ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: শত্রুপক্ষের উপর আকাশপথে নিখুঁত নজরদারির জন্য ভারতীয় বায়ুসেনার হাতে আসতে চলেছে অত্যাধুনিক গুপ্তচর বিমান, যার পোশাকি নাম ‘ইন্টেলিজেন্স, সার্ভিল্যান্স, টার্গেট অ্যাকুইজ়িশন অ্যান্ড রিকনাইসেন্স’, সংক্ষেপে আইস্টার (I-STAR Spy Plane)। প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রে খবর, ভারতীয় বায়ুসেনার জন্য তিনটি আইস্টার বিমান কেনার বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়ার পথে হাঁটছে কেন্দ্র।
কী কী ক্ষমতা থাকবে এই গুপ্তচর বিমানের? (I-STAR Spy Plane)
প্রায় ১০,০০০ কোটি টাকার প্রকল্পটি ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ উদ্যোগের আওতায় আনা হবে(I-STAR Spy Plane)। চলতি মাসেই প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ(Rajnath Singh)-এর নেতৃত্বাধীন ‘ডিফেন্স অ্যাকুইজ়িশন কমিটি’ (DAC) এই প্রস্তাবে ছাড়পত্র দিতে পারে বলে খবর দিয়েছে সংবাদ সংস্থা এএনআই।আইস্টার বিমানগুলি মূলত শত্রু ঘাঁটি, রাডার ইউনিট, ক্ষেপণাস্ত্র লঞ্চার কিংবা অন্যান্য প্রতিরক্ষা সরঞ্জামের অবস্থান নির্ণয় করতে সক্ষম। এই বিমানগুলি থেকে প্রাপ্ত ‘এয়ার টু গ্রাউন্ড ইন্টেলিজেন্স’ তথ্যের ভিত্তিতে ভারতীয় প্রতিরক্ষা বাহিনী আরও নিখুঁত এবং টার্গেটেড হামলা চালাতে পারবে। এতে সীমান্তে ভারতের কৌশলগত অবস্থান আরও শক্তিশালী হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
কারা তৈরি করছে? (I-STAR Spy Plane)
এই অত্যাধুনিক নজরদারি ব্যবস্থার ডিজাইন এবং উন্নয়ন করেছে (I-STAR Spy Plane) ভারতের প্রতিরক্ষা গবেষণা সংস্থা ডিআরডিও-র অধীনে থাকা ‘সেন্টার ফর এয়ারবোর্ন সিস্টেমস’ (CABS)। সূত্র বলছে, এই আইস্টার প্রযুক্তির প্রোটোটাইপ ইতিমধ্যেই সফলভাবে পরীক্ষা করেছে DRDO। সামরিক বিশেষজ্ঞদের মতে, আইস্টার সিস্টেমের অন্তর্ভুক্ত বিমানগুলি কেবল নজরদারি বা গোয়েন্দাগিরি চালাতেই সক্ষম নয়, তারা শত্রুপক্ষের গতিবিধি, মোতায়েন এবং সংযোগ ব্যবস্থার বিস্তারিত মানচিত্র তৈরি করতে পারে। যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে এগুলি একাধারে কমব্যাট এনহান্সার ও ফোর্স মাল্টিপ্লায়ার হিসেবে কাজ করবে।

আরও পড়ুন: Kerala Ship Blast : কেরলের উপকূলে সিঙ্গাপুরের জাহাজে বিস্ফোরণ, উদ্ধারে তৎপর ভারতীয় নৌসেনা!
কৌশলগত অভিযানে ব্যবহার হবে গুপ্তচর বিমান (I-STAR Spy Plane)
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ২০১৬ সালের সার্জিক্যাল স্ট্রাইক বা ২০১৯ সালের বালাকোট এয়ারস্ট্রাইক-এর মতো অভিযানগুলিতে যদি আইস্টার প্রযুক্তি ভারতীয় বাহিনীর হাতে থাকত, তা হলে আঘাত আরও নিখুঁত এবং কার্যকর হত(I-STAR Spy Plane)। ভবিষ্যতে পাকিস্তানের মাটিতে বা চিন সীমান্তে যদি কোনও কৌশলগত অভিযান হয়, সেখানে এই প্রযুক্তি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে। এমনিতেই, বর্তমানে বিশ্বের মাত্র কয়েকটি দেশের কাছেই এই ধরণের প্রযুক্তি রয়েছে— যেমন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া এবং ইজরায়েল। আইস্টার প্রযুক্তির অন্তর্ভুক্তি ভারতের সামরিক পরিকাঠামোকে একটি নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে।সব মিলিয়ে, ভারতীয় প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় এই পদক্ষেপ কেবল এক নতুন প্রযুক্তিগত সংযোজন নয়, বরং শত্রুপক্ষের উপর গোয়েন্দা নজরদারির ক্ষেত্রে এক বিপ্লব আনবে বলেই মনে করছেন সামরিক মহলের কর্তাব্যক্তিরা।