ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: বিদেশি পড়ুয়াদের ভর্তিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করায় ট্রাম্প সরকারের বিরুদ্ধে সরব হল হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় (Harvard University)।প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের (Donald J. Trump) প্রশাসনের সিদ্ধান্তকে “বেআইনি ও অযৌক্তিক” বলে আখ্যা দিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম প্রাচীন এবং খ্যাতনামা এই উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান।শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালন সমিতির প্রেসিডেন্ট অ্যালান এম গার্বার এক বিবৃতিতে জানান, “আমাদের হাতে অন্য কোনও পথ খোলা ছিল না। সরকারের এই হঠকারী পদক্ষেপ সরাসরি শিক্ষার অধিকার এবং বৈশ্বিক শিক্ষার আদর্শের পরিপন্থী। আমরা এর বিরুদ্ধে আদালতে আইনি আবেদন দাখিল করেছি এবং স্থগিতাদেশ চেয়েছি।”
কী বলেছে ট্রাম্প প্রশাসন? (Harvard University)
বৃহস্পতিবার মার্কিন প্রশাসন ছয় দফা কড়া শর্ত জারি করে জানায়, ওই শর্ত না মানলে আগামী শিক্ষাবর্ষে হার্ভার্ড সহ কিছু নির্দিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদেশি পড়ুয়া ভর্তি নেওয়া যাবে না (Harvard University)। একই সঙ্গে, বর্তমানে যাঁরা এই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছেন, তাঁদের দ্রুত অন্য কোনও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্থানান্তরিত হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তা না হলে তাঁদের ছাত্রভিসা বাতিল করা হবে বলেও জানানো হয়েছে।এই পদক্ষেপে বিদেশি শিক্ষার্থীদের মধ্যে তীব্র অনিশ্চয়তা ও আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, ট্রাম্প প্রশাসনের এই সিদ্ধান্ত যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থার উদার ভাবমূর্তিকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে এবং আমেরিকার আকর্ষণ হারাবে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের কাছে।
হার্ভার্ডের প্রতিক্রিয়া (Harvard University)
হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের মুখপাত্র জেসন নিউটন এক বিবৃতিতে বলেন, “শিক্ষাকে অস্ত্র বানানো উচিত নয় (Harvard University)। সরকারের এই সিদ্ধান্ত কেবল বিদেশি ছাত্রছাত্রীদের জন্য নয়, সমগ্র শিক্ষাব্যবস্থার জন্য ক্ষতিকর।”বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবি, করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে অনেক বিশ্ববিদ্যালয় অনলাইন ক্লাস চালিয়ে যাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে ‘শরীরী উপস্থিতির’ শর্ত চাপিয়ে দেওয়া যেমন যুক্তিসঙ্গত নয়, তেমনই এটি শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তাকেও ঝুঁকির মধ্যে ফেলবে।

আদালতের দ্বারস্থ হয়ে কী চায় হার্ভার্ড? (Harvard University)
বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনি আবেদনে বলা হয়েছে, সরকারের নির্দেশ সংবিধানবিরোধী (Harvard University)। এতে শিক্ষার অধিকার খর্ব হচ্ছে এবং আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের প্রতি বৈষম্যমূলক মনোভাব প্রদর্শিত হচ্ছে। স্থগিতাদেশের মাধ্যমে তাঁরা সরকারের সিদ্ধান্তকে অন্তর্বর্তীকালীনভাবে রুখতে চান। পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদে এ ধরনের নীতিকে সম্পূর্ণ অবৈধ ঘোষণা করারও দাবি জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়।

আরও পড়ুন: Jyoti Malhotra : দেশের বিভিন্ন রাজ্যে চষে বেড়িয়েছেন জ্যোতি! জেরা করতে চায় নয় রাজ্যের পুলিশ
প্রতিক্রিয়া ও ভবিষ্যৎ প্রভাব (Harvard University)
এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে শুধুমাত্র হার্ভার্ড নয়, অনেক অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়, শিক্ষা সংগঠন এবং অধিকার কর্মীরাও সোচ্চার হয়েছেন (Harvard University)। অনেকের মতে, এই ধরণের সিদ্ধান্ত যুক্তরাষ্ট্রের “সফট পাওয়ার” বা সাংস্কৃতিক প্রভাবকেও দুর্বল করবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, মামলা জেতা না জেতার প্রশ্নে যতটা না গুরুত্ব রয়েছে, তার থেকেও বেশি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো প্রতীকী প্রতিবাদ। হার্ভার্ডের এই পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক শিক্ষার পক্ষে এক গুরুত্বপূর্ণ বার্তা। এই পরিস্থিতিতে আদালতের পরবর্তী রায় এবং প্রশাসনের প্রতিক্রিয়ার উপর নির্ভর করছে, আমেরিকার উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থায় বিদেশি ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যৎ কতটা নিরাপদ।