ট্রাইব টিভি ডিজিটাল: সারা দিনে কাজের চাপে কিছু ক্ষণ অন্তর অনেককেই চায়ে(Herbal Teas) চুমুক দিতে হয় চাঙ্গা হওয়ার জন্য। এই অভ্যাস অনেকেরই। তবে দুধের বদলে লিকার চায়ে চুমুক দিতে পরামর্শ দিচ্ছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। গবেষণায় প্রমাণিত, যারা নিয়মিত চা খান তাঁরা দীর্ঘ সময়ের জন্য সুস্থ থাকেন। চা স্বাস্থ্যের পক্ষে যথেষ্ট উপকারী। চায়ে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য পাওয়া যায়, কফির চেয়ে কম ক্যাফিন রয়েছে চায়ে যা ওজন হ্রাসেও সহায়তা করে। প্রতিদিন নিয়ম করে লিকার চা খান। এবং অবশ্যি চিনি না দিয়ে। চিনি খেলে এই চায়ের কোনও গুণই থাকে না। তবে বেছে নিন বিভিন্ন রকম হারবাল চা। জেনে নিন কোন হারবাল চায়ে রয়েছে কী গুণ।
গ্রিন টি (Herbal Teas)
গ্রিন টি(Herbal Teas) স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। ওজন কমানোর জন্যে অনেকেই এই চা খেয়ে থাকে। ওজন হ্রাস থেকে রক্তে শর্করার নিয়ন্ত্রণ করতে, কোলেস্টেরল কমাতে ও হজমশক্তি উন্নতি করতে সক্ষম গ্রিন টি। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন যে দিনে এক কাপ থেকে দু কাপ গ্রিন টি পান করা স্বাস্থ্যকর। গ্রিন টি অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর, নিয়মিত খেলে ত্বক, চুল সবই সুস্থ থাকে।

তুলসি চা (Herbal Teas)
যাদের ঠান্ডা লাগার ধাত রয়েছে তাদের জন্য কিন্তু খুবই ভাল তুলসী পাতা। তুলসী পাতার মধ্যেও রয়েছে অ্যান্টিসেপটিক উপাদান। জলে সাত থেকে আটটা তুলসি পাতা ফুটতে দিন। জল ফুটে গেলে ওর মধ্যে চা পাতা দিয়ে ঢেকে রাখুন ১০ মিনিট। এবার ছেঁকে মধু দিয়ে খেয়ে নিন। এতে মাথা ধরাও কেটে যায়। ভীষণ উপকারী তুলসি চা(Herbal Teas)।

আরও পড়ুন:High Blood Pressure: হাইপারটেনশনে ভুগছেন? রইল সহজ সমাধান
আদা চা
নিয়মিত আদা দিয়ে চা(Herbal Teas) খাওয়া হার্টের পক্ষে ভাল,রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এই চা রক্ত জমাট বাঁধা নিয়ন্ত্রণ করে কোলেস্টেরল কম করে এবং রক্ত সঞ্চালন আগের থেকে বৃদ্ধি করে। সর্দি কাশির সময় সামান্য আদা দিয়ে তৈরি চা বাড়ির মা-ঠাকুমারা দিয়ে থাকে, স্বাদে গন্ধে এবং গুণের দিক থেকে আদা খানিকটা সমসাময়িক হলুদ এবং এলাচের। গরম চায়ের সঙ্গে আদা মিশিয়ে খেলে অনেক উপকার পাওয়া যায়। আদাতে ভিটামিন, খনিজ ও অ্যামিনো অ্যাসিড রয়েছে যা রক্ত সঞ্চালন-প্রক্রিয়া উন্নত করে হৃদযন্ত্রকে সুস্থ রাখে। পাশাপাশি আদার রস ধমনিতে চর্বি জমতে বাধা দেয়। ফলে প্রতিদিন আদা-চা পান করলে হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকি অনেকটাই কমবে বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।

গোলাপ চা
গোলাপের সুগন্ধ মনকে আরাম দিতে এবং মানসিক চাপ কমাতে যথেষ্ট। গোলাপের পাপড়ি তাজা বা শুকনো ব্যবহার করা যেতে পারে এবং অন্ধকার না হওয়া পর্যন্ত জলে ভিজিয়ে রাখতে হবে। এবার ঘুমোতে যাওয়ার আগে চুমুক দিন এই চায়ে। এটি মনকে শান্ত করে। ফলে ঘুম আসে তাড়াতাড়ি।

পুদিনা চা
পুদিনা পাতার মূল, পাতা, কান্ড-সহ সমগ্রই গুণে পরিপূর্ণ। পুদিনা পাতা সুগন্ধি হিসাবে রান্নায় ব্যবহার করা হয়। কাবাব, চাটনি, মশলায় ব্যবহার করা হয় পুদিনা পাতা। তেল তৈরিতেও পুদিনা পাতার ব্যবহার হয়ে থাকে। পুদিনার মধ্যে মেন্থল থাকা তা লিকার চায়ের মধ্যে মিশিয়ে খানিকক্ষণ ঢেকে রেখে খেলে ভালো উপকার পাওয়া যাবে বলে মত বিশেষজ্ঞদের।

আরও পড়ুন:Insomnia Treatment: প্রতি রাতে কিছুতেই আসেনা ঘুম? এই উপায় মেনে চললেই সমস্যার সমাধান
ক্যামোমাইল চা
ক্যামোমাইল টি সম্পর্কে এখনও পর্যন্ত অনেকেরই জানা নেই, তবে বিদেশে এই চা খাওয়ার প্রচলন রয়েছে। একরকম ফুল থেকে তৈরি হয় এই চা। ভেষজ চা-এর মধ্যে অন্যতম হল এই ক্যামোমাইল টি। এই চায়ের মধ্যে কোনওরকম ক্ষতিকর ক্যাফেন থাকে না।এই চা খেলে ঘুম ভালো হয়। মূলত দুরকমের ক্যামোমাইল চা ব্যবহার করা হয়- রোমান ও জার্মান। তবে যাঁরা গর্ভবতী, তাঁদের এই চা এড়িয়ে চলারই পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। এই চা সংরক্ষণ করার আলাদা পদ্ধতি রয়েছে, কাঁচের জারে রাখতে হবে, সেই সঙ্গে দেখা প্রয়োজন যেন সূর্যালোক না লাগে পাশাপাশই ঠান্ডা পরিবেশে রাখতে হবে এই চা।

জবা ফুলের চা
জবা ফুলের চা অসাধারণ পুষ্টিকর। এটি উচ্চ রক্তচাপ এবং উচ্চ কোলেস্টেরলের সমস্যা কমায়। একই সঙ্গে হজমের সমস্যাও দূর করে। লিভারের রোগ সারাতেও জবা ফুলের গুণ অনস্বীকার্য, পাশাপাশি ক্যানসারের প্রবণতাকেও কমায় এই চা। জবা ফুলের চায়ে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন C, মিনারেল, অ্যান্টি অক্সিডেন্ট থাকায় উদ্বেগ ও উদ্দীপনা কমাতেও প্রভাব থাকে। এই তা খেতে খানিক টক হওয়ার কারণে অনেকেই একে টক চা বলে থাকে। জবা ফুলের চায়ের স্বাদ অনেকটা ক্র্যানবেরি জুসের মতো। এটি ঠান্ডা বা গরম যেমন খুশি তেমন ভাবেই খাওয়া যায়। এই চায়ে কোনও প্রকার ক্যাফিন না থাকার ফলে শরীরের পক্ষে এটি খুবই উপকারী। এই একাধিক বার খেলেও এর কোনও খারাপ প্রভাব শরীরে পড়ে না, এমনটাই মতামত বিশেষজ্ঞদের।

অপরাজিতা ফুলের চা
আয়ুর্বেদশাস্ত্রে বহু বছর ধরে অপরাজিতা ফুল সুস্থতা ও সৌন্দর্য ধরে রাখার দাওয়াই হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। অপরাজিতা ফুলের চায়ে রয়েছে অ্যান্থোসায়ানিন, প্রোঅ্যান্থোসায়ানিডিন এবং কোয়ারসেটিনের মতো অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। যা অকাল বার্ধক্যের কারণ হিসেবে পরিচিত ফ্রি-র্যাডিকেলের বিরুদ্ধে লড়াই করে। এই চা রক্তচাপ কমিয়ে হৃৎপিণ্ডের ওপর চাপ কমায়। ফলে হৃদ্রোগের ঝুঁকি অনেকটাই কমে আসে। ডায়াবেটিস বা ডায়াবেটিসের ঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তিদের জন্য উপকারী এই চা। চা পানে সতেজ হয় মস্তিষ্ক, বাড়ে এর কার্যকারিতা।
