নাজ্জার(Gaza Crisis )। এমনই এক দিনে তিনি হারালেন নিজের ৯ সন্তানকে—একটি ইজ়রায়েলি বোমারু বিমানের হামলায়।
বাড়িতে ইজ়রায়েলি বোমা (Gaza Crisis)
শুক্রবার রাতে তাঁর নিজের বাড়িতেই ইজ়রায়েলি বোমা এসে পড়ে(Gaza Crisis )। সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, হামলার সময় বাড়িতে ছিলেন তাঁর স্বামী এবং ১০ সন্তান। বিস্ফোরণে ৬ থেকে ১২ বছরের মধ্যে বয়সের ৯টি শিশুর মৃত্যু হয়। ধ্বংসস্তূপ থেকে যেটুকু দেহাংশ উদ্ধার হয়, তা নিয়ে যাওয়া হয় নাসের হাসপাতালেই—সেই হাসপাতালে যেখানে ড. নাজ্জার কাজ করছিলেন। সেখানে নিজের সন্তানদের পোড়া, খণ্ডবিখণ্ড দেহ দেখে ভেঙে পড়েন তিনি।
গুরুতর জখম অবস্থায় চিকিৎসাধীন (Gaza Crisis )
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, চিকিৎসকের স্বামী এবং ১১ বছরের একটি সন্তান গুরুতর জখম অবস্থায় চিকিৎসাধীন(Gaza Crisis )।ইজ়রায়েলি সেনার তরফে এই হামলা নিয়ে কোনও মন্তব্য করা হয়নি। তবে শনিবার এক বিবৃতিতে তারা জানায়, শুক্রবার থেকে শুরু করে ১০০টিরও বেশি লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালানো হয়েছে গাজ়া জুড়ে।গাজ়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী, শুধুমাত্র শুক্রবার দুপুর থেকে শনিবার দুপুর পর্যন্ত ইজ়রায়েলি হামলায় অন্তত ৭৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্তদের মধ্যে রয়েছে বহু শিশু, মহিলা এবং বয়স্ক।

নাগরিকদের উপর বিমান হামলা(Gaza Crisis )
ইজ়রায়েল (Benjamin Netanyahu) বারবার দাবি করে আসছে, হামাস সাধারণ বসতির মধ্যে সামরিক ঘাঁটি তৈরি করে বলেই তাদের এই হামলা চালাতে হচ্ছে(Gaza Crisis )। তবে মানবাধিকার সংগঠনগুলি ও রাষ্ট্রপুঞ্জ বলছে, এ ভাবে সাধারণ নাগরিকদের উপর লাগাতার বিমান হামলা আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।এদিকে, পরিস্থিতির ভয়াবহতায় উদ্বিগ্ন রাষ্ট্রপুঞ্জ গাজ়ায় জরুরি মানবিক ত্রাণ পাঠাতে শুরু করেছে। খাবার, পানীয় জল, ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জাম নিয়ে ট্রাক পাঠানো হচ্ছে, যার নিরাপত্তায় মোতায়েন রয়েছেন স্থানীয় স্বশাসিত কর্তৃপক্ষের রক্ষীরা। তবে অভিযোগ উঠেছে, ইজ়রায়েলি ড্রোন হামলায় ছ’জন রক্ষী নিহত হয়েছেন। ফলে বহু এলাকায় ত্রাণ পৌঁছনো সম্ভব হচ্ছে না।

আরও পড়ুন:Russia-Ukraine War : রুশ হামলায় কেঁপে উঠল কিভ, যুদ্ধের মাঝে বন্দি বিনিময়ও জারি!
জীবনদায়ী ত্রাণ পৌঁছানো(Gaza Crisis )
রাষ্ট্রপুঞ্জ জানিয়েছে, এই মুহূর্তে গাজ়ার প্রায় প্রতিটি এলাকায় জীবনদায়ী ত্রাণ পৌঁছানো অত্যন্ত জরুরি হয়ে উঠেছে। যুদ্ধ যত দীর্ঘায়িত হচ্ছে, ততই শিশুদের এবং সাধারণ মানুষের জীবনের মূল্য যেন দিনে দিনে কমে আসছে—এই চিত্র বার বার হৃদয়বিদারক করে তুলছে গোটা মানবতাকে।