ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: টানা মেঘভাঙা বৃষ্টি, হড়পা (Himachal Flash Floods) বান এবং ভূমিধসের জেরে কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে হিমাচল প্রদেশ। রাজ্যের প্রায় সব জেলাই এখন কোনও না কোনওভাবে প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত। প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, এই দুর্যোগে এখনও পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে অন্তত ৬৩ জনের। আহত হয়েছেন ১০০-র বেশি মানুষ। নিখোঁজ বহু। সোমবার পর্যন্ত ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টির সতর্কতা জারি রয়েছে রাজ্যজুড়ে।
নিখোঁজদের খোঁজ ও জীবিতদের সুরক্ষা নিশ্চিত (Himachal Flash Floods)
সবচেয়ে ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে মন্ডী (Himachal Flash Floods) জেলায়। এখানেই প্রাণ হারিয়েছেন ১৭ জন। এছাড়া কাংড়ায় ১৩ জন, চম্বায় ৬ জন, শিমলায় ৫ জন, এবং অন্যান্য জেলার মধ্যে বিলাসপুর, হামিরপুর, কিন্নৌর, কুল্লু, লাহুল-স্পিতি, সিরমৌর, সোলান ও উনা থেকেও মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। রাজ্যের প্রশাসনিক ও উদ্ধারকারী দলগুলোর প্রধান লক্ষ্য এখন নিখোঁজদের খোঁজ ও জীবিতদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা।
ভয়াবহ পরিস্থিতি (Himachal Flash Floods)
মন্ডীর থুনাগ এবং বাগসায়ার পরিস্থিতি (Himachal Flash Floods) সবচেয়ে ভয়াবহ। কারসগ ও ধরমপুরে ধস ও হড়পা বানে একাধিক বাড়ি ভেসে গিয়েছে। মন্ডী জেলা থেকেই প্রায় ৪০ জন নিখোঁজ বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে। ধ্বংস হয়েছে বহু বাড়িঘর, ফসলের জমি এবং রাস্তাঘাট। রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের বিশেষ সচিব ডিসি রানা জানিয়েছেন, প্রায় ৪০০ কোটির সম্পত্তি এই দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
জলের তোড়ে ভেসে গেছে রাস্তা
শুধু মানুষ নয়, গবাদি পশুর জীবনহানিও কম নয়। প্রাথমিক হিসেবে ৩০০-র বেশি পশু মারা গেছে। রাজ্যজুড়ে ভেঙে পড়েছে অন্তত ১৪টি সেতু, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শত শত বাড়ি। ৫০০-র বেশি রাস্তা এখনো বন্ধ। একদিকে ধস, অন্যদিকে জলের তোড়ে ভেসে গেছে রাস্তা, ফলে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন বহু এলাকায়। বিদ্যুৎ সংযোগ এবং পানীয় জলের ব্যবস্থাও বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।

আরও পড়ুন: Weather Forecast: আকাশে মেঘ, বাতাসে আর্দ্রতা, বর্ষার ঘনঘটা রাজ্য জুড়ে!
এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে উদ্ধারকাজ চালিয়ে যেতে হিমাচল সরকারের সঙ্গে সমন্বয়ে কাজ করছে এনডিআরএফ, এসডিআরএফ ও সেনাবাহিনী। হেলিকপ্টারের সাহায্যে দুর্গম এলাকায় পৌঁছানো হচ্ছে খাবার, ওষুধ ও প্রয়োজনীয় সামগ্রী। স্কুল-কলেজ বন্ধ রাখা হয়েছে। পর্যটকদের ওইসব এলাকায় না যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে পাহাড়ি অঞ্চলে এই ধরনের দুর্যোগের আশঙ্কা আরও বাড়ছে। আকস্মিক প্রবল বৃষ্টি ও ধসের ঘটনা এখন আগের তুলনায় অনেক বেশি। ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্যোগ মোকাবিলায় আগাম সতর্কতা এবং পরিকাঠামোগত উন্নয়নের দিকে আরও গুরুত্ব দেওয়ার সময় এসেছে।