ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: গাজ়া উপত্যকায় ফের একবার রক্তস্নান। ইজ়রায়েলের লাগাতার বোমাবর্ষণে গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে অন্তত ৮১ জন প্যালেস্টিনিয়ানের (Gaza Crisis)। আহত শতাধিক। নিহতদের মধ্যে রয়েছে বহু শিশু ও মহিলা। এক অস্থায়ী শরণার্থী আশ্রয়কেন্দ্রে বিমানহানায় প্রাণ হারিয়েছে একাধিক নিরপরাধ মানুষ।এমন পরিস্থিতিতেই উঠে এসেছে যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা, তবে তা নিয়েও চলছে প্রবল বিভ্রান্তি।
ঘুমন্ত অবস্থায় মৃত্যু ৩১ জনের (Gaza Crisis)
সোমবার ভোররাতে ইজ়রায়েলের বিমানহানায় ফাহমি-আল-জারজাবি স্কুলে আশ্রয় নেওয়া মানুষের উপর আঘাত হানে। সূত্রের খবর, ওই স্কুলে আশ্রয় নিয়েছিলেন যুদ্ধবিধ্বস্ত পরিবারগুলি (Gaza Crisis)। বিস্ফোরণে ঘুমন্ত অবস্থায় মৃত্যু হয় অন্তত ৩১ জনের। অলৌকিক ভাবে বেঁচে যায় সাত বছরের ওয়ার্দ শেখ খলিল। তবে ওই শিশুর মা ও ছয় ভাইবোন মারা গিয়েছে একই হামলায়।এই ঘটনার পরই আন্তর্জাতিক মহলে মানবিকতার প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। জাতিসংঘ, রেড ক্রস, ওয়ার্ল্ড হেল্থ অর্গানাইজেশন-সহ একাধিক সংস্থা গাজ়ার মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব
অন্যদিকে, সোমবারই সংবাদমাধ্যমে জানা যায়, হামাস নাকি আমেরিকার (Donald J. Trump) নতুন যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে সম্মত হয়েছে (Gaza Crisis)। রয়টার্স জানিয়েছে, এক প্যালেস্টিনিয়ন কর্তা জানিয়েছেন যে, আমেরিকার বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফের মাধ্যমে প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনা হামাস মেনে নিয়েছে। তবে এই দাবির উল্টো সুর শোনা যায় আমেরিকার পক্ষ থেকে। আল জ়াজ়িরার প্রতিবেদনে জানানো হয়, আমেরিকার এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা বলেছেন, “হামাসের যুদ্ধবিরতির সম্মতির কথা সম্পূর্ণ মিথ্যা। এমন কোনও সরাসরি আলোচনা হয়নি।”
আরও পড়ুন:Donald Trump Scam Case : AI-ভিডিও দেখিয়ে ট্রাম্পের নাম করে ২০০ জনের থেকে ২কোটি টাকা প্রতারণা!
সাময়িক সংঘর্ষবিরতির পরিকল্পনা (Gaza Crisis)
হোয়াইট হাউস সূত্রে জানা যাচ্ছে, হামাস নয়, বরং ইজ়রায়েলের সঙ্গে সাময়িক সংঘর্ষবিরতির পরিকল্পনা রয়েছে আমেরিকার (Gaza Crisis)। এই পরিকল্পনা অনুযায়ী, উভয় পক্ষকেই অর্ধেক যুদ্ধবন্দিকে মুক্তি দিতে হবে। এর মাধ্যমেই ভবিষ্যতে স্থায়ী যুদ্ধবিরতির আলোচনা সম্ভব হতে পারে বলে আশা করছে ওয়াশিংটন।এই প্রেক্ষাপটে ইজ়রায়েলের পক্ষ থেকে এখনও পর্যন্ত কোনও আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া মেলেনি।প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস ইজ়রায়েলের ভূখণ্ডে হানা দেয়। তার পর থেকেই গাজ়ায় লাগাতার হামলা চালিয়ে আসছে ইজ়রায়েলি সেনা। জানুয়ারিতে একবার যুদ্ধবিরতি হলেও, মার্চের গোড়ায় তা ইজ়রায়েল একতরফাভাবে ভেঙে দেয়।
আরও পড়ুন:Russia Ukraine War : ড্রোন হামলা ঠেকাতে মাছ ধরার জাল! রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে অভিনব কৌশল কিভ সেনার
গাজ়ায় ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় (Gaza Crisis)
বর্তমানে গাজ়ায় ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। খাদ্য, পানীয় জল, বিদ্যুৎ, ওষুধ—সব কিছুরই তীব্র অভাব (Gaza Crisis)। শিশুরা অপুষ্টিতে ভুগছে। হাসপাতালগুলি কার্যত অচল।এই ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যেই যুদ্ধবিরতি নিয়ে জল্পনা বাড়ছে। তবে বাস্তবে তা কার্যকর হবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক মহলের মতে, “যুদ্ধ নয়, এখন প্রয়োজন রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও মানবিক হস্তক্ষেপ।”গাজ়ার মানুষের এখন একটাই চাওয়া—শান্তি।
