ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: রাতে ঘুমাতে গেলে যদি বারবার (Hypothyroidism) মাথাব্যথা শুরু হয়, মাথার একপাশ বা পিছনের অংশে তীব্র যন্ত্রণা হয়, মাথা ঘোরা বা বমি ভাব থাকে, তাহলে সেটি শুধু মাইগ্রেন নয়—হয়তো হাইপোথাইরয়েডের লক্ষণ। বিশেষ করে মহিলাদের মধ্যে এই সমস্যা বেশি দেখা যায়। ন্যাশনাল ফ্যামিলি হেলথ সার্ভের একটি রিপোর্ট বলছে, প্রতি ১০ জন মহিলার মধ্যে একজন হাইপোথাইরয়েডের শিকার। ১৫ থেকে ৪৯ বছর বয়সী মহিলাদের মধ্যে প্রায় ২.৭ শতাংশের এই রোগ থাকলেও, পুরুষদের ক্ষেত্রে এই হার অনেক কম, মাত্র ০.৫ শতাংশ।
মাথাব্যথাও হতে পারে (Hypothyroidism)
হাইপোথাইরয়েড মানেই যে শুধু ওজন বাড়া বা কমা (Hypothyroidism) হবে, তা নয়। অনেক সময় শরীরে নানা রকম উপসর্গ দেখা দিতে পারে। যেমন বুক ধড়ফড়ানো, শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে অসুবিধা, গরম বা ঠান্ডা সহ্য করতে না পারা, পেশি ও অস্থিসন্ধিতে ব্যথা, চুল পড়া, মুখ ও পা ফুলে যাওয়া, কোষ্ঠকাঠিন্য, অনিয়মিত বা অতিরিক্ত ঋতুস্রাব ইত্যাদি। এর সাথে মাথাব্যথাও হতে পারে, যা অনেক সময় খুব তীব্র ও দীর্ঘস্থায়ী হয়।
মাইগ্রেনের মতোই হতে পারে (Hypothyroidism)
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হাইপোথাইরয়েডের কারণে মাথাব্যথার ধরণ মাইগ্রেনের (Hypothyroidism) মতোই হতে পারে। মাথার ভিতরে চাপ অনুভূত হয়, যা একপাশ থেকে শুরু করে মাথার পিছনের অংশ পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে। তীব্র যন্ত্রণার সাথে মাথা ঘোরা, বমি ভাবও থাকতে পারে। এই রোগে ক্লান্তি বেড়ে যায় এবং শরীর দুর্বল অনুভব হয়। সামান্য পরিশ্রম করলেই বা চোখে অতিরিক্ত আলো পড়লেই মাথাব্যথা শুরু হতে পারে।
পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে হবে
যদি আপনি এই ধরনের সমস্যায় ভুগছেন, তবে কিছু বিষয় মাথায় রাখা জরুরি। প্রথমত, পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে হবে। কাজ বন্ধ করে চোখ বন্ধ করে কিছুক্ষণ শুয়ে থাকা বা বসে থাকা ভাল। মোবাইল বা অন্য কোনো ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার এ সময় থেকে বিরত থাকাই উত্তম। এছাড়া, হাইপোথাইরয়েড থাকলে সুষম ও নিয়মিত খাবার গ্রহণ অত্যন্ত জরুরি। রাত জেগে মোবাইল স্ক্রিনের আলোতে চোখ বেশি সময় থাকলে মাথাব্যথার সমস্যা বাড়তে পারে।
অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি গুণ ব্যথা কমাতে সাহায্য করবে
অনেক সময় খালি পেটে থাকলে রক্তে শর্করার মাত্রা কমে যাওয়ার কারণে (হাইপোগ্লাইসেমিয়া) মাথাব্যথা হতে পারে, যা মাইগ্রেনের মতো ব্যথায় রূপ নিতে পারে। এ ধরনের ব্যথায় ওষুধ খাওয়ার বদলে আদা দিয়ে তৈরি চা খেতে পারেন। আদায় থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি গুণ ব্যথা কমাতে সাহায্য করবে।

সব্জি রাখাও উপকারী
তাছাড়া ডায়েটে বাদাম, ম্যাগনেশিয়াম সমৃদ্ধ ফল এবং সব্জি রাখাও উপকারী। তবে বাঁধাকপি, ফুলকপি, ব্রকোলি এবং ছোলা জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলাই ভালো, কারণ এগুলো থাইরয়েডের সমস্যাকে বাড়িয়ে তুলতে পারে।
মাথাব্যথা শুধু একধরনের রোগ নয়, বরং শরীরের অভ্যন্তরীণ সমস্যা থেকেও হতে পারে। তাই মাথাব্যথা নিয়মিত বা তীব্র হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে সঠিক পরীক্ষা করানো উচিত। বিশেষ করে যদি তা হাইপোথাইরয়েডের কারণে হয়, তবে সময়মতো চিকিৎসা ও জীবনধারা পরিবর্তন অনেক সাহায্য করতে পারে। শরীরের প্রতি নজর দিন, সুস্থ থাকুন।