ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ভারত-পাকিস্তানের সীমান্তে সাম্প্রতিক উত্তেজনার আবহে ফের অরুণাচল প্রদেশ নিয়ে সক্রিয় হয়ে উঠেছে চিন (India China Relationship)। ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের এই গুরুত্বপূর্ণ রাজ্যটিকে ঘিরে বেজিংয়ের বিতর্কিত নামকরণ এবং ভূখণ্ড দাবি ফের একবার দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা বাড়িয়ে তুলেছে। ভারতের বিদেশ মন্ত্রক কড়া ভাষায় জানিয়ে দিয়েছে, অরুণাচল প্রদেশ ভারতেরই অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং চিনের একতরফা নাম পরিবর্তন সেই বাস্তবতাকে বদলাতে পারে না।
নাম বদলে নতুন মানচিত্র প্রকাশ চিনের (India China Relationship)
সম্প্রতি চিন অরুণাচল প্রদেশের বেশ কয়েকটি স্থানের নাম বদলে নতুন মানচিত্র প্রকাশ করেছে(India China Relationship)। গত বছরও চিন এমনই একটি তালিকা প্রকাশ করে, যেখানে অরুণাচলের ৩০টি স্থানের নতুন নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়। বেজিংয়ের দাবি, এই অঞ্চল ঐতিহাসিক ভাবে তিব্বতের অংশ ছিল। তবে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রক এই দাবিকে সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য এবং ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছে।
ভারতের অবস্থান(India China Relationship)
বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল (Randhir Jaiswal) এক বিবৃতিতে বলেন, “চিনের এই ধরনের প্রচেষ্টা অকার্যকর ও অযৌক্তিক(India China Relationship)। ভারতের ভূখণ্ডে নামকরণ করলেই তার সার্বভৌমত্ব বদলায় না। অরুণাচল ভারতেরই অংশ ছিল, আছে এবং থাকবে।”
আরও পড়ুন: Balochistan Liberation Army : পাকিস্তানকে “সন্ত্রাসবাদী রাষ্ট্র” ঘোষণার দাবি বালোচ বিদ্রোহীদের!
চিনের সঙ্গে একাধিক সংঘর্ষ (India China Relationship)
চিনের এই কৌশল নতুন নয়। গত এক দশকে একাধিকবার তারা ভারতের অরুণাচল প্রদেশের ওপর অধিকার দাবি করে আসছে(India China Relationship)। ২০১৯ সালে চিনা বাহিনী আমাকো ক্যাম্পের কাছে দইমরু নালার উপর একটি অস্থায়ী কাঠের সেতু নির্মাণ করেছিল। ২০২০ সালে দিবং উপত্যকা জেলাতেও চিনা বাহিনীর অনুপ্রবেশের অভিযোগ ওঠে। এর পরবর্তী সময়েই গলওয়ান উপত্যকায় সংঘর্ষে ২০ জন ভারতীয় জওয়ান শহিদ হন। পাল্টা প্রতিরোধে চিনাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এরপর থেকে দুই দেশের মধ্যে একাধিক সামরিক ও কূটনৈতিক বৈঠক হয় সীমান্ত উত্তেজনা প্রশমনের উদ্দেশ্যে।

আরও পড়ুন: India Pakistan Ceasefire : সিন্ধু জলচুক্তি না মিটলে যুদ্ধবিরতির উপর প্রহার, বললেন পাক বিদেশ মন্ত্রী
দুই দেশের সম্পর্ক উন্নতি(India China Relationship)
২০২৫ সালে দুই দেশের সম্পর্ক কিছুটা উন্নতির দিকে গেলেও অরুণাচল ইস্যু সেই সম্পর্কে নতুন করে উত্তেজনা তৈরি করতে পারে বলে মনে করছেন কূটনৈতিক মহল(India China Relationship)। বিশেষত, ভারতের জলে ও ভূখণ্ডে অধিকার বজায় রাখতে গিয়ে চিনের আগ্রাসী মনোভাব ভবিষ্যতের জন্য উদ্বেগজনক।এদিকে, পাকিস্তান-ভারত সংঘর্ষবিরতির আবহেও চিন তাদের অবস্থান স্পষ্ট করে জানায়—তারা পাকিস্তানের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করবে। যদিও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে তাদের অবস্থান স্পষ্ট, তবুও ভারতের প্রতি চিনের চাপ প্রয়োগের কৌশল আন্তর্জাতিক মহলে নজর কাড়ছে।
ভারতের কড়া বার্তা(India China Relationship)
চিনের এই ভূরাজনৈতিক কৌশলের বিরুদ্ধে ভারতের এই কড়া বার্তা শুধু দ্বিপাক্ষিক স্তরে নয়, আন্তর্জাতিক পরিসরেও একটি স্পষ্ট অবস্থান তুলে ধরছে(India China Relationship)। নয়াদিল্লি জানিয়ে দিয়েছে, নাম পাল্টালেই মানচিত্রের সীমারেখা পাল্টায় না। অরুণাচল ভারতেরই, এবং তাতে কোনও বিতর্কের অবকাশ নেই।অরুণাচলকে কেন্দ্র করে চিনের এই ‘নেমিং ওয়ারফেয়ার’ কৌশল কেবল কূটনৈতিক টানাপোড়েনই বাড়াচ্ছে না, ভারতের সার্বভৌমত্বের প্রশ্নেও তা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে ভারতের দৃঢ় অবস্থানই ভবিষ্যতের কূটনৈতিক সম্পর্ক নির্ধারণে মুখ্য ভূমিকা নেবে বলে মনে করা হচ্ছে।