ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ক্ষমতাসীন জোটের অংশ এলজেপি, হোসাবলের (Hosabale remark on Constitution Preamble) মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানানো একমাত্র এনডিএ শরিক ছিল। “যদি এই বিষয়টি জোটের সামনে আনা হয়, আমরা এর বিরোধিতা করব। আমরা সমাজতন্ত্র এবং ধর্মনিরপেক্ষতার রক্ষক,” এলজেপির জাতীয় সহ-সভাপতি এ কে বাজপেয়ী বলেছেন।
‘ধর্মনিরপেক্ষতা’ নয়, ‘সর্বধর্ম সমভাব’ই ভারতের মূল ভাবনা: শিবরাজ সিং চৌহান (Hosabale remark on Constitution Preamble)
সংবিধানের প্রস্তাবনা থেকে ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ (secular) ও ‘সমাজতান্ত্রিক’ (socialist) শব্দ দুটির প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আলোচনার পক্ষে মত জানিয়েছেন আরএসএস-এর সরকার্যবাহ দত্তাত্রেয় হোসবলে (Hosabale remark on Constitution Preamble)। তার একদিন পর এই বক্তব্যে সমর্থন জানালেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান ও জিতেন্দ্র সিং। যদিও কংগ্রেস ও অন্যান্য বিরোধী দলগুলোর পক্ষ থেকে হোসবলে-র মন্তব্যের কড়া সমালোচনা করা হয়েছে। বিজেপির তরফে হোসবলের প্রস্তাব নিয়ে সরাসরি কোনও মন্তব্য না এলেও, জাতীয় মুখপাত্র সুধাংশু ত্রিবেদী কংগ্রেসকে আক্রমণ করে বলেন, “গত সাত দশকে সংবিধান এবং তার মূল ভাবনার বিকৃতির পিছনে কংগ্রেসই দায়ী। জরুরি অবস্থার জন্য কংগ্রেসের ক্ষমা চাওয়া উচিত।”
‘ধর্মনিরপেক্ষতা’ শব্দ নিয়ে প্রশ্ন তুললেন শিবরাজ (Hosabale remark on Constitution Preamble)
শুক্রবার বারাণসীতে এক সাংবাদিক সম্মেলনে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান বলেন (Hosabale remark on Constitution Preamble), “সর্বধর্ম সমভাব ভারতীয় সংস্কৃতির মূল কথা। ধর্মনিরপেক্ষতা আমাদের সংস্কৃতির মূল ভাবনা নয়। তাই জরুরি অবস্থার সময় সংবিধানের প্রস্তাবনায় যে ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ শব্দটি যোগ করা হয়েছিল, তা নিয়ে অবশ্যই চিন্তাভাবনা হওয়া উচিত।” সমাজতন্ত্র সম্পর্কেও চৌহান বলেন, “সকলকে সমানভাবে দেখা, এই চিন্তা ভারতীয় দর্শনের অংশ। ‘বসুধৈব কুটুম্বকম’-এর মতো ভাবনা আমাদের মূলমন্ত্র। তাই আলাদাভাবে সমাজতন্ত্রের কথা বলার দরকার নেই। দেশের অবশ্যই ভাবা উচিত এই শব্দটি রাখার প্রয়োজন আছে কি না।”
জিতেন্দ্র সিং বললেন, ‘হোসবলে যা বলেছেন, তাতে দ্বিতীয়বার ভাবনার কিছু নেই’
জম্মুতে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী জিতেন্দ্র সিং বলেন, “হোসবলে জি যা বলেছেন, তাতে দ্বিতীয়বার ভাবার কিছু নেই। সংবিধানের ৪২তম সংশোধনের মাধ্যমে ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ ও ‘সমাজতান্ত্রিক’ শব্দ দুটি প্রস্তাবনায় যোগ করা হয়। এই শব্দগুলি বাবাসাহেব আম্বেদকরের দেওয়া নয়।” তিনি বলেন, “আম্বেদকর এমন একটি সংবিধান তৈরি করেছিলেন যা বিশ্বের অন্যতম সেরা। যদি এই শব্দ দুটি যদি তাঁর চিন্তাভাবনার বাইরে হয়, তাহলে কারা এবং কী উদ্দেশ্যে সেগুলি যুক্ত করেছিল?”
বিজেপির অবস্থান স্পষ্ট নয়, এনডিএ-র শরিক এলজেপি বিরোধিতায়
যদিও বিজেপি আনুষ্ঠানিকভাবে বিষয়টিতে নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করেনি, এনডিএ জোটের শরিক লোক জনশক্তি পার্টি (এলজেপি) এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছে। দলের জাতীয় সহ-সভাপতি একে বাজপেয়ী বলেন, “জোটের সামনে বিষয়টি এলে আমরা বিরোধিতা করব। আমরা সমাজতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার রক্ষক।”
আরও পড়ুন: SCO: এসসিও-র যৌথ বিবৃতিতে কেন সই করেননি রাজনাথ? কারণ জানালেন জয়শঙ্কর
‘বিজেপি বনাম অ-বিজেপি নয়, সংবিধানের মূল্যবোধ রক্ষার প্রশ্ন’: জিতেন্দ্র সিং
হোসবলের প্রস্তাব বিজেপি সমর্থন করে কিনা, এমন প্রশ্নের উত্তরে জিতেন্দ্র সিং বলেন, “কে সমর্থন করবে না? যাঁরা সংবিধান ও গণতন্ত্রের মুল্যবোধে বিশ্বাস করেন, তাঁরা সকলেই জানেন এই শব্দ দুটি মূল সংবিধানে ছিল না, যা আম্বেদকর ও কমিটি লিখেছিলেন। এটা বিজেপি বনাম অ-বিজেপি প্রশ্ন নয়, এটা গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক মূল্যবোধ রক্ষার প্রশ্ন।”