ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: সন্তানের জন্য ছুটির (চাইল্ডকেয়ার লিভ) আবেদন করেছিলেন ঝাড়খণ্ডের এক মহিলা বিচারক। কিন্তু আদালতে তা মঞ্জুর হয় আংশিকভাবে(Childcare Leave)। আর এই কারণেই তাঁর বার্ষিক রিপোর্টে নেতিবাচক মন্তব্যও যোগ করা হয়।যা একপ্রকার পরোক্ষ শাস্তির ইঙ্গিত বলেই ধরা হচ্ছে। ঝাড়খণ্ড হাইকোর্টের এই ঘটনায় প্রবল বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি এখন সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন রয়েছে।
ঘটনার সূত্রপাত (Childcare Leave)
জানা গেছে, ঝাড়খণ্ডের এক অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা মহিলা বিচারক সিঙ্গল মাদার হিসেবে সন্তান প্রতিপালন করছেন(Childcare Leave)। তিনি আদালতে তাঁর কর্মজীবনে বরাদ্দ ৭৩০ দিনের মধ্যে ৬ মাসের ছুটির আবেদন করেছিলেন। কিন্তু ঝাড়খণ্ড হাইকোর্ট তাঁর আবেদন আংশিকভাবে মঞ্জুর করে ৯২ দিনের ছুটি অনুমোদন করে।ওই বিচারকের যুক্তি, তিনি তাঁর সন্তানের পরীক্ষার সময় হিসেব করে নির্দিষ্ট সময়ে ছুটি চেয়েছিলেন, কিন্তু তার বদলে তাঁকে একটানা কাজ করতে বাধ্য করা হয়েছে। এরপরে তিনি সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেন।শীর্ষ আদালতে বিচারপতি প্রশান্ত কুমার মিশ্র এবং বিচারপতি মনমোহনের বেঞ্চ শুনানি হয় মামলাটির। কিন্তু বিচারপতিরা জানান, এই বিষয়টি যদি শীর্ষ আদালত থেকে নিষ্পত্তি হয়, তাহলে সেটা ভবিষ্যতে নজির হয়ে দাঁড়াতে পারে। দেশের জেলাস্তরের বিচারব্যবস্থাতেও প্রভাব ফেলতে পারে। মনে হতে পারে, এই বিষয়ের নিষ্পত্তি নিম্ন স্তরে সম্ভব নয়। তাই আগে ঝাড়খণ্ড হাইকোর্টকেই বিষয়টি পুনর্বিবেচনার নির্দেশ দেওয়া হয়।

শাস্তির ইঙ্গিত (Childcare Leave)
সুপ্রিম কোর্টে ওই মহিলা বিচারকের আইনজীবী জানান, ঝাড়খণ্ড হাইকোর্টে এই আবেদন দাখিলের পরে তাঁর মক্কেলের বার্ষিক রিপোর্টে ‘পারফরম্যান্স কাউন্সেলিং’ বা ‘কাজের ক্ষমতা বাড়ানো’র পরামর্শ দেওয়ার সুপারিশ লেখা হয়(Childcare Leave)। অর্থাৎ, তাঁকে আরও দক্ষভাবে কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যা একপ্রকার পরোক্ষ শাস্তির ইঙ্গিত বলেই ধরা হচ্ছে।এই বিষয়ে বিচারকের পক্ষে মামলায় বলা হয়েছে, এই মহিলা বিচারকের আবেদন কোনও যুক্তি ছাড়াই ‘যান্ত্রিকভাবে’ খারিজ করে দেওয়া হয়েছে। অথচ একই ধরনের আবেদন অপর এক বিচারকের ক্ষেত্রে হাইকোর্ট মঞ্জুর করেছে। ফলে এখানে সংবিধানের ১৪ নম্বর অনুচ্ছেদের (সমতা অধিকারের) লঙ্ঘন ঘটেছে।

আরও পড়ুন-Women’s Reservation Act: ২০২৯-এ কার্যকর হতে পারে মহিলা সংরক্ষণ আইন
ঝাড়খণ্ড হাইকোর্টকে নোটিস (Childcare Leave)
এই মামলায় ঝাড়খণ্ড হাইকোর্টের তরফে সুপ্রিম কোর্টে জানানো হয়েছে, বিচারকের আবেদন তারা পুনর্বিবেচনা করেছে এবং ৯২ দিনের ছুটি দিয়েছে(Childcare Leave)। কিন্তু অতিরিক্ত ছুটি দিলে তা নজির হয়ে যাবে এবং এতে জেলাস্তরের বিচারব্যবস্থায় প্রভাব পড়বে।বর্তমানে সুপ্রিম কোর্টের তরফে ঝাড়খণ্ড হাইকোর্টকে এ বিষয়ে নতুন করে নোটিস দেওয়া হয়েছে। ৪ সপ্তাহ পর এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে।
মহিলা বিচারকের বক্তব্য (Childcare Leave)
অন্যদিকে ওই মহিলা বিচারক জানিয়েছেন, তিনি সমাজের নিচু স্তর থেকে উঠে এসেছেন এবং সন্তানের একক অভিভাবক(Childcare Leave)। তাঁর কর্মজীবনের মাত্র আড়াই বছরে তিনি ৪০০০টিরও বেশি মামলা নিষ্পত্তি করেছেন। এই পরিষেবাকে ‘চমকপ্রদ’ বলেই মনে করেন তিনি। তারপরেও তাঁর প্রতি এমন বৈষম্যমূলক আচরণ অবিচার বলেই তাঁর দাবি।ওই বিচারকের আবেদনে বলা হয়েছে, তিন বছর হজারিবাগের আদালতে কাজ করার পরে তিনি ছেলের পড়াশোনার কথা ভেবে রাঁচি বা বোকারোতে বদলির আবেদন করেন। কারণ ওই শহরগুলোতে বিজ্ঞান বিভাগে উচ্চমাধ্যমিক পড়ার ভাল সুযোগ রয়েছে। তাঁর ছেলে মার্চ মাসে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির জন্য প্রস্তুতিও নিচ্ছিল। কিন্তু সেই আবেদন মঞ্জুর না করে তাঁকে বদলি করে দেওযা হয় দুমকা আদালতে। হাজারিবাগ থেকে আরও ২৩০ কিলোমিটার দূরে।
