ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: স্ত্রীর বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগের পর আত্মঘাতী (Gujarat Suicide Case) এক যুবক। বেঙ্গালুরুর ও দিল্লির পর এবার গুজরাটে আত্মঘাতী হলেন আরও এক ব্যক্তি। ইঞ্জিনিয়ার অতুল সুভাষ তাঁর মৃত্যুর আগে সুইসাইড নোট এবং ভিডিও রেখে যান। ঠিক তেমন ভাবেই এবারে দিল্লীতেও কিছুদিন আগে ঘটে যায় তেমনই একটি ঘটনা। এবার একই ঘটনা ঘটতে দেখা গেল গুজরাটে(Gujarat Suicide Case)।
কে এই আত্মঘাতী ব্যক্তি? (Gujarat Suicide Case)
আত্মঘাতী ব্যক্তির নাম সুরেশ সতদিয়া। গুজরাটের বোটাল জেলার বাসিন্দা সুরেশ। মৃতর বয়স ৩৮ বছর। মৃত্যুর আগে(Gujarat Suicide Case) নিজের স্ত্রীর বিরুদ্ধে হেনস্থার অভিযোগ তুলে রেখে গেলেন একটি ভিডিও রেকর্ড।
বেঙ্গালুরুর অতুল ও দিল্লির পুনীতের ঘটনা (Gujarat Suicide Case)
গত ডিসেম্বরে বেঙ্গালুরুর ইঞ্জিনিয়ার অতুলের দেহ উদ্ধার করা হয়েছিল তাঁর ফ্ল্যাট থেকে। একটি ২৪ পাতার সুইসাইড নোট লিখে রেখেগেছিলেন তিনি। তার সাথে পাওয়া যায় দেড় ঘণ্টার একটি ভিডিয়ো রেকর্ডও। তাঁর স্ত্রী নিকিতা এবং শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে দিনের পর দিন হেনস্থা, এবং মিথ্যা মামলার অভিযোগ তোলেন অতুল। তাঁর পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতার করা হয় স্ত্রী নিকিতা, তাঁর মা এবং ভাইকে। যদিও গত শনিবার তাঁরা জামিন পেয়ে যান। অতুলের পর অনুরূপ ঘটনা ঘটতে দেখা গেছে দিল্লিতেও। দিল্লির ওই ব্যক্তির নাম ছিল পুনীত খুরানা। যিনি পেশায় ছিলেন একজন ক্যাফে মালিক। পুনীতও স্ত্রীর বিরুদ্ধে হেনস্থার অভিযোগ তুলে আত্মঘাতী হন একই ভাবে। তিনি অভিযোগ করেছিলেন পুনীতের ক্যাফে ব্যবসার ভাগ চেয়ে দিনের পর দিন তাঁকে স্ত্রী এবং স্ত্রীর পরিবারের লোকজন হেনস্থা করেছেন। এমনকি, তাঁকে আত্মহত্যা করার প্ররোচনা দিয়েছেন তারা বলে দাবি করেছিলেন পুনীত । আত্মহত্যার আগে ৫৯ মিনিটের একটি ভিডিওতে এসব কথা বলে যান তিনি।
আত্মহত্যার আগে সুরেশের ফোন থেকে মেলে ভিডিও (Gujarat Suicide Case)
গত ৩০ ডিসেম্বর নিজের ঘর থেকে উদ্ধার করা হয় সুরেশের ঝুলন্ত মৃতদেহ(Gujarat Suicide Case)। তাঁর এই আত্মহত্যায় হতবাক তাঁর পরিবারের লোক। আত্মহত্যার কারণ স্পষ্ট নয় পরিবারের কারও কাছে। কিন্তু হঠাৎ তারা সুরেশের ফোন থেকে খুঁজে পান একটি ভিডিও রেকর্ড, যার থেকে তাদের থেকে স্পষ্ট হয় এই আত্মহত্যার কারণ।
আরও পড়ুন :Lucknow Murder Case: লখনউর হোটেল রুম থেকে উদ্ধার পাঁচ মহিলার মৃতদেহ, হত্যাকারী একই পরিবারের
কী বলছে সুরেশ ভিডিওতে?
সুরেশের দাম্পত্যজীবন দীর্ঘ ১৭ বছরের। তাঁর স্ত্রীর নাম জয়া। তাঁদের দুটি কন্যা এবং দুটি পুত্র রয়েছে। সুরেশের ফোন থেকে পাওয়া ভিডিওতে তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ এনেছেন সুরেশ। ভিডিওতে দেখা যায় তিনি কাঁদতে কাঁদতে বলেছেন, ‘‘ও আমাকে ঠকিয়েছে। ও কোনও দিন আমার ছিল না। কোনও দিন আমার সন্তানদের জন্যও ও ছিল না। ও আমাকে মরতে বাধ্য করত। ওকে তোমরা শাস্তি দিও। এমন শাস্তি দিও, যা ও সারা জীবন মনে রাখবে।’’ ভিডিওটি কাউকেই পাঠাননি সুরেশ, নিজের ফোনেই রেখে দিয়েছিলেন। পরিবারের লোক সেটি দেখতে পাওয়ায় সুরেশের বাবা পুলিশের হাতে তুলে দেন সেই ভিডিও।
স্থানীয় লোকজনের মতে স্ত্রীর সাথে সুরেশের সম্পর্ক
স্থানীয় সূত্রে খবর, সুরেশের সঙ্গে প্রায় অশান্তি লেগেই থাকতো স্ত্রী জয়ার। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে রোজ দ্বিমত হত তাদের। স্ত্রী জয়া প্রায় বাপের বাড়ি চলে যেতেন ঝগড়া করে। ঠিক কিছু দিন আগে তেমনই এক ঝগড়ার পর বাপের বাড়িতে চলে গিয়েছিলেন জয়া। সুরেশ সেখান তাঁকে ফিরিয়ে আনতে গিয়েছিলেন সেখানে। কিন্তু সেখানে অনেক অনুরোধ করার পরেও জয়া বাড়ি ফেরেননি। তার পরেই সুরেশ বাড়ি ফিরে এমন সিদ্ধান্ত নেন(Gujarat Suicide Case)।
আরও পড়ুন :Atul Subhash: ছেলেকে ব্যবহার করে চলতো টাকা আদায়, সুইসাইড নোটে দাবি অতুলের!
এই ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা
সুরেশের বাবার অভিযোগ এবং পাওয়া ভিডিও রেকর্ডের ভিত্তিতে অভিযুক্ত মহিলা অর্থাৎ সুরেশের স্ত্রী জয়াকে আটক করেছে পুলিশ। আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার ধারায় মামলা করা হয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। বিভিন্নভাবে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করছে জয়াকে। গুজরাট পুলিশ এই মামলার তদন্ত চালাচ্ছে।