ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ভারতের প্রাক্তন প্রধান কোচ গ্যারি কার্স্টেন সম্প্রতি জানিয়েছেন যে ২০১১ বিশ্বকাপের জন্য যুবরাজ সিংয়ের নির্বাচন বিতর্কের বিষয় ছিল (How was Yuvraj included in 2011 squad)। কেউ কেউ দলে তার স্থান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। তবে, কার্স্টেন এবং তৎকালীন অধিনায়ক এমএস ধোনি উভয়েই দৃঢ়ভাবে বাঁ-হাতি অলরাউন্ডারকে সমর্থন করেছিলেন, এবং সেই বিশ্বাস সবচেয়ে বড় সাফল্য এনেছিল।
দলে জায়গা নিশ্চিত ছিল না (How was Yuvraj included in 2011 squad)
ভারতের অন্যতম সেরা হোয়াইট বল ক্রিকেটার হয়েও ২০১১ ওয়ানডে বিশ্বকাপে যুবরাজ সিংহের দলে সুযোগ পাওয়া নিশ্চিত ছিল না (How was Yuvraj included in 2011 squad)। সম্প্রতি ভারতের প্রাক্তন প্রধান কোচ গ্যারি কার্স্টেন এক সাক্ষাৎকারে স্বীকার করেছেন, যুবরাজকে দলে রাখা হবে কি না, তা নিয়ে ভিতরে ভিতরে তীব্র আলোচনা হয়েছিল। তবে শেষ পর্যন্ত কার্স্টেন ও অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি দু’জনেই যুবরাজের পক্ষে দাঁড়ান। এবং সেই সিদ্ধান্তই ভারতীয় ক্রিকেট ইতিহাসে অন্যতম সেরা সিদ্ধান্ত হিসেবে বিবেচিত হয়।
বিশ্বকাপ জয় এবং যুবরাজের মুখ্য ভূমিকা (How was Yuvraj included in 2011 squad)
২০১১ সালে ভারত ওয়ানডে বিশ্বকাপ জিতে ২৮ বছরের শিরোপা খরা কাটায় (How was Yuvraj included in 2011 squad)। মুম্বইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ফাইনালে শ্রীলঙ্কাকে ছয় উইকেটে হারায় ভারত। গোটা দেশের কাছে এটা ছিল গর্বের মুহূর্ত। সেই জয়গাথায় যুবরাজ সিংহ ছিলেন অন্যতম প্রধান নায়ক। বিশ্বকাপজুড়ে ব্যাট ও বলে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করে টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হন যুবরাজ। তিনি ৩৬২ রান করেন এবং ১৫টি উইকেট নেন। তবে এই সংখ্যার পিছনে ছিল এক অবিশ্বাস্য পরিশ্রম ও আত্মপরিবর্তনের কাহিনি।
কোচের চোখে যুবরাজ (How was Yuvraj included in 2011 squad)
এক সাক্ষাৎকারে গ্যারি কার্স্টেন বলেন, “আমি সবসময় যুবরাজকে খুব পছন্দ করতাম। ও মাঝে মাঝে আমাকে ভীষণ হতাশ করত, কিন্তু ওকে ব্যাট করতে দেখা ছিল দারুণ এক অভিজ্ঞতা। আমি চাইতাম ও সবসময় রান করুক।” কার্স্টেন আরও বলেন, মানসিক প্রশিক্ষণ কোচ প্যাডি আপটনের ভূমিকাও ছিল গুরুত্বপূর্ণ। “ওকে তৈরি করার জন্য প্যাডি অনেক কাজ করেছে। তবে যুবরাজ নিজেও গুরুত্বপূর্ণ কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, যাতে ও বিশ্বকাপের জন্য মানসিক ও শারীরিকভাবে প্রস্তুত হতে পারে।”
আরও পড়ুন: PCB In Mess: আবার বিতর্কে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড, না চেয়েও চাকরি থাকল আজহার মাহমুদের
বিশ্বকাপে ব্যাট ও বলে দাপট
যুবরাজ ৮ ইনিংসে ব্যাট করে ৯০.৫০ গড় সহ ৩৬২ রান করেন। যার মধ্যে ছিল একটি সেঞ্চুরি ও চারটি হাফসেঞ্চুরি। চেন্নাইয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে ১২৩ বলে ১১৩ রানের ইনিংস ছিল অন্যতম সেরা। এছাড়াও ইংল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস ও অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধেও গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলেন। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে কোয়ার্টার ফাইনালে আহমেদাবাদে তার অপরাজিত ৫৭ রানের ইনিংসে ভারত জয় নিশ্চিত করে। বল হাতেও তিনি সমান কার্যকর ছিলেন। ১৫টি উইকেট নেন ২৫.১৩ গড়ে। আয়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে ৩১ রানে ৫ উইকেট ছিল তাঁর সেরা বোলিং। তিনটি নকআউট ম্যাচেই তিনি দুটি করে উইকেট নেন।
আরও পড়ুন: Asia Cup in limbo: এশিয়া কাপ ২০২৫ নিয়ে অনিশ্চয়তা, ঢাকায় বৈঠক হলে যোগ দেবে না ভারতসহ কয়েকটি দেশ
যুবরাজ: একজন ম্যাচ জয়ী এবং যোদ্ধা
ভারতের হয়ে যুবরাজ ৩০৪টি ওডিআই খেলেছেন। রান করেছেন ৮৭০১, যার মধ্যে ছিল ১৪টি শতরান ও ৫২টি অর্ধশতরান। কিন্তু তাঁর সেরা কৃতিত্ব নিঃসন্দেহে ২০১১ সালের বিশ্বকাপে। একজন খেলোয়াড়ের দলে থাকা নিয়ে সন্দেহ তৈরি হওয়া থেকে তিনি হয়ে উঠেছিলেন গোটা টুর্নামেন্টের সবচেয়ে উজ্জ্বল তারকা। তাঁর এই যাত্রা শুধু খেলোয়াড় হিসেবে নয়, একজন মানসিক যোদ্ধা হিসেবেও অনুপ্রেরণাদায়ক। আজও ভারতীয় ক্রিকেটে যুবরাজ সিংহকে মনে রাখা হয় শুধু ম্যাচ উইনার হিসেবে নয়, একজন যোদ্ধা হিসেবে, যিনি দেশের প্রয়োজনে সেরা খেলাটা তুলে দিতে জানতেন।