ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: গত ২৫ জুন কসবা ল’ কলেজে গণধর্ষণকাণ্ডে(Kasba Case) দায়ের হওয়া জনস্বার্থ মামলায় রাজ্যের কাছে কেস ডায়েরি ও রিপোর্ট তলব করল কলকাতা হাইকোর্ট(Calcutta High Court)। আদালতে রাজ্যকে দিতে হবে তদন্তের অগ্রগতি রিপোর্টও। পাশাপাশি নির্যাতিতাকে মামলার পক্ষ করে সমস্ত কপি দিতে নির্দেশ দিলেন বিচারপতি সৌমেন সেন এবং বিচারপতি স্মিতা দাস দে’র ডিভিশন বেঞ্চ।
রাজ্যের কাছে রিপোর্ট তলব হাইকোর্টের(Kasba Case)
কসবা গণধর্ষণকান্ডে(Kasba Case) জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টে(Calcutta High Court)। এদিন মামলার শুনানির শুরুতেই নির্যাতিতার আইনজীবী আদালতকে জানান, তাকে এই মামলায় যুক্ত করা হয়নি। তাই তিনি এই মামলায় যুক্ত হতে চান বলে আদালতে আবেদন করেন। সেই শুনে বিচারপতি সৌমেন সেন প্রশ্ন করেন কেন নির্যাতিতা এবং সাউথ ক্যালকাটা ল’ কলেজকে মামলায় যুক্ত করা হয়নি কেন? কলেজের গভর্নিং বডিতে যুক্ত করা হয়েছে? কী ভাবে এফআইয়ার দায়ের হল- রাজ্যের কাছে সেই নিয়েও রিপোর্ট চাওয়া হবে। তদন্ত প্রক্রিয়া চলুক। প্রাথমিক পর্যায়ে তদন্ত কতদূর এগিয়েছে- তা রাজ্যকে জানাতে হবে বলে জানান বিচারপতি।
কসবা গণধর্ষণকান্ডে হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা(Kasba Case)
কসবা গণধর্ষণকান্ডে(Kasba Case) কলকাতা হাইকোর্টে যে তিনটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছে, তারমধ্যে মামলাকারী বিজয় কুমার সিঙ্ঘলের পিটিশনে একাধিক ত্রুটি থাকায় মামলা প্রত্যাহার করে ফের নতুন করে মামলা দায়ের করতে নির্দেশ দেন বিচারপতি। এই ব্যাপারে বিচারপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করে রাজ্যের আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, খুন ও ধর্ষণের তদন্ত চাওয়া হয়েছে। তাই নতুন করে মামলা ফাইল করা হোক। রাজ্যের আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় মামলার গ্রহণ যোগ্যতা নিয়েই প্রশ্ন তোলেন। সেই সঙ্গে নির্যাতিতা মহিলার পরিচয় প্রকাশ যাতে না করা হয়, সেই আবেদনও জানান আদালতে।
তাঁর বক্তব্য, ‘আমরা সমস্ত রকম আইনি পদক্ষেপ নিয়েছি। ঘটনার তিন ঘণ্টার মধ্যেই মহিলা পুলিশ আধিকারিক মূল অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে। রাজ্য ও কলকাতা পুলিশের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ ভিত্তিহীন। কলকাতা পুলিশ রাজ্য পুলিশকে হেয়ো করবেন না। সংবাদ মাধ্যম ও সমাজ মাধ্যমে মেয়েটির পরিচতদের যে ভাবে দেখানো হচ্ছে তাঁকে চিহ্নিত করা সহজ হয়ে যাচ্ছে। অন্য এক মহিলাকে এমনভাবে দেখানো হচ্ছে যেন তিনিই নির্যাতিতা। এতে তাঁর ভবিষ্যতে ক্ষতি হতে পারে।’ তা শুনে আদালত পরিষ্কার নির্দেশ দিয়েছে, সংবাদমাধ্যম নির্যাতিতার পরিচয় প্রকাশ করা যাবে না। নির্যাতিতা ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের কোনও ছবি বা ভিডিও সরাসরি সম্প্রচার করা যাবে না। এ ব্যাপারে রাজ্যকে পদক্ষেপ করতেও নির্দেশ দেন বিচারপতি। এরপরই কলেজের (আইন) সংবিধান সম্পর্কে রাজ্যের কাছে জানতে চান বিচারপতি।
আরও পড়ুন: Calcutta High Court: বন্ধ থাকবে রাজ্যের সব কলেজের ইউনিয়ন রুম, বড় নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের
সিটের থেকেই তদন্তে সহযোগিতার আবেদন নির্যাতিতার পরিবারের
কসবা গণধর্ষণকান্ডে কলকাতা হাইকোর্টের দায়ের হয়েছে তিন জনস্বার্থ মামলা। সিবিআই তদন্ত এবং আদালতের নজরদারিতে তদন্ত চেয়ে মামলা করেছেন আইনজীবীরাও। কিন্তু নির্যাতিতার পরিবার পুলিশের গঠিত সিটের থেকেই তদন্তে সহযোগিতা চাইছে। কলকাতা পুলিশ যেভাবে তদন্ত করছে সেভাবেই যেন তদন্ত চলে, সেটাই তারা চাইছেন বলে এদিন আদালতে জানান নির্যাতিতার আইনজীবী। তাঁরা সিবিআই তদন্ত চাইছেন না বলেও আদালতকে জানান। সেইসঙ্গে হাইকোর্টে দায়ের হওয়া তিন জনস্বার্থ মামলাতেই তারা যুক্ত হতে চান বলে আদালতে জানান। নির্যাতিতার পরিবারের আইনজীবী বলেন, পুলিশের বিশেষ তদন্তকারী দল যে গতিতে গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করছে, তা যেন বাধাপ্রাপ্ত না হয়, সেটাই আমাদের একমাত্র চাওয়া। তাই এখনই সিবিআই তদন্তের প্রয়োজন নেই।
কেস ডায়েরি পেস করার আবেদন ফিরোজ এডুলজির(Kasba Case)
মামলাকারী অপর আইনজীবী ফিরোজ এডুলজি আদালতে কেস ডায়েরি পেস করার আবেদন জানান। তাঁর দাবি, সমস্ত কেস ডায়েরিতে অনেকগুলো কপি রয়েছে। তারপরই রাজ্যকে কেস ডায়েরি ও এখন পর্যন্ত তদন্তের রিপোর্ট আদালতে পেশ করতে নির্দেশ দেন বিচারপতি সৌমেন সেন। পাশাপাশি নির্যাতিতাকে মামলার সমস্ত কপি দিতে নির্দেশ দেন বিচারপতি সেন। যাতে আদালতে তিনি আইনজীবী মারফত আত্মপক্ষ সমর্থন করতে পারেন। কলেজের পঠনপাঠন যাতে কোনভাবেই বিঘ্নিত না হয়, সেদিকটিও সুনিশ্চিত করতে হবে। ছাত্র-ছাত্রীদের নিরাপত্তাও সুনিশ্চিত করতে রাজ্যকে নির্দেশ দেন বিচারপতি সৌমেন সেন। আগামী ১০ জুলাই মামলার পরবর্তী শুনানি।