ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে চরম অস্থিরতা ছড়াল গোপালগঞ্জের ঘটনায়(Gopalganj Violence)। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নিজ জেলা গোপালগঞ্জে সহিংসতা, মৃত্যু এবং অগ্নিসংযোগের পর অডিয়ো বার্তায় দেশবাসীকে সরাসরি পথে নামার আহ্বান জানালেন বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেত্রী শেখ হাসিনা।
অডিয়ো বার্তায় ক্ষোভ ও প্রতিরোধের আহ্বান (Gopalganj Violence)
বুধবার রাতে প্রকাশিত অডিয়ো বার্তায় শেখ হাসিনা বলেন, “গোপালগঞ্জে এনসিপি গন্ডগোল করেছে (Gopalganj Violence)। ১৫ জন গুলিবিদ্ধ, সাত জন নিহত। কেউ কেউ বলছে মৃত্যুর সংখ্যা আরও বেশি। এমন একটি ন্যক্কারজনক ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। ঘরে বসে থাকার সময় নেই। যা আছে, তা নিয়েই পথে নামুন। দেশকে ওদের হাত থেকে মুক্ত করতে হবে।”
হাসিনা অভিযোগ করেছেন, গোপালগঞ্জে যে সহিংসতা হয়েছে, তার জন্য নতুন রাজনৈতিক দল এনসিপি (নতুন নাগরিক পাটির) দায়ী। অন্যদিকে, এনসিপি পাল্টা অভিযোগ করেছে, পদযাত্রায় হামলা চালিয়েছে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ কর্মীরা। পরিস্থিতি সামাল দিতে গোপালগঞ্জে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কার্ফু জারি করা হয়েছে।
অগ্নিগর্ভ গোপালগঞ্জ (Gopalganj Violence)
বুধবার জুলাই পদযাত্রা আয়োজন করেছিল এনসিপি(Gopalganj Violence)। সেই মিছিল ঘিরেই গোপালগঞ্জ শহরে ছড়িয়ে পড়ে উত্তেজনা। প্রথম আলো-র রিপোর্ট অনুযায়ী, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও হামলাকারীদের মধ্যে সংঘর্ষে ৪ জন নিহত, আহত অন্তত ৫০ জন। তবে হাসিনার বার্তায় ৭ জনের মৃত্যুর কথা বলা হয়েছে। শহরের একাধিক জায়গায় অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর ও বন্দুকের গুলি চলার ঘটনা ঘটে। সামাজিক মাধ্যমে বেশ কিছু ভিডিও ও ছবি ভাইরাল হয়েছে, যেখানে ধোঁয়া, আগুন এবং আতঙ্কে ছোটাছুটি করতে দেখা যাচ্ছে সাধারণ মানুষকে।

তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি, মাথায় নাসিমুল গনি(Gopalganj Violence)
ঘটনার তদন্তে অন্তর্বর্তী সরকার প্রধান মুহাম্মদ ইউনূস তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। কমিটির নেতৃত্বে রয়েছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি, সঙ্গে আছেন জনপ্রশাসন এবং আইন মন্ত্রকের অতিরিক্ত সচিবরা। দুই সপ্তাহের মধ্যে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

প্রশাসনের বক্তব্য ও এনসিপি-র পাল্টা অভিযোগ(Gopalganj Violence)
বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী জানিয়েছেন, গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী কিছুটা অশান্তির আশঙ্কা থাকলেও, এর মাত্রা প্রশাসনের ধারণার বাইরে ছিল(Gopalganj Violence)। এনসিপি-র দাবি, তাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে হামলা চালানো হয়েছে। আওয়ামী লীগ এবং ছাত্রলীগ এই হামলার পিছনে বলে অভিযোগ। অন্যদিকে, পুলিশ দাবি করেছে, ইতিমধ্যে ২৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং অভিযুক্তদের মধ্যে কিছু পুলিশ সদস্যও আহত হয়েছেন।
গোপালগঞ্জের সহিংসতা শুধুই একটি জেলার সমস্যা নয়—এটি বাংলাদেশের (Yunus) রাজনীতিতে নতুন করে উত্তেজনা এবং দ্বন্দ্বের আগুন জ্বেলে দিয়েছে(Gopalganj Violence)। শেখ হাসিনার অডিয়ো বার্তা একদিকে প্রতিবাদের ঝড় তুলেছে, আবার অপরদিকে নতুন করে রাজনৈতিক মেরুকরণের ইঙ্গিতও দিচ্ছে। আগামী দিনে এই সংঘর্ষ বাংলাদেশের রাজনীতিকে কোন দিকে নিয়ে যাবে, তা সময়ই বলবে। তবে আপাতত গোপালগঞ্জে থমথমে পরিস্থিতির মধ্যে চলছে প্রশাসনিক টানাপড়েন।