ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল : ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে ঘটে যাওয়া জঙ্গি হামলা ভারতের নিরাপত্তা ব্যবস্থার ওপর একটি বড় চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে(India Pakistan Tension)। শুধু উপত্যকায় রক্তক্ষয় নয়, এই হামলা আন্তর্জাতিক মঞ্চে পাকিস্তানের দ্বিচারিতা, কূটনৈতিক চাপ এবং ভবিষ্যতের সন্ত্রাসবাদী ছককে স্পষ্ট করে তুলেছে। পুলওয়ামার পর পহেলগাঁও— দুই ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে পাকিস্তান মদতপুষ্ট সংগঠনের জড়িত থাকার প্রমাণ, এবং একই সঙ্গে নিয়ন্ত্রণরেখায় (LoC) তাদের পুরনো কিন্তু আরও সূক্ষ্ম হয়ে ওঠা সন্ত্রাস কৌশল।
সুড়ঙ্গ-সন্ত্রাসের ছক (India Pakistan Tension)
কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর সন্ত্রাসবাদীরা অনুপ্রবেশের জন্য আবারও সুড়ঙ্গ ব্যবহারে ঝুঁকতে পারে— এই আশঙ্কাই নিরাপত্তা বাহিনীর সাম্প্রতিক গোয়েন্দা রিপোর্টে উঠে এসেছে(India Pakistan Tension)। অতীতে ৫০০ মিটার দীর্ঘ সুড়ঙ্গ খনন করে পাকিস্তান থেকে অনুপ্রবেশ ঘটেছে, এমন নজির অসংখ্য। এবার, সিআরপিএফ কনভয়ের ওপর হামলায় নিহত ওমর ফারুকের মতোই, প্রশিক্ষিত জঙ্গিরা এই রুট ব্যবহার করতে পারে। ভারতের সীমান্ত সুরক্ষায় ৩৩ কিমি আন্তর্জাতিক সীমান্তে ট্রেঞ্চ খনন হলেও এলওসিতে এর অনুপস্থিতি একটি বড় ফাঁক।
আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংযোগের নতুন মাত্রা(India Pakistan Tension)
এই হামলায় আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো— প্যালেস্টাইনপন্থী জঙ্গি সংগঠন হামাসের ছায়া(India Pakistan Tension)। ইজরায়েলের রাষ্ট্রদূতের মন্তব্য অনুযায়ী, হামাস যেভাবে গাজ়া থেকে সুড়ঙ্গ ব্যবহার করে অপারেশন চালিয়েছিল, তার ছাপ রয়েছে পহেলগাঁওতেও। আরও তাৎপর্যপূর্ণ, হামলার ঠিক আগে পাক অধিকৃত কাশ্মীরে হামাসের নেতাদের উপস্থিতি এবং ঘৃণাভাষণ। যদিও ভারতীয় গোয়েন্দারা এই দুই জঙ্গি সংগঠনের প্রত্যক্ষ সহযোগিতার প্রমাণ স্বীকার করেননি, তথাপি পরিস্থিতি উদ্বেগজনক।
কূটনৈতিক চাপ ও সামরিক প্রস্তুতি(India Pakistan Tension)
পাকিস্তান রাষ্ট্রপুঞ্জে TRF-এর নাম বাদ দেওয়াতে সফল হলেও, ভারতের (Narendra Modi) কূটনৈতিক কৌশলে ইসলামাবাদ কার্যত একঘরে। নয়াদিল্লি আন্তর্জাতিকভাবে TRF-এর জঙ্গি চরিত্র তুলে ধরতে সচেষ্ট এবং পাকিস্তানের ভূমিকা উদঘাটনে আরও সক্রিয়। সামরিক দিক থেকেও প্রধানমন্ত্রী মোদী স্থল, জল, বায়ু সেনাকে পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়েছেন— যা বার্তা দেয়, প্রতিরোধের সঙ্গে পাল্টা আঘাতও হতে পারে।

আরও পড়ুন: India Pakistan Conflict : সংঘর্ষ হলে রাশিয়া ও ইজ়রায়েলের কাছ থেকে কতটা অস্ত্র সাহায্য পাবে ভারত?
উত্তপ্ত আবহে ঠান্ডা মাথার বার্তা(India Pakistan Tension)
পাকিস্তানের সংঘর্ষবিরতি চুক্তি ভাঙার অভিযোগ নতুন নয়। তবে পহেলগাঁও হামলার পর ছ’রাত ধরে এলওসিতে টানা গোলাগুলি এবং ডিজিএমও স্তরে ভারতের ‘সতর্কবার্তা’—এই সংলাপকে প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকেরা তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন। আবার পরদিনই নতুন করে গোলাগুলি, যা পাকিস্তানের দ্বিমুখী নীতিরই প্রমাণ।
গোয়েন্দা ব্যর্থতা?(India Pakistan Tension)
গোয়েন্দা ব্যর্থতা স্বীকার করে সাত বছর পর জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা পর্ষদের পুনর্গঠন, এবং ‘র’-এর প্রাক্তন ডিরেক্টর অলোক জোশীকে দায়িত্বভার দেওয়া—এই পদক্ষেপ গুরুত্বপূর্ণ(India Pakistan Tension)। দীর্ঘদিন একচ্ছত্র ক্ষমতায় থাকা অজিত ডোভালের ভূমিকা সীমিত হওয়ার ইঙ্গিতও পাওয়া যাচ্ছে।সীমান্তে পাক ষড়যন্ত্র নতুন নয়, কিন্তু আজকের প্রেক্ষাপটে তা আরও ঘনীভূত, আরও জটিল। সুড়ঙ্গ, হামাস, রাষ্ট্রপুঞ্জে চাপ—এই তিন পরতের কৌশল বুঝে উত্তর দিতে হবে ভারতকে। শুধু সামরিক নয়, কূটনৈতিক ও গোয়েন্দা স্তরেও সজাগ এবং একজোট প্রতিক্রিয়া এখন সময়ের দাবি।