ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কড়া অভিবাসন নীতির (Illegal Immigrants) অংশ হিসেবে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলি নিউইয়র্ক ও নিউ জার্সির গুরুদ্বারগুলির উপর নজরদারি চালাচ্ছে। অভিযোগ উঠেছে, এই গুরুদ্বারগুলি শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদী এবং অবৈধ অভিবাসীদের জন্য কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। ট্রাম্প প্রশাসনের এই পদক্ষেপ বাইডেন-যুগের একটি নীতি বাতিল করার পরে এসেছে, যা সংবেদনশীল এলাকায়, যেমন উপাসনালয়গুলির কাছে আইন প্রয়োগ নিষিদ্ধ করেছিল।
ট্রাম্প প্রশাসনের অভিবাসন দমন অভিযান (Illegal Immigrants)
ট্রাম্প ৪৭তম মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই মার্কিন হোমল্যান্ড সিকিউরিটির ভারপ্রাপ্ত সচিব বেনজামিন হাফম্যান একটি নির্দেশিকা জারি করেন (Illegal Immigrants)। এতে বাইডেন প্রশাসনের নীতি বাতিল করা হয়, যা অভিবাসন এবং কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (ICE) এবং কাস্টমস এবং বর্ডার প্রোটেকশন (CBP)-এর কার্যক্রম সংবেদনশীল এলাকায় সীমাবদ্ধ করেছিল।
হোমল্যান্ড সিকিউরিটির (Illegal Immigrants) এক মুখপাত্র জানান, “এই পদক্ষেপ সাহসী আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তাদের ক্ষমতা দিচ্ছে যাতে তারা আমাদের অভিবাসন আইন প্রয়োগ করতে পারে এবং অপরাধীদের, বিশেষত খুন এবং ধর্ষণের মতো অপরাধে যুক্ত অবৈধ অভিবাসীদের আটক করতে পারে।”
তিনি আরও বলেন, “অপরাধীরা আর আমেরিকার স্কুল এবং চার্চে লুকিয়ে থাকতে পারবে না। ট্রাম্প প্রশাসন আমাদের সাহসী আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তাদের উপর আস্থা রাখছে এবং তাদের সাধারণ জ্ঞান ব্যবহার করতে দিচ্ছে।”
শিখ সংগঠনের প্রতিবাদ (Illegal Immigrants)
এই সিদ্ধান্ত শিখ সম্প্রদায়ের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছে (Illegal Immigrants)। তাদের মতে, এটি গুরুদ্বারের পবিত্রতা এবং শিখ ধর্মের প্রতি অসম্মানের ইঙ্গিত দেয়।
শিখ আমেরিকান লিগ্যাল ডিফেন্স এবং এডুকেশন ফান্ড (SALDEF) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, “সংবেদনশীল এলাকা রক্ষার নীতি বাতিল করার নির্দেশের পরে নিউইয়র্ক এবং নিউ জার্সির গুরুদ্বারগুলিতে ডিএইচএস এজেন্টদের পরিদর্শনের খবর আমরা পেয়েছি। এটি অত্যন্ত উদ্বেগজনক।”
SALDEF-এর নির্বাহী পরিচালক কিরণ কউর গিল বলেন, “গুরুদুয়ারা শুধুমাত্র উপাসনার স্থান নয়, এটি শিখ সম্প্রদায়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র। এটি খাবার, সহায়তা এবং আধ্যাত্মিক শান্তি প্রদান করে। গুরুদুয়ারাগুলিতে এই ধরনের অভিযান আমাদের বিশ্বাসের পবিত্রতাকে হুমকির মুখে ফেলছে এবং অভিবাসী সম্প্রদায়ের মধ্যে ভয় ছড়াচ্ছে।”
শিখ কোলিশনের প্রতিক্রিয়া
শিখ কোলিশনও এই পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। তারা জানিয়েছে, “ট্রাম্প প্রশাসনের এই সিদ্ধান্ত গুরুদ্বারগুলিকে নজরদারি, তদন্ত এবং অভিযানের ঝুঁকির মধ্যে ফেলছে। গুরুদ্বারে সশস্ত্র আইন প্রয়োগকারীদের উপস্থিতি শিখ ধর্মের ঐতিহ্যের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ।”
তারা আরও বলেন, “এই নীতির কারণে গুরুদ্বারে উপস্থিতি কমতে পারে। এর ফলে শিখ ধর্মীয় চর্চা ব্যাহত হবে এবং গুরুদ্বারের কার্যক্রম ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এটি আমাদের সম্মিলিত স্মৃতিতে থাকা সেই অন্ধকার সময়ের কথা মনে করিয়ে দেয়, যখন শিখ ধর্মীয় স্বাধীনতার উপর হস্তক্ষেপ করা হয়েছিল।”
সম্ভাব্য পরিণতি
ট্রাম্প প্রশাসনের এই কঠোর পদক্ষেপ গুরুদ্বারের পবিত্রতা ও শিখ সম্প্রদায়ের মধ্যে আস্থা নষ্ট করছে। যদি গুরুদ্বারগুলিতে উপস্থিতি কমে যায়, তাহলে শিখ ধর্মীয় কার্যক্রম পরিচালনা করা কঠিন হয়ে পড়বে।
এই সিদ্ধান্ত শুধু শিখ সম্প্রদায় নয়, অন্যান্য অভিবাসী সম্প্রদায়ের মধ্যেও আতঙ্ক তৈরি করেছে। ট্রাম্প প্রশাসনের এই পদক্ষেপ ভবিষ্যতে ধর্মীয় স্বাধীনতা এবং অভিবাসন নীতি নিয়ে বড় প্রশ্ন তুলতে পারে।