ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সাম্প্রতিক সংঘর্ষের আবহে অবশেষে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে দুই দেশ(India Pakistan Conflict)। তবে পহেলগাঁও কাণ্ডকে কেন্দ্র করে শুরু হওয়া পাল্টা হামলা ও সংঘর্ষের রক্তাক্ত পরিণতি এখন স্পষ্ট হচ্ছে সরকারি পরিসংখ্যানে। পাকিস্তান সরকার তাদের সামরিক জনসংযোগ দফতর ইন্টার সার্ভিস পাবলিক রিলেশনস (ISPR)-এর মাধ্যমে জানিয়েছে, ভারতীয় সেনার অভিযানে মোট ১১ জন পাক সেনা এবং ৪০ জন অসামরিক নাগরিক প্রাণ হারিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন ১৫ জন শিশু ও ৭ জন মহিলা। আহত হয়েছেন আরও ১২১ জন।
কোন কোন পাক অফিসার নিহত? (India Pakistan Conflict)
এই সংখ্যাগুলি পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যমের একটি প্রতিবেদনে উঠে এসেছে (India Pakistan Conflict)। এতে বলা হয়েছে, ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’ অভিযানে পাক সেনাবাহিনীর ও বিমানবাহিনীর একাধিক কর্মী নিহত হয়েছেন। তালিকায় রয়েছে পাক সেনার নায়েক আব্দুল রহমান, ওয়াকর খালিদ, ল্যান্সনায়েক দিলওয়ার খান, ইকরামুল্লা, সিপাই মুহাম্মদ আদিল এবং নিসার। এছাড়া পাক বিমানবাহিনীর স্কোয়াড্রন লিডার উসমান ইউসুফ ও টেকনিশিয়ান ঔরঙ্গজ়েব, নাজিব, ফারুক এবং মুবাশিরের মৃত্যুর কথাও জানানো হয়েছে।
তালিকায় নাম নেই কোনও জঙ্গির(India Pakistan Conflict)
যদিও পাকিস্তানের দেওয়া তালিকায় কোনও জঙ্গির নাম নেই, কিন্তু ভারতীয় সেনা (INDIAN ARMY) প্রথম থেকেই দাবি করে এসেছে, এই অভিযান শুধুমাত্র জঙ্গি ঘাঁটি লক্ষ্য করেই চালানো হয়েছে, বেসামরিক নাগরিক বা পাক সেনাকে লক্ষ্য করে নয়। ভারতীয় সেনার মতে, ‘অপারেশন সিঁদুর’ ছিল একমাত্র জঙ্গিদমন অভিযানের অংশ, যার মাধ্যমে পাকিস্তান এবং পাক-অধিকৃত কাশ্মীরের অন্তত ৯টি জঙ্গি ঘাঁটি ধ্বংস করা হয়েছে। এই ঘাঁটিগুলি জইশ-ই-মহম্মদ ও লশকর-ই-ত্যায়বা-র মতো জঙ্গিগোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রণে ছিল বলে জানায় ভারত(India Pakistan Conflict)।

আরও পড়ুন: India Pak Ceasefire : সোমবার রাতে সাময়িক ড্রোন দেখা গেলেও শান্ত ছিল সীমান্ত! খবর নেই সংঘর্ষের
ভারতের তরফে যা জানানো হয়েছে (India Pakistan Conflict)
রবিবার সন্ধ্যায় ভারতীয় সেনার এক সাংবাদিক সম্মেলনে জানানো হয়, পাকিস্তান প্রথমে হামলা চালালে প্রতিরক্ষা বাবস্থার অংশ হিসেবে তাদের সামরিক ঘাঁটিতেও পাল্টা আঘাত হানা হয়(India Pakistan Conflict)। সেনা সূত্র অনুযায়ী, এই পাল্টা অভিযানে ৩৫ থেকে ৪০ জন পাক সেনা নিহত হয়েছেন, এবং বেশ কিছু সামরিক স্থাপনাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যদিও পাকিস্তান এই সংখ্যা অস্বীকার করে, তাদের দাবি শুধুমাত্র ১১ জন সেনার মৃত্যু হয়েছে।

অভিযোগ অস্বীকার ভারতের (India Pakistan Conflict)
এই সংঘর্ষে সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ও ক্ষয়ক্ষতির খবরও সামনে এসেছে (India Pakistan Conflict)। পাকিস্তানের দাবি, ভারতের আক্রমণে প্রাণ হারানো ৪০ জন সাধারণ মানুষের মধ্যে নারী ও শিশু রয়েছে উল্লেখযোগ্য সংখ্যায়। অন্যদিকে, ভারত এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, সমস্ত অভিযান ছিল জঙ্গি ঘাঁটি লক্ষ্য করে এবং যথাসম্ভব বেসামরিক প্রাণহানির ঝুঁকি এড়িয়ে অপারেশন চালানো হয়েছে।দুই দেশের মধ্যে এখন যুদ্ধবিরতি চলছে, তবে এই সংঘর্ষের রেশ এখনও কাটেনি। সীমান্তবর্তী অঞ্চলে থমথমে পরিবেশ এবং সতর্কতা বজায় রেখেই চলছে জীবনযাত্রা। আন্তর্জাতিক মহলও দুই দেশের উত্তেজনা প্রশমন এবং দীর্ঘস্থায়ী শান্তির পক্ষে আহ্বান জানাচ্ছে (India Pakistan Conflict)।শেষ পর্যন্ত, এই সংঘর্ষ কে কতটা ক্ষতি করল—তা নিয়ে পাল্টাপাল্টি দাবির মাঝেও বাস্তব চিত্র ফুটে উঠছে প্রাণহানির পরিসংখ্যানে। প্রশ্ন একটাই—এই রক্তের বিনিময়ে কী আদৌ কোনও স্থায়ী সমাধান সম্ভব?