ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম সারির শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছে (Harvard University)। অভিযোগ, সরকারের তরফ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য বরাদ্দ প্রায় ২২০ কোটি ডলারের (ভারতীয় মুদ্রায় ১৭ হাজার কোটি টাকারও বেশি) অনুদান বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতে অনৈতিক এবং সরকারি ক্ষমতার অপব্যবহার।
ফেডেরাল কোর্টে মামলা (Harvard University)
ম্যাসাচুসেটস প্রদেশের ফেডেরাল কোর্টে দাখিল করা মামলায় হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছে যে, ট্রাম্প (Donald J. Trump) প্রশাসন ইচ্ছাকৃতভাবে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিকে লক্ষ্যবস্তু বানাচ্ছে (Harvard University)। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট অ্যালান গার্বের এক বিবৃতিতে জানান, “অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলার জন্য আমাদের উপর চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে, এবং এই অনুদান বন্ধের সিদ্ধান্ত তারই অংশ।” তিনি আরও বলেন, একটি স্বাধীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে হার্ভার্ড কোনও রাজনৈতিক চাপের কাছে মাথা নত করবে না।
মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি (Harvard University)
এই সিদ্ধান্তের পেছনে মূলত মধ্যপ্রাচ্যের চলমান পরিস্থিতি বড় ভূমিকা পালন করেছে। প্যালেস্টাইন-ইজরায়েল সংঘর্ষের আবহে হার্ভার্ড-সহ একাধিক মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়ে প্যালেস্টাইনের সমর্থনে ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে বিক্ষোভ দেখা যায়। এই পরিস্থিতিতে ট্রাম্প প্রশাসনের দাবি, এসব বিক্ষোভ ইহুদি-বিদ্বেষ ছড়াচ্ছে এবং বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ। প্রশাসনের মতে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব রয়েছে সব ছাত্রছাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার, যা তারা করছে না।

আরও পড়ুন: Russia Ukraine War : ‘এ সপ্তাহেই শেষ’ রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ? ট্রাম্পের বার্তায় নতুন ইঙ্গিত!
অভিযোগ অস্বীকার (Harvard University)
তবে হার্ভার্ড কর্তৃপক্ষ এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তাদের বক্তব্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ইহুদি-বিদ্বেষের কোনও নির্দিষ্ট বা বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ প্রশাসন দেখাতে পারেনি (Harvard University)। তারা আরও বলে, যুক্তরাষ্ট্রের মত একটি গণতান্ত্রিক দেশে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সাংবিধানিক অধিকার এবং শিক্ষাঙ্গনে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ সেই অধিকারেরই অংশ।

আরও পড়ুন: Pralay Missile : “প্রলয়” রপ্তানিতে ভারতের ঐতিহাসিক পদক্ষেপ, প্রথম ক্রেতা হতে চলেছে আর্মেনিয়া!
অনুদান বন্ধ (Harvard University)
এই অনুদান বন্ধ হয়ে গেলে হার্ভার্ডের বহু গবেষণা কার্যক্রম বাধার সম্মুখীন হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, স্বাস্থ্য এবং মানবিক বিষয়ের ওপর যেসব গবেষণার জন্য এই অর্থ বরাদ্দ ছিল, তা বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এতে শুধু বিশ্ববিদ্যালয় (Harvard University) নয়, আন্তর্জাতিক স্তরেও যুক্তরাষ্ট্রের বৈজ্ঞানিক ও শিক্ষাগত অবস্থান ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে বিশেষজ্ঞদের অভিমত।

মতপ্রকাশের স্বাধীনতা (Harvard University)
এই মামলাটি কেবল একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে সরকারের পদক্ষেপ নয়, বরং বৃহত্তরভাবে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, শিক্ষাঙ্গনের স্বায়ত্তশাসন এবং রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার সীমা নিয়ে এক গুরুত্বপূর্ণ বিতর্কের দরজা খুলে দিয়েছে। যদি আদালত হার্ভার্ডের পক্ষে রায় দেয়, তবে তা যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষা ও রাজনীতির ইতিহাসে একটি নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। অন্যদিকে, প্রশাসনের যুক্তি টিকে গেলে ভবিষ্যতে আরও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সরকারের চাপের মুখে পড়তে পারে।
হার্ভার্ড বনাম ট্রাম্প (Harvard University)
সার্বিকভাবে, এই ঘটনাটি প্রমাণ করে যে গণতন্ত্রে শিক্ষার পরিসর এবং মতপ্রকাশের অধিকার একে অপরের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। হার্ভার্ড বনাম ট্রাম্প প্রশাসনের এই আইনি লড়াইয়ের ফলাফল ভবিষ্যতের উচ্চশিক্ষা এবং স্বাধীন মতপ্রকাশের অধিকারকে গভীরভাবে প্রভাবিত করবে।