ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: সারা রাজ্যের মানুষ যখন রাজ্য পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফুঁসছেন। ঠিক সেই সময় (IC Mrinal Sinha) সামাজিক কাজে মানবিকতার সঙ্গে এগিয়ে আসতে দেখা গেল এক পুলিশ আধিকারিককে। ঘটনাটি মুর্শিদাবাদ জেলার কান্দির। জানা যাচ্ছে মুর্শিদাবাদের কান্দি থানার আইসি মৃণাল সিনহা এক ভবঘুরে বৃদ্ধা দুটি চোখেরই দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে দিলেন নিজের খরচে। আর এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তাঁর জন্য বর্ষিত হচ্ছে বাহ বাহ রব।
দুটি চোখেরই দৃষ্টিশক্তি প্রায় হারিয়েছিলেন (IC Mrinal Sinha)
এক বৃদ্ধা রাস্তায় ঘুরে ভিক্ষা করেই তিনি দিন কাটাচ্ছিলেন। দুটি চোখেরই দৃষ্টিশক্তি প্রায় হারিয়েছিলেন। সেই বৃদ্ধাকে সম্প্রতি দেখেছিলেন কান্দি থানার আইসি মৃণাল সিনহা (IC Mrinal Sinha)। ওই বৃদ্ধার একটি চোখের অস্ত্রোপচার করালেন নিজের দায়িত্বে। শুধু তাই নয়, নিজের কোয়ার্টারেই তাঁর থাকার ব্যবস্থা করলেন তিনি। ওই বৃদ্ধাকে মা বলেই ডেকেছেন আইসি মৃণাল সিনহা। গত এক সপ্তাহ আগে এক সিভিক ভলান্টিয়ার কান্দি বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ওই বৃদ্ধাকে রাস্তা পার করাচ্ছিলেন। সেসময় আইসি মৃণাল সিনহার বিষয়টি নজরে আসে।
‘ওরা আমাকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়’ (IC Mrinal Sinha)
জানা যাচ্ছে রাস্তায় ঘুরে ঘুরে ভিক্ষা করতেন ওই বৃদ্ধা। নাম জয়া দাসী রাজবংশী। তাঁর বাড়ি খড়গ্রাম থানার মনসবপুর গ্রামে। বৃদ্ধার স্বামী মারা যাওয়ার পর ওই বৃদ্ধার আর বাড়িতে জায়গা দেয়নি ছেলে। তাঁকে বাড়ি থেকে বার করে দেওয়া হয়েছিল। ওই বৃদ্ধা বলেন, “আমি গত দু’বছর বৃন্দাবনে ছিলাম। ওখানেই লোকের সেবা করতাম। টাকা-পয়সা পাঠাতাম গ্রামে নাতি নাতনিদের জন্য। যখন ফিরে আসি তখন ওরা আমাকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়।”

আরও পড়ুন: Kasba Incident: কসবাকাণ্ডে তদন্তের দায়িত্ব থেকে সরানো হল লাথি মারা সেই এসআই রিটনকে
অস্ত্রোপচার করান সম্পূর্ণ নিজের খরচে
বৃদ্ধার বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে তাঁকে সঙ্গে নিয়ে হাসপাতালে যান মৃণাল বাবু (IC Mrinal Sinha)। ডাক্তাররা জানিয়েছিলেন, দুটি চোখেই দৃষ্টি হারিয়েছেন প্রায় ওই বৃদ্ধা। অস্ত্রোপচার করলে আগামী একবছরের মধ্যে দৃষ্টি ফিরে পাওয়া যেতে পারে। পুলিশ আধিকারিক বৃদ্ধাকে হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে গতকাল তাঁর বাম চোখে অস্ত্রোপচার করান সম্পূর্ণ নিজের খরচে। হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর আধিকারিক ওই বৃদ্ধাকে নিজের কোয়ার্টারে নিয়ে গিয়েছেন। ডান চোখে আগামী দু’মাস পর ফের অন্য চোখে অস্ত্রোপচার হবে বলে জানা গিয়েছে।
‘এটাও আমার কর্তব্যের মধ্যে পড়ে’
কান্দি থানার আই সি মৃণাল বাবু বলেন, “আমি মনে করি এটাও আমার কর্তব্যের মধ্যে পড়ে ।” বৃদ্ধাকে বলতে শোনা যায়, “চোখের আলো দিন দিন কমে আসছিল। ফের দেখতে পাব আগের মতো, আমি খুবই খুশি।” এই পুলিশ আধিকারিক মৃণাল বাবুকের কান্দির মধ্যে আরও অনেক সমাজ সেবা করতে দেখা গেছে বারবার তাই তিনি কান্দিবাসীর কাছে মানবিক পুলিশ অফিসার হিসাবেই পরিচিত। বিপদে পড়ে যারাই গেছেন তাঁর কাছে তিনি বিবেচনা করে ফেরাননি কাউকেই। সম্প্রতি এক অনাথ তরুণীর থানাতেই বিয়ের ব্যবস্থা করেছিলেন তিনি। অনাথ মেয়ের বিয়ে নিজে দাড়িয়ে থেকে দিয়েছিলেন। থানাতে খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থাও করা হয়েছিল। ফের আর এক রকম ভাবে মানবিকতার পরিচয় পাওয়া গেল তাঁর থেকে।