ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ভারত ও চিনের মধ্যকার কূটনৈতিক সম্পর্কের (India China Relationship) ৭৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে মঙ্গলবার কলকাতায় আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে চিনের কনসাল জেনারেল সু উয়েই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে দুই দেশের সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সংযোগের প্রতীক হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, “রবীন্দ্রনাথ চিনে একটি পরিচিত নাম। তাঁর প্রজ্ঞা ও সাহিত্যকীর্তি ভারতে যেমন সম্মানিত, তেমনই চিনেও গভীর আগ্রহের সঙ্গে চর্চিত হয়।”
রবীন্দ্রনাথ ও চিনের শতকের সম্পর্ক (India China Relationship)
চিনা কনসাল জেনারেলের মতে, রবীন্দ্রনাথের চিন ভ্রমণ ভারত-চিন সাংস্কৃতিক বিনিময়ের এক নতুন অধ্যায় সূচিত করেছিল (India China Relationship) । ১৯২৪ সালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর চিন সফরে যান এবং সেখানে একাধিক বক্তৃতা দেন। তাঁর চিন সফরের এক শতক পূর্তির প্রেক্ষাপটে সু উয়েই বলেন, “রবীন্দ্রনাথের চিন সফর দুই দেশের সাংস্কৃতিক ও জ্ঞানচর্চার মেলবন্ধনে এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হিসেবে গণ্য হয়। “রবীন্দ্রনাথের চিন ভ্রমণকালে তিনি সে দেশের বিদ্বজ্জনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং ভারত-চিন সাংস্কৃতিক ও আধ্যাত্মিক সংযোগ নিয়ে আলোচনা করেন। সেই সময় চিনের বহু শিক্ষার্থী ও বুদ্ধিজীবী তাঁর দর্শন ও সাহিত্য থেকে অনুপ্রাণিত হন। তাঁর লেখা ও ভাবনার প্রভাব আজও চিনের সাহিত্য, শিল্প এবং দর্শনে প্রতিফলিত হয়।
ভারত-চিন সম্পর্কের ৭৫ বছর (India China Relationship)
১৯৫০ সালের ১ এপ্রিল ভারত ও চিনের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপিত হয় (India China Relationship)। গত ৭৫ বছরে দুই দেশ বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ ও সহযোগিতার মধ্যে দিয়ে এগিয়েছে। সু উয়েই বলেন, “এই দীর্ঘ সময়ে ভারত ও চিনের অগ্রগতি বিশ্বকে মুগ্ধ করেছে। দুই দেশ একসঙ্গে কাজ করলে বৈশ্বিক অর্থনীতিতেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। “সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi) ও চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের (Xi Jinping) মধ্যে বৈঠক হয়, যা দুই দেশের সম্পর্কে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। মোদী বলেছেন, “আলোচনার মাধ্যমেই সব মতভেদ মিটে যাবে।” প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংও ভারত-চিন একসঙ্গে কাজ করার গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, “ড্রাগন ও হাতি একসঙ্গে কথা বললে বিশ্ব তা শুনতে বাধ্য হবে।”

আরও পড়ুন: Israeli Military Bombs : ইজরায়েলের হামলায় কেঁপে উঠল লেবানন! নিহত হিজবুল্লাহ নেতা, ধ্বংস বহুতল
চিন ও ভারতের দৃষ্টিভঙ্গি (India China Relationship)
চিন ও ভারতের মধ্যে নানা সময়ে রাজনৈতিক ও সামরিক উত্তেজনা দেখা গেলেও, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক বিনিময় অব্যাহত রয়েছে (India China Relationship)। বাণিজ্য, প্রযুক্তি, শিক্ষা এবং পর্যটন খাতে দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে। কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারত-চিন সম্পর্কের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে উভয় দেশের কৌশলগত বোঝাপড়া ও সহযোগিতার ওপর। এই সম্পর্কের ক্ষেত্রে রবীন্দ্রনাথের মতাদর্শ ও মানবতাবাদী দৃষ্টিভঙ্গি আজও প্রাসঙ্গিক।

সাংস্কৃতিক সেতুবন্ধনের প্রতীক (India China Relationship)
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শুধুমাত্র এক কবি বা দার্শনিক ছিলেন না, তিনি দুই দেশের মধ্যে সাংস্কৃতিক সেতুবন্ধনের প্রতীক হিসেবেও কাজ করেছেন (India China Relationship)। চিন ও ভারতের সম্পর্ককে আরও সুদৃঢ় করতে তাঁর ভাবনার অনুসরণ গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। কূটনৈতিক ও সাংস্কৃতিক বিনিময়ের মাধ্যমে দুই দেশ একসঙ্গে এগিয়ে গেলে বিশ্বও তার ইতিবাচক প্রভাব অনুভব করবে।