ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ভারতের বিভিন্ন রাজ্য তথা (Guillain-Barré Syndrome) পশ্চিমবঙ্গে সম্প্রতি গিয়ান-ব্যারে সিনড্রোম (জিবিএস)-এর প্রাদুর্ভাব উদ্বেগ তৈরি করেছে। এই বিরল স্নায়ু রোগের থাবা এখন শিশু-কিশোরদের উপরও পড়ছে, যার মধ্যে ইতিমধ্যেই দুই কিশোরের মৃত্যু ঘটেছে। আক্রান্ত হয়ে আরও দুই শিশু কলকাতার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই রোগটি যে কোনও বয়সের মানুষকেই আক্রান্ত করতে পারে, তবে শিশুদের মধ্যে এটি মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে।
গিয়ান-ব্যারে সিনড্রোম আসলে কী? (Guillain-Barré Syndrome)
গিয়ান-ব্যারে সিনড্রোম মূলত এক ধরনের স্নায়ু রোগ যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে স্নায়ু কোষে আক্রমণ করে। ক্যাম্পাইলোব্যাক্টর জেজুনি নামক ব্যাক্টেরিয়া এবং সাইটোমেগালোভাইরাসের মতো ভাইরাসগুলির মাধ্যমেও এই রোগ ছড়াতে পারে। সম্প্রতি, নোরোভাইরাসও এর মধ্যে পাওয়া গেছে, যা উদ্বেগের কারণকে আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে।
অসাড় হয়ে যায় হাত-পা? (Guillain-Barré Syndrome)
এই রোগের প্রাথমিক উপসর্গগুলি সাধারণ সর্দি-কাশির মতো হলেও, চিকিৎসা না করালে অবস্থার অবনতি ঘটতে পারে। প্রথমে পা দুর্বল হয়ে যেতে শুরু করে, তারপর এই অসাড়তা হাত ও মুখেও ছড়িয়ে পড়ে। সিভিয়ার জিবিএস-এর ক্ষেত্রে রোগী কথা বলতে, খাবার গিলতে বা শ্বাস নিতে সমস্যার সম্মুখীন হতে পারে, এমনকি জীবন-হানির আশঙ্কাও রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা জানান, এই রোগটি দ্রুত ছড়িয়ে যেতে পারে এবং একবার শরীরে প্রভাব ফেললে তা মারাত্মক হতে পারে।
আরও পড়ুন: Vitamin E in Skin Care: ত্বকের যত্ন নেবে ভিটামিন-ই, খান এসব খাবার
পুণেতে জলদূষণের কারণে সংক্রমণ? (Guillain-Barré Syndrome)
পূর্ব ভারতে, বিশেষ করে পুণের সিংহাগাদ অঞ্চল থেকে এই রোগের অনেক কেস রিপোর্ট হয়েছে। সেখানকার ২১-১৫ বছরের মধ্যে ৮০টি তীব্র ফ্ল্যাকসিড প্যারালাইসিসের কেস পাওয়া গেছে, যা মূলত জিবিএসের কারণেই হয়েছে। পুণে পৌর কর্পোরেশন (পিএমসি) জানিয়েছে, এই অঞ্চলটি জলদূষণের কারণে সংক্রমণের শিকার হতে পারে, কারণ এখানে জল শোধনের কেন্দ্র নেই। সেক্ষেত্রে দূষিত জল থেকেই এই রোগের বিস্তার হতে পারে।

সরকারের পদক্ষেপ
সরকারি পক্ষ থেকে দ্রুত জল পরিশোধন ব্যবস্থা চালু করার জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পিএমসি বিভিন্ন অঞ্চলে জলের নমুনা পরীক্ষা করেছে এবং প্রায় ৬৫,০০০ মানুষের উপর সমীক্ষা পরিচালনা করেছে। রাজ্য সরকারও দ্রুত জলের সংক্রমণ থেকে এই রোগের বিস্তার রোধে পদক্ষেপ গ্রহণের পরিকল্পনা করছে।
উপায়?
এক্ষেত্রে সবচেয়ে জরুরি বিষয় হল, পিপঁড়ে বা অন্যান্য জীবাণু দ্বারা সংক্রমিত জল থেকে নিজেদের বাঁচানোর জন্য সচেতনতা বৃদ্ধি করা। বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিয়েছেন, মদ্যপানের আগে জল ফুটিয়ে ব্যবহার করা উচিত। এছাড়া, বেবিফুড খাওয়ানোর আগে সেই খাবার একবার চেক করে নেওয়া উচিত। স্যালাড জাতীয় খাবার ও বাসি খাবার একেবারেই খাওয়া উচিত নয়। মাছ-মাংস খাবার আগে ভালো করে ধুয়ে নেওয়া উচিত। শিশুদের বাইরের জাঙ্ক ফুড দেওয়া একেবারেই যাবে না।