ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: মুর্শিদাবাদে ওয়াকফ সংশোধিত আইনের প্রতিবাদে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার(Murshidabad Violence)ঘটনায় বিস্ফোরক রিপোর্ট দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট দ্বারা গঠিত তিন সদস্যের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিম। রিপোর্টে শাসক দলের একাধিক নেতার বিরুদ্ধে সরাসরি হিংসায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ করা হয়েছে বলে সূত্রের খবর। এমনকী হিংসা হচ্ছে দেখেও পুলিশ নিষ্ক্রিয় ছিল বলেও উল্লেখ করা হয়েছে ওই রিপোর্টে।
সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা পূর্বপরিকল্পিত (Murshidabad Violence)
মুর্শিদাবাদের হিংসার(Murshidabad Violence) তদন্তে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সৌমেন সেনের ডিভিশন বেঞ্চ ৩ সদস্যের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিম গঠনের নির্দেশ দিয়েছিলেন। সেই কমিটিতে রয়েছেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের রেজিস্ট্রার যোগিন্দর সিং, রাজ্য জুডিশিয়ার সার্ভিসেসের সচিব অর্ণব ঘোষাল ও রাজ্য জুডিশিয়াল সার্ভিসেসের রেজিস্ট্রার সৌগত চক্রবর্তী। দাঙ্গায় আক্রান্ত সমস্ত জায়গা ঘুরে দেখে এই কমিটি যে রিপোর্ট দিয়েছে তাতে বলা হয়েছে, এই সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা পূর্বপরিকল্পিত।
হিংসা বন্ধ করতে উদ্যোগ নেননি স্থানীয় নেতারা(Murshidabad Violence)
রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, ধুলিয়ান পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান তথা প্রশাসক মেহেবুব আলমের গত ১১ এপ্রিল হিংসা (Murshidabad Violence) ছড়ানোয় ভূমিকা ছিল। শাসকদলের স্থানীয় নেতারা বা পুলিশ হিংসা বন্ধ করতে কোনও উদ্যোগ নেননি। মেহেবুব আলম নিজে দাঙ্গাকারীদের সঙ্গে যুক্ত থেকে হিংসা ছড়ান বলে রিপোর্টে উল্লেখ রয়েছে। রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, ১১ এপ্রিল দুপুরের পর আক্রমণ আরও তীব্র হয়। ১১ এপ্রিল তৃণমূলের এক বিধায়ক হিংসাকবলিত এলাকা দেখে ফিরে যান। তিনিও হিংসা বন্ধ করতে পদক্ষেপ করেননি। যার ফলে পরেরদিনও হিংসা জারি ছিল।
আরও পড়ুন: SSC Teachers Protest: বিকাশ ভবনের আন্দোলনকারীদের শো-কজ চিঠি পাঠালো পর্ষদ!
রিপোর্টে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন
রিপোর্টে পুলিশের ভূমিকা নিয়েও বড়সড় প্রশ্ন তোলা হয়েছে। রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, মুর্শিদাবাদের দাঙ্গায় যখন আক্রান্তদের বাড়ি, দোকান, মন্দির ভাঙচুর করা হয়েছে, তখন নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেছে পুলিশ। আক্রান্তদের কাতর আর্তনাদেও দাঙ্গাকারীদের আটকাতে কোনও পদক্ষেপ করেনি পুলিশ। ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটির রিপোর্টে জাফরাবাদে বাবা ও ছেলের খুনের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, খুন হওয়া হরগোবিন্দ দাসের বাড়িতে ঢুকে কুড়ুল দিয়ে দরজা ভাঙে দাঙ্গাবাজরা। তারপর কুড়ুল দিয়ে কুপিয়ে খুন করা হয় হরগোবিন্দ দাস ও তাঁর ছেলেকে।
আরও পড়ুন: Mamata Banerjee: মুখ্যমন্ত্রীর সতর্কবার্তা: সীমান্তে পুলিশকে আরও তৎপর থাকতে হবে!
বেতবোনা গ্রামেই ১১৩ বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত, ভাঙচুর মন্দিরেও
রিপোর্টে বলা হয়েছে, শুধুমাত্র বেতবোনা গ্রামেই ১১৩টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মন্দিরেও ব্যাপক ভাঙচুর হয়েছে। প্রাণ বাঁচাতে আক্রান্তদের রাতের অন্ধকারে নদী পেরিয়ে মালদহ জেলায় আশ্রয় নিতে হয়েছে। আক্রান্তদের জোর করে ফেরানো হয়েছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, সমস্ত আক্রান্তদের ক্ষতির পরিমাণ সমান নয়। তাই সবার জন্য একই ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করলে সমস্যা মিটবে না। প্রত্যেকের ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ সমীক্ষা করে ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করা উচিত।