ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: হিমাচল প্রদেশে মেঘভাঙা বৃষ্টির জেরে ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে(Himachal Pradesh Cloudburst)। পালমপুর, কাংড়া, কুলু, শিমলা, চম্বা-সহ একাধিক জেলায় প্রবল বৃষ্টিপাতের পাশাপাশি ধস ও হড়পা বান নামার ঘটনায় জনজীবন কার্যত বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। ইতিমধ্যেই দুই জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে, নিখোঁজ প্রায় ১৫-২০ জন। বুধবার রাত থেকেই রাজ্য জুড়ে জারি করা হয়েছে চরম সতর্কতা।
পর্যটকের ভোগান্তি চরমে (Himachal Pradesh Cloudburst)
প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন পর্যটকেরা। কুলুর সৈঞ্জ উপত্যকার শানশার, শানগড়, সুচাইহান অঞ্চলে প্রায় ২০০০ পর্যটক আটকে রয়েছেন বলে প্রশাসনিক সূত্রে জানা গেছে। লাহুল এবং মানালিতেও বহু পর্যটক আটকে পড়েছেন। অনেক জায়গায় সড়ক অবরুদ্ধ হয়ে পড়ায় উদ্ধার কাজ ব্যাহত হচ্ছে।
ধস ও বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত সড়কপথ (Himachal Pradesh Cloudburst)
রাজ্য প্রশাসনের রিপোর্ট অনুযায়ী, ধস এবং বৃষ্টির জেরে ১৭১টি রাস্তা এবং ৩০৫ নম্বর জাতীয় সড়ক বন্ধ হয়ে গিয়েছে(Himachal Pradesh Cloudburst)। মানালির হরনাগড়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ সেতু ভেঙে গিয়েছে। ধস নেমেছে বাঞ্জার-বাথাহার রাস্তায়, ফলে যোগাযোগ কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে ওই অঞ্চলে।
কোথায় কত বৃষ্টি? (Himachal Pradesh Cloudburst)
আবহাওয়া দফতরের তথ্য অনুযায়ী, বুধবার সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে পালমপুরে (১৪৫ মিমি)। এর পরেই রয়েছে নাহান (৯৯ মিমি), পাওন্টা সাহিব (৫৮ মিমি), ধর্মশালা (৫৪ মিমি), কাংড়া (৪৪ মিমি), নারকান্ডা (৪০ মিমি), কসৌলি (২২ মিমি), মন্ডী (১৬ মিমি) এবং শিমলা (১৪ মিমি)।

আরও পড়ুন: Donald Trump : ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণে ফিরলে ফের হামলা! ইরানকে কড়া হুঁশিয়ারি ট্রাম্পের
কোন এলাকায় সবচেয়ে ক্ষতি? (Himachal Pradesh Cloudburst)
হড়পা বানে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সৈঞ্জের জীবানালা, গাডসার শিলাগড়, মানালির স্নো গ্যালারি, হরনাগড় এবং ধর্মশালার খনিয়ারা। কুলু জেলার হরনাগড়, বাঞ্জার এবং খাটনিয়ারে প্রবল জলস্রোতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে একাধিক ঘরবাড়ি ও সেতু।
উদ্ধারকাজে নামানো হয়েছে এনডিআরএফ (Himachal Pradesh Cloudburst)
উদ্ধারকাজে ইতিমধ্যে মোতায়েন করা হয়েছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী (NDRF), রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী (SDRF) এবং স্থানীয় প্রশাসন। পর্যটকদের নিরাপদে বার করে আনার কাজ চলছে। শিমলা থেকে হেলিকপ্টার পাঠানোর প্রস্তুতিও নেওয়া হচ্ছে।

বৃষ্টির পূর্বাভাস (Himachal Pradesh Cloudburst)
২৬ ও ২৭ জুন ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনার কথা জানিয়েছে মৌসম ভবন। পাশাপাশি চম্বা, কাংড়া, মন্ডী, শিমলা এবং সিরমৌর জেলায় হড়পা বান এবং নতুন করে ধস নামার সম্ভাবনা রয়েছে। ২ জুলাই পর্যন্ত বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি চলবে বলে জানানো হয়েছে।
প্রশাসনের সতর্কবার্তা (Himachal Pradesh Cloudburst)
রাজ্য প্রশাসন সাধারণ মানুষ ও পর্যটকদের অপ্রয়োজনে পাহাড়ি এলাকায় না যাওয়ার জন্য অনুরোধ করেছে। প্রতিটি জেলায় কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে সজাগ থাকার বার্তা পাঠানো হয়েছে(Himachal Pradesh Cloudburst)।
প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুখে হিমাচল এখন এক কঠিন সময় পার করছে। প্রশাসন ও উদ্ধার বাহিনীর যৌথ প্রচেষ্টায় পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা চলছে। তবে আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী কয়েক দিন দুর্যোগের তীব্রতা আরও বাড়তে পারে, যার ফলে বিপদের আশঙ্কাও থেকে যাচ্ছে।