ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: পরিবেশ আন্দোলনের নেত্রী গ্রেটা থুনবার্গ-সহ ১২ সদস্যের একটি আন্তর্জাতিক প্রতিনিধিদলকে বহনকারী নৌকা ‘মাদলীন’কে গাজা উপকূলে পৌঁছনোর আগেই আটক করল ইজরায়েলি সেনাবাহিনী (Gaza Crisis)। সোমবার ভোররাতে ভূমধ্যসাগরে গাজার অদূরে আন্তর্জাতিক জলসীমায় এই অভিযান চালানো হয়। ইজরায়েলি নৌসেনা নৌকাটিতে ওঠার পরে, সমস্ত যাত্রী ও ক্রু সদস্যদের গ্রেফতার করে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেয়।
‘ফ্রিডম ফ্লোটিল্লা কোয়ালিশন’ (Gaza Crisis)
এই নৌকাটি ছিল যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজাবাসীর জন্য ত্রাণসামগ্রী বহনকারী(Gaza Crisis)। ইতালির সিসিলি দ্বীপ থেকে গত ৬ জুন যাত্রা শুরু করে নৌকাটি। আন্তর্জাতিক মানবিক সংগঠন ‘ফ্রিডম ফ্লোটিল্লা কোয়ালিশন’ (FFC)-এর উদ্যোগে এই যাত্রা সংগঠিত হয়। নৌকার নামকরণ করা হয় গাজার প্রথম মহিলা মৎস্যজীবী মাদলীন কুবালার নামে।নৌকায় ছিলেন গ্রেটা থুনবার্গ ছাড়াও ইউরোপীয় ইউনিয়নের ফরাসি সাংসদ রিমা হাসান, যিনি দীর্ঘদিন ধরে প্যালেস্টাইনিদের পক্ষে কথা বলে আসছেন। অতীতে ইজরায়েল তাঁর উপর প্রবেশাধিকারে নিষেধাজ্ঞাও জারি করেছে। রবিবার রাতে রিমা নিজের এক্স হ্যান্ডলে জানান, রাত ২টো নাগাদ তাঁদের সকলকে গ্রেফতার করা হয়। তার আগে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে লেখেন, “এই রাতটা আমাদের জন্য খুব বিপজ্জনক। ইজরায়েলি বাহিনী আমাদের আক্রমণ করতে চলেছে। ইন্টারনেটও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।”
ইজরায়েলের কী দাবি? (Gaza Crisis)
ইজরায়েল (Benjamin Netanyahu) সরকারের দাবি, গাজায় কোনও ত্রাণনৌকা প্রবেশ করলে তার মাধ্যমে হামাসের হাতে অস্ত্র পৌঁছতে পারে(Gaza Crisis)। তাই ২০০৭ সালে হামাস গাজার দখল নেওয়ার পর থেকেই তারা সমুদ্রপথ বন্ধ করে রেখেছে। ইজরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইজরায়েল কাটজ জানান, “আমি সেনাবাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছি, যাতে কোনও ভাবেই ‘মাদলীন’ গাজায় পৌঁছতে না পারে।”ইজরায়েলের বিদেশমন্ত্রক ঘটনার একটি ভিডিয়োও প্রকাশ করেছে এক্স হ্যান্ডলে, যেখানে দেখা যাচ্ছে, লাইফ জ্যাকেট পরিহিত যাত্রীদের শান্তভাবে আটক করছে সেনাবাহিনী। ওই ভিডিয়োয় নৌকার নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার মুহূর্তও ধরা পড়েছে।

আরও পড়ুন:Russia Ukraine War :ইউক্রেনের খারকিভে রুশ হামলায় উত্তপ্ত পরিস্থিতি! মৃত ৩, আহত অন্তত ২২
মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ (Gaza Crisis)
তবে এই অভিযানে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছে আন্তর্জাতিক মহল(Gaza Crisis)। সমালোচকদের বক্তব্য, যুদ্ধের মধ্যেও বেসামরিক ত্রাণ কাজকে আটকানো আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের পরিপন্থী। অনেকেই বলছেন, এই অভিযান গাজার নাগরিকদের দুঃখ-দুর্দশা থেকে দৃষ্টি ঘোরানোর একটি প্রচেষ্টা।অন্যদিকে, ইজরায়েলি সরকার এই মিশনকে ব্যঙ্গ করে বলেছে, “এটি ছিল তারকাখচিত ‘সেলফি নৌকা’। যাত্রীরা যত সাহায্য নিয়ে যাচ্ছিলেন, তার চেয়েও বেশি নিজেরাই খরচ করেছেন।”

আরও পড়ুন:Elon Musk : আসবে মাস্কের নতুন দল! ট্রাম্পের সঙ্গে বিরোধের জেরে রাজনীতির ময়দানে ইলন?
ত্রাণবাহী নৌকা (Gaza Crisis)
প্রসঙ্গত, গত মাসেও গাজার উদ্দেশে একটি ত্রাণবাহী নৌকা পাঠানোর চেষ্টা করে FFC, কিন্তু মাল্টার কাছে ইজরায়েলি ড্রোন হামলায় সেই নৌকার অভিযান ব্যর্থ হয়(Gaza Crisis)।এই ঘটনার পরে আন্তর্জাতিক মহলে চাপ বাড়ছে। জাতিসংঘের কিছু সংস্থা বিষয়টি খতিয়ে দেখার কথা বলেছে। তবে ফিলিস্তিনি জনগণের পাশে দাঁড়াতে ভবিষ্যতে এমন উদ্যোগ অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে ফ্রিডম ফ্লোটিল্লা কোয়ালিশন।