ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: যুক্তরাষ্ট্রের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় আগামী চার বছরের মধ্যেই যুক্ত হতে চলেছে অত্যাধুনিক ‘গোল্ডেন ডোম’ বা ‘সোনালি কবচ’(Golden Dome)। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (Donald J. Trump) নিজেই ঘোষণা করেছেন এই নতুন প্রজন্মের ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা পরিকল্পনার কথা, যা তাঁর ভাষায়— “আমেরিকার রক্ষাকবচ, শত্রুর ধ্বংস-ফলক”।
প্রতিশ্রুতি থেকে পরিকল্পনায় (Golden Dome)
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারে একাধিকবার এই প্রযুক্তির কথা বলেছিলেন ট্রাম্প(Golden Dome)। এবার সেই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের পথে এগোল। হোয়াইট হাউস থেকে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করে ট্রাম্প বলেন,
“আমি আমেরিকাবাসীকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম এক নতুন প্রজন্মের প্রতিরক্ষা ঢাল তৈরি করব। আজ সেই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়িত হতে চলেছে। ‘গোল্ডেন ডোম’ শুধু আমেরিকার নয়, সারা বিশ্বের নিরাপত্তা সংক্রান্ত সমীকরণই পালটে দেবে।”
কত খরচ?(Golden Dome)
এই প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য প্রাথমিকভাবে বরাদ্দ করা হয়েছে ২৫০ বিলিয়ন ডলার (আড়াই হাজার কোটি ডলার), যা ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ২ লক্ষ ১৪ হাজার কোটি টাকা। তবে ট্রাম্প স্বীকার করেছেন, প্রকল্পের চূড়ান্ত ব্যয় ১৭৫০ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে (প্রায় ১৫ লক্ষ কোটি টাকা)। এই খরচ সরকারি কোষাগার থেকেই বহন করা হবে।

আরও পড়ুন: Balochistan School Bus Attack : বালোচিস্তানে স্কুলবাসে বিস্ফোরণ, ঘটনায় শিশু-সহ নিহত পাঁচ!
প্রযুক্তির দিক থেকে কী নতুন?(Golden Dome)
আমেরিকার প্রতিরক্ষা সচিব পিট হেগসেথ জানিয়েছেন, ‘গোল্ডেন ডোম’ এমন একটি আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা যা—
- ক্রুজ মিসাইল
- ব্যালেস্টিক মিসাইল
- হাইপারসনিক মিসাইল
—এই তিন ধরনের অস্ত্রকে মাঝ আকাশেই শনাক্ত ও ধ্বংস করতে সক্ষম। এটি হবে মহাকাশ-ভিত্তিক ইনফ্রারেড লেজার প্রযুক্তি-নির্ভর, অর্থাৎ পৃথিবীর কক্ষপথ থেকে শত্রুর ক্ষেপণাস্ত্রের গতিপথ আগাম ধরে ফেলা যাবে এবং তাৎক্ষণিক প্রতিরোধও করা যাবে।

আরও পড়ুন: Donald Trump : ট্রাম্পের সীমান্ত নীতিকে বিশ্বাসঘাতকতা বলে কটাক্ষ বাইডেনের !
তুলনা আয়রন ডোম-এর সঙ্গে(Golden Dome)
বিশ্বজুড়ে খ্যাত ইজ়রায়েলের ‘আয়রন ডোম’ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ২০২৩-২৪ সালের গাজা ও ইরান-ইজরায়েল সংঘর্ষে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। সেই সাফল্যের পরিপ্রেক্ষিতেই ট্রাম্পের এই পরিকল্পনা কিছুটা অনুপ্রাণিত হলেও তিনি দাবি করেছেন,
“গোল্ডেন ডোম’ হবে ‘আয়রন ডোম’-এর চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী, দূরদর্শী ও কার্যকরী।”
আন্তর্জাতিক সংযোগ, কানাডা যুক্ত হতে পারে?(Golden Dome)
ট্রাম্প ইঙ্গিত দিয়েছেন, এই প্রকল্পে কানাডাও যুক্ত হতে পারে। যদিও সে দেশের তরফে এখনও কোনও আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসেনি। ধারণা করা হচ্ছে, ন্যাটো সহযোগিতার পরিসর আরও প্রসারিত করার লক্ষ্যেই এমন প্রস্তাবনা রাখা হয়েছে।
কবে আসছে ‘সোনালি কবচ’?(Golden Dome)
‘গোল্ডেন ডোম’ প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়ে পুরোদমে চালু হতে সময় লাগবে প্রায় ৪ বছর। ট্রাম্প প্রশাসনের লক্ষ্য—২০২৯ সালের মধ্যেই এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পুরোপুরি প্রস্তুত করা।
রাজনৈতিক বার্তা(Golden Dome)
এই ঘোষণার মাধ্যমে ট্রাম্প ২০২8 সালের নির্বাচনের আগে নিজের নেতৃত্বে “একটি নিরাপদ, প্রতিরক্ষিত আমেরিকা” গড়ার প্রতিশ্রুতি আরও জোরালো করলেন। পাশাপাশি তিনি চিন, রাশিয়া এবং উত্তর কোরিয়ার দিকে এক ধরনের হুঁশিয়ারিও ছুঁড়ে দিলেন।