ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: বিদেশি পড়ুয়াদের ভিসা সংক্রান্ত বিষয়ে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে ট্রাম্প প্রশাসনের কড়া অবস্থান সাময়িক ভাবে আদালতের নির্দেশে স্থগিত থাকলেও, গোটা উচ্চশিক্ষা জগতে ছড়িয়েছে গভীর উদ্বেগ (Harvard University)। আশঙ্কা, হার্ভার্ড-পরবর্তী নিশানা হতে পারে আরও একাধিক মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়, যেখানে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর স্তরে লক্ষাধিক বিদেশি পড়ুয়া পাঠরত রয়েছেন।
ছাত্র ভিসা বাতিল (Harvard University)
শুক্রবারের আগে, ট্রাম্প প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছিল—হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়কে আগামী শিক্ষাবর্ষে বিদেশি পড়ুয়া ভর্তি করতে হলে ছয়টি শর্ত মানতে হবে (Harvard University)। বর্তমান বিদেশি পড়ুয়াদের এক মাসের মধ্যে অন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্থানান্তরিত হওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয়েছিল। অন্যথায়, তাঁদের ছাত্র ভিসা বাতিল করা হবে। এই পদক্ষেপের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে হার্ভার্ড। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট অ্যালান এম গার্বার বলেন, “সরকারের পদক্ষেপ বেআইনি এবং অযৌক্তিক। এর ফলে মেধার উৎকর্ষে আঘাত আসবে।”হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের মুখপাত্র জেসন নিউটনও ট্রাম্প (Donald J. Trump) প্রশাসনের পদক্ষেপের কড়া সমালোচনা করেছেন। যদিও আদালতের অন্তর্বর্তী নির্দেশে সাময়িক স্বস্তি মিলেছে, কিন্তু ভবিষ্যতে একই ধরণের বিধিনিষেধ অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলির উপর চাপিয়ে দেওয়া হতে পারে বলেই আশঙ্কা।
বিদেশিদের ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা (Harvard University)
প্রসঙ্গত, হার্ভার্ডে বর্তমানে প্রায় ২১ হাজার ছাত্রছাত্রীর মধ্যে প্রায় ৬০০০ জন বিদেশি(Harvard University)। স্নাতক স্তরে বিদেশিদের সংখ্যা প্রায় ১৪ শতাংশ, স্নাতকোত্তর স্তরে তা প্রায় ৩৬ শতাংশ। তবু বিদেশি পড়ুয়াদের অনুপাতে হার্ভার্ডের অবস্থান মার্কিন মুলুকের প্রথম সারির বিশ্ববিদ্যালয়গুলির তুলনায় পিছিয়ে। ইলিনয় টেক, বস্টন, কার্নেগি মেলন, কলম্বিয়া, ইয়েল, এবং জন্স হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয় বিদেশি পড়ুয়াদের দিক থেকে অনেক এগিয়ে।ট্রাম্প প্রশাসনের যুক্তি, বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে চিনা কমিউনিস্ট মতাদর্শ এবং ইহুদি বিরোধিতার মতো ‘জাতীয় নিরাপত্তা’ ইস্যু উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। সেই অজুহাতে ‘হোমল্যান্ড সিকিউরিটি সার্ভিস’-এর মাধ্যমে বিদেশি পড়ুয়াদের নিশানা করা হতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

আরও পড়ুন: Fake Voter : এবার বাদ ভূতুরে ভোটার,জোর সচ্ছতায়! সমস্ত রাজ্যের সঙ্গে বৈঠকে কমিশনার
মার্কিন অর্থনীতিতে বিদেশিদের অবদান (Harvard University)
যদিও বাস্তব বলছে, ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে বিদেশি পড়ুয়ারা মার্কিন অর্থনীতিতে ৪৩০০ কোটি ডলার আর্থিক অবদান রেখেছেন(Harvard University)। ফলে এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হলে শুধু শিক্ষাক্ষেত্রই নয়, অর্থনীতিও বড় ধাক্কা খাবে।এই পরিস্থিতিতে বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় যেমন—ইলিনয়, ইয়েল এবং কলম্বিয়া—তাঁদের ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক কর্মসূচি এবং সভা-সমাবেশের উপর নিয়ন্ত্রণের কথা ঘোষণা করেছে। বহিরাগতদের প্রবেশেও বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। তবে পড়ুয়াদের বাক্স্বাধীনতার অধিকারে এখনও অনড় তারা।

আরও পড়ুন: Russia-Ukraine War : রুশ হামলায় কেঁপে উঠল কিভ, যুদ্ধের মাঝে বন্দি বিনিময়ও জারি!
জাতীয় নিরাপত্তার অজুহাত (Harvard University)
বিশ্লেষকদের মতে, শিক্ষা ও অভিবাসনকে জাতীয় নিরাপত্তার অজুহাতে মিলিয়ে ফেলা যুক্তরাষ্ট্রের ঐতিহ্যবাহী মুক্তচিন্তার পরিকাঠামোকে গভীর সঙ্কটে ফেলতে পারে(Harvard University)। এই অবস্থায় আদালতের ভূমিকা এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলির প্রতিবাদ আগামী দিনে ট্রাম্প প্রশাসনের নীতির বিরুদ্ধে কতটা প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারে, সেটাই এখন দেখার।