ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: শনিবার রাতে ভারতের প্রতিরক্ষা গবেষণা সংস্থা DRDO একটি হাইপারসনিক ব্যালেস্টিক মিসাইলের (Hypersonic Ballistic Missile) সফল পরীক্ষা চালিয়েছে। এই ব্যালেস্টিক মিসাইল পরীক্ষায় কুটনৈতিক ভাবে চাপে থাকবে পাকিস্থান ও চিন। ভারতের এই সফলতা আন্তর্জাতিক কুটনীতিতে একটি বড় মাইলফলক স্পর্শ বলে মনে করছেন কুটনৈতিক মহল।
কেন চাপে পাক-চিন? (Hypersonic Ballistic Missile)
কিন্তু ভারতের এই হাইপারসনিক মিসাইল (Hypersonic Ballistic Missile) পরীক্ষার পর ঠিক কেন ঘুম উড়ছে চিন-পাকিস্থানের? কেননা নতুন এই হাইপারসনিক ব্যালেস্টিক মিসাইল শব্দের চেয়ে পাঁচ গুণ বেশি গতিবেগে আঘাত হানতে পারবে নিদির্ষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে। এই নতুন মিসাইল প্রায় ১৫০০ কিলোমিটার দূরের লক্ষ্য বস্তুতে আঘাত হানতে পারে।
কী বললেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী (Hypersonic Ballistic Missile)
ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেছেন, ভারতের এই হাইপারসনিক ব্যালেস্টিক মিসাইলের (Hypersonic Ballistic Missile) সফল পরীক্ষা ঐতিহাসিক ঘটনা। কিন্তু,এই মিসাইল ঠিক কেন এত বিশেষ? কী এই মিসাইলের ক্ষমতা? যে কারনে ঘুম উড়েছে ভারতের প্রতিপক্ষ্য রাষ্ট্রগুলির?
আরও পড়ুন: Income Tax Warning: জানান বিদেশি সম্পদের পরিমাণ, নাহলে জরিমানা ১০ লাখ!
ক্ষমতা
আসলে এই হাইপারসনিক মিসাইল (Hypersonic Ballistic Missile) সিস্টেম সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র। এই ক্ষেপণাস্ত্রটি ১৫০০ কিলোমিটার দূরত্ব পাড়ি দিয়ে কোনও লক্ষ্য বস্তুতে আঘাত করতে পারে। আর এই ১৫০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে এই মিসাইলের সময় লাগবে মাত্র কয়েক সেকেন্ড। কেননা, এই হাইপারসনিক মিসাইলটি শব্দের গতিবেগের থেকেও পাঁচ গুন বেশি গতিবেগে যাত্রা করে পূর্ব নির্ধারিত কোনো লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করতে পারে। এই মিসাইল প্রায় ৬১২৫ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা থেকে ২৪১৪০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা গতিবেগে যাত্রা করতে পারে। এই জন্য এই মিসাইল ১৫০০ কিলোমিটার দূরত্ব অতিক্রম করবে মাত্র কয়েক সেকেন্ডে।
মিসাইলের পার্থক্য
হাইপারসনিক ব্যালেস্টিক মিসাইল ক্ষেপণাস্ত্র সাধারণত দু’ ধরনের হয়ে থাকে। একটি হল হাইপারসনিক গ্লাইড ভেহিকলস’ আর অন্যটি ‘হাইপারসনিক ক্রুজ মিসাইল’। ‘হাইপারসনিক গ্লাইড ভেহিকলস’ ক্ষেপণাস্ত্রের সঙ্গে যুক্ত থাকে রকেট বুস্টার। এই ধরনের মিসাইল নিদিষ্ট উচ্চতায় পৌঁছানোর পরে রকেট বুস্টার থেকে ক্ষেপণাস্ত্র আলাদা হয়ে গিয়ে নিদিষ্ট লক্ষ্যবস্তুর দিকে আঘাত হানার উদ্দেশ্যে এগিয়ে যায়। অন্যদিকে ‘হাইপারসনিক ক্রুজ মিসাইল’ এর মধ্যে থাকে স্ক্র্যামজেট ইঞ্জিন। এই ইঞ্জিনের সাহায্যে ‘হাইপারসনিক ক্রুজ মিসাইল’ কম উচ্চতায় উড়ে যেতে পারে। কম উচ্চতায় উড়ে গিয়ে নিদিষ্ট লক্ষ্য বস্তুতে আঘাত হানার জন্য এই ‘হাইপারসনিক ক্রুজ মিসাইল’ এই স্ক্র্যামজেট ইঞ্জিন গুলি ব্যবহার করেন।
আরও পড়ুন: Manipur: অশান্ত মণিপুরের পরিস্থিতি সামাল দিতে ব্যর্থ বীরেন সিং, টলমলে মুখ্যমন্ত্রীর গদি
বিশেষজ্ঞদের মত
প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞেদের মতে, সাধারণ ব্যালিস্টিক মিসাইল গতিপথ পরিবর্তন করে লক্ষ্য বস্তুতে আঘাত হানতে পারে না। কিন্তু ‘হাইপারসনিক’ মিসাইলের মধ্যে সেই ক্ষমতা আছে। এজন্য এই ‘হাইপারসনিক’ মিসাইলগুলোর গতিপথ কী হতে পারে তা নির্ধারণ করা শত্রুর পক্ষে কঠিন হয়ে পড়ে। এমনকি গতিপথ পরিবর্তনের ক্ষমতা থাকায় তারা লক্ষ্যবস্তুতে আরও নিখুঁত ভাবে আঘাত করতে পারে। এই ধরনের হাইপারসনিক মিসাইলের সাধারণ এবং পরমাণু উভয় ধরনের ওয়ারহেড বা অস্ত্র নিয়ে আঘাত করার ক্ষমতা রয়েছে। এই জন্য হাইপারসনিক মিসাইলের সফল পরীক্ষা ভারতকে কূটনৈতিক লাভ এনে দেবে বলেই মনে করছে আন্তর্জাতিক মহল।