ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’ অভিযান ঘিরে ইতিমধ্যেই দুই প্রতিবেশী পরমাণু শক্তিধর রাষ্ট্র—ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে কূটনৈতিক ও সামরিক উত্তেজনা তুঙ্গে (India Pakistan Ceasefire)। একদিকে ভারতের দাবি, এই অভিযানে একাধিক জঙ্গিঘাঁটি ধ্বংস এবং বহু জঙ্গির মৃত্যুর মাধ্যমে সন্ত্রাসবাদকে কড়া জবাব দেওয়া হয়েছে। অপরদিকে, পাকিস্তান এই অভিযানের ‘মানবিক মূল্য’ নিয়ে প্রশ্ন তুলছে এবং পাল্টা দাবি করছে যে, ভারতের আক্রমণে সাধারণ নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে।
সেনার তরফে যা জানানো হয়েছে (India Pakistan Ceasefire)
রবিবার, ভারতীয় সেনার (INDIAN ARMY) তরফে জানানো হয় যে, ‘অপারেশন সিঁদুর’-এ পাকিস্তান ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরের ৯টি জঙ্গিঘাঁটি ধ্বংস করা হয়েছে(India Pakistan Ceasefire)। নিহত হয়েছে শতাধিক জঙ্গি, যাদের মধ্যে রয়েছে পুলওয়ামা হামলা এবং কান্দাহার অপহরণে যুক্ত কুখ্যাত জঙ্গিরাও। নাম উঠে এসেছে ইউসুফ আজ়হার, আব্দুল মালিক রাউফ ও মুদস্সর আহমেদের মতো ব্যক্তিদের, যারা বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী তালিকায় চিহ্নিত ছিল।
পাকিস্তান পাল্টা প্রতিক্রিয়া (India Pakistan Ceasefire)
তবে পাকিস্তান সেনার মুখপাত্র লেফটেনান্ট জেনারেল আহমেদ শরিফ চৌধরি এই অভিযানের ভারতের দাবিকে উড়িয়ে দেন(India Pakistan Ceasefire)। তিনি রবিবার সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, “ভারতের হামলায় সাধারণ নাগরিক, শিশু, বৃদ্ধ ও মহিলার মৃত্যু হয়েছে। পাকিস্তান যথাযোগ্য পরিণত মনোভাব নিয়ে সীমিত প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে।” তাঁর দাবি, ৬-৭ মে রাত থেকে পাকিস্তান পাল্টা প্রতিক্রিয়া শুরু করে এবং তাতে ভারতের কয়েকটি বিমান ঘাঁটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যদিও এই দাবির কোনও প্রমাণ বা ভারতীয় প্রতিক্রিয়া এখনও প্রকাশ্যে আসেনি।

আরও পড়ুন: India Pakistan Conflict : জঙ্গিদের শেষকৃত্যে উপস্থিত পাক আধিকারিকদের পরিচয় প্রকাশ করল ভারত!
পাকিস্তান যুদ্ধবিরতির অনুরোধ করেনি (India Pakistan Ceasefire)
সবচেয়ে বিতর্কিত দিক হলো যুদ্ধবিরতি সংক্রান্ত বিভ্রান্তি(India Pakistan Ceasefire)। ভারতের তরফ থেকে জানানো হয়েছে যে, পাকিস্তানের ডিজিএমও (ডিরেক্টর জেনারেল অফ মিলিটারি অপারেশন) যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দেন, যা গ্রহণ করে ভারত। এই অবস্থাকে স্বাগত জানান আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, যিনি দুই দেশের মধ্যে মধ্যস্থতাকারী ভূমিকা পালন করেছেন বলেও দাবি করেছে একাধিক মার্কিন সংবাদমাধ্যম। কিন্তু এই দাবিও অস্বীকার করে পাকিস্তান। চৌধরি সাফ বলেন, “লিখে রাখুন, পাকিস্তান কখনও যুদ্ধবিরতির অনুরোধ করেনি।” তবে তিনি এটাও বলেন যে, দুটি পরমাণু শক্তিধর দেশের মধ্যে সরাসরি যুদ্ধের কোনও স্থান নেই, এবং পাকিস্তান দায়িত্বশীলতা ও সংযম বজায় রেখেই পরিস্থিতি মোকাবিলা করেছে।
দুই দেশের পাল্টাপাল্টি বিবৃতি(India Pakistan Ceasefire)
এই সাংবাদিক বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন পাকিস্তান বায়ুসেনার ডিরেক্টর জেনারেল পাবলিক রিলেশনস এয়ার ভাইস মার্শাল অওরঙ্গজেব আহমেদ ও নৌসেনার ডেপুটি চিফ ভাইস অ্যাডমিরাল রাজা রব নওয়াজ়(India Pakistan Ceasefire)। তাঁরা সম্মিলিতভাবে দাবি করেন যে, ভারতের হামলার প্রেক্ষিতে পাকিস্তানের প্রতিক্রিয়া ছিল “আবশ্যিক এবং যথাযথ”। বর্তমান পরিস্থিতিতে ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে আপাত শান্তি বিরাজ করলেও, দুই দেশের পাল্টা বিবৃতি পরিস্থিতির অনিশ্চয়তা বাড়াচ্ছে। ‘অপারেশন সিঁদুর’ শুধুমাত্র সামরিক অভিযান নয়, এটি দুই দেশের মধ্যে সন্ত্রাসবাদ ও জাতীয় নিরাপত্তা নিয়ে দীর্ঘস্থায়ী দ্বন্দ্বের এক নতুন অধ্যায়ও।