ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: তৃতীয় পক্ষের মধ্যস্থতায় নয়, একে অপরের সঙ্গে সরাসরি কথা বলুক ভারত ও পাকিস্তান (India-Pakistan dialogue)। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সুরের উল্টো দাবি করলেন মার্কিন বিদেশসচিব মার্কো রুবিও। গত শনিবার বিকেলে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে সংঘর্ষবিরতি ঘোষণার আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই খবর জানিয়েছিলেন। এই আবহে কাশ্মীর সমস্যা নিয়েও দুই দেশের মধ্যে মধ্যস্থতার ইচ্ছাপ্রকাশ করেন ট্রাম্প। কিন্তু রবিবার রুবিও ব্রিটিশ বিদেশ সচিব ডেভিড ল্যামির সঙ্গে কথা বলার পর ভিন্ন সুর শোনা গেল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসনের মুখে।
মার্কিন বিদেশ দফতরের বিবৃতি (India-Pakistan dialogue)
এক বিবৃতিতে মার্কিন বিদেশ দফতরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস (India-Pakistan dialogue) জানিয়েছেন, ‘রবিবার ব্রিটেনের বিদেশ সচিব ডেভিড ল্যামির সঙ্গে কথা বলেন রুবিও। সেখানে ভারত-পাকিস্তান বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। দুই দেশের মধ্যে যোগাযোগের মাধ্যম যাতে সব সময় খোলা রাখা এবং যুদ্ধবিরতি বহাল রাখার বিষয়েও জোর দিয়েছেন তাঁরা।’ মার্কিন বিদেশ সচিব জানান, ভারত এবং পাকিস্তান নিজেদের মধ্যে সরাসরি কথা বলুক। দুই দেশের মধ্যে যোগাযোগের মাধ্যম সব সময় খোলা রাখা হোক। দুই প্রতিবেশী দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক মজবুত করতে সব সময় সহায়ক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
ডনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতার দাবি (India-Pakistan dialogue)
গত শনিবার বিকেলে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সংঘর্ষ বিরতির ঘোষণা করেছিলেন বিদেশ সচিব বিক্রম মিশ্রি (India-Pakistan dialogue)। কিন্তু ভারতীয় বিদেশ সচিবের সাংবাদিক বৈঠকের আগেই ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প লেখেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় দীর্ঘ আলোচনার পর আমি আনন্দের সঙ্গে ঘোষণা করছি যে ভারত ও পাকিস্তান একটি পূর্ণ ও অবিলম্বে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। দুর্দান্ত বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দেওয়ায় উভয় দেশকে অভিনন্দন।’
এরপর রবিবার ট্রুথ সোশ্যালে তিনি লিখেছেন, ‘ভারত ও পাকিস্তানের শক্তিশালী ও অটল নেতৃত্বের জন্য আমি গর্বিত।তাদের জ্ঞান, সাহস এবং দৃঢ়তার কারণে তারা বুঝতে পেরেছেন যে এই সংঘাত বন্ধ করার সময় এসেছে, যা লক্ষ লক্ষ নিরীহ মানুষের মৃত্যু ও ধ্বংসের কারণ হতে পারত। আপনাদের এই সাহসী পদক্ষেপ আপনাদের ঐতিহাসিক উত্তরাধিকারকে আরও সমৃদ্ধ করেছে।’ ট্রাম্প আরও বলেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই ঐতিহাসিক ও বীরত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে সহায়তা করতে পেরে আমি গর্বিত। এছাড়াও, আমি দুই মহান দেশের সঙ্গে বাণিজ্য উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করব।এর পাশাপাশি, আমি আপনাদের সঙ্গে মিলে কাজ করব, যাতে হাজার বছর ধরে চলা কাশ্মীর সমস্যার একটি সমাধান খুঁজে বের করা যায়। ভারত ও পাকিস্তানের নেতৃত্বকে এই কাজের জন্য আশীর্বাদ করছি।’ পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ট্রাম্পের এই প্রস্তাবকে আহ্বান জানালেও ভারত নিজের পুরনো অবস্থানেই স্থির থেকেছে।
ভারতের বিদেশমন্ত্রী ও মার্কিন বিদেশ সচিব কথা (India-Pakistan dialogue)
গত শনিবার ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গেও কথা বলেন মার্কিন বিদেশ সচিব রুবিও। এরপরেই জয়শঙ্কর বলেছিলেন, ‘মার্কিন বিদেশসচিব মার্কো রুবিও-র সঙ্গে কথা হয়েছে। ভারতের পদক্ষেপ সর্বদাই নিয়ন্ত্রিত এবং দায়িত্বশীল ছিল এবং থাকবে।’ এরপরে বিকেলে ভারত সংঘর্ষ বিরতির কথা ঘোষণা করে। তখনও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ‘যুদ্ধ’ থামছে না বলে জানিয়ে দেন বিদেশমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আজ ভারত এবং পাকিস্তান সামরিক অভিযান এবং গোলাগুলি বন্ধ করার বিষয়ে একটি বোঝাপড়ায় এসেছে।’ এরপরেই তাঁর বার্তা, ‘ভারত ধারাবাহিক ভাবে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে দৃঢ় এবং আপসহীন অবস্থান নিয়ে এসেছে। এটি অব্যাহত থাকবে।’
অপারেশন সিঁদুরের প্রভাব (India-Pakistan dialogue)
অপারেশন সিঁদুরের পর থেকেই সীমান্ত এলাকায় প্রবল গোলাবর্ষণ চালিয়েছে পাক সেনা। টানা তিন রাত পাকিস্তান ভারতের উত্তর ও পশ্চিম সীমান্তে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে চলেছে। ভারতও পাল্টা প্রতিরোধ করেছে। শনিবারও জম্মু ও কাশ্মীরের বিস্তীর্ণ অংশে প্রবল গোলাবর্ষণ করা হয়েছে। যার জেরে কাশ্মীরে সরকারি আধিকারিক-সহ তিন জনের মৃত্যুও হয়েছে।তবে রবিবার থেকে পরিস্থিতি ধীরে ধীরে শান্ত হয়েছে।