ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: পাকিস্তান সফরে এসে ভারত-পাক সম্পর্কের উত্তাপ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলেন ব্রিটেনের নবনিযুক্ত বিদেশমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি (India Pakistan Tensions)। ইসলামাবাদে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি জানান, দক্ষিণ এশিয়ায় (India Pakistan Tensions) ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সম্পর্ক মেরামতির জন্য ব্রিটেন এখন আমেরিকার সঙ্গে সমন্বয় রেখে কাজ করছে।
ব্রিটেনের বিদেশমন্ত্রী কী বলেছেন? (India Pakistan Tensions)
রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ল্যামি (David Lammy) বলেন, “একটি স্থায়ী সংঘর্ষবিরতি, আস্থা ফেরানো এবং আলোচনার পরিবেশ গড়ে তোলার জন্য আমরা মার্কিন প্রশাসনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছি (India Pakistan Tensions)।”এই মন্তব্য এমন এক সময়ে এল, যখন মাত্র কিছুদিন আগেই পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার পর ভারত-পাক সম্পর্ক চরম অবনতির দিকে গিয়েছে। ভারতের পাল্টা অভিযানে ‘অপারেশন সিঁদুর’-এ পাকিস্তানের অধিকৃত কাশ্মীরের জঙ্গিঘাঁটিগুলি লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়। তার প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তানও সামরিক পদক্ষেপ নেয়। চারদিন ধরে চলা সংঘর্ষের পরে, গত ১০ মে উভয় দেশ সাময়িক সংঘর্ষবিরতিতে সম্মত হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকায় বিতর্ক (India Pakistan Tensions)
ল্যামির বক্তব্যের আগে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছিলেন, সংঘর্ষবিরতিতে রাজি করাতে তাঁর প্রশাসন সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে (India Pakistan Tensions)। এমনকি, যদি সংঘর্ষবিরতি না হয়, তবে ভারত ও পাকিস্তানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র ব্যবসা বন্ধ করে দেবে, এই হুঁশিয়ারি নাকি দিয়েছিল ট্রাম্প প্রশাসন।তবে ভারত এই দাবিকে সরাসরি খণ্ডন করেছে। দেশের বিদেশ মন্ত্রকের পক্ষ থেকে স্পষ্ট জানানো হয়েছে—গত ৭-১০ মে চলাকালীন আমেরিকার সঙ্গে কোনও আলোচনাতেই ব্যবসা সংক্রান্ত শর্ত বা হুমকির প্রসঙ্গ ওঠেনি। এটি শুধুই মার্কিন অভ্যন্তরীণ রাজনীতির রেটোরিক হিসেবে ব্যাখ্যা করেছেন বিশেষজ্ঞরা।

আলোচনা হবে কেবল সন্ত্রাস ও পিওকে নিয়ে (India Pakistan Tensions)
সাম্প্রতিক কাশ্মীর-সংক্রান্ত উত্তেজনার প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জাতির উদ্দেশে ভাষণে স্পষ্ট করে দেন,“পাকিস্তানের সঙ্গে যদি কোনও আলোচনা হয়, তবে তা হবে কেবল সন্ত্রাসবাদ ও পাক অধিকৃত কাশ্মীর (PoK) নিয়ে।”এই অবস্থানকে বিদেশ মন্ত্রকও নীতিগতভাবে মজবুত ও অপরিবর্তনীয় বলে জানিয়েছে। জম্মু ও কাশ্মীর ভারতের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ এবং পাক অধিকৃত অঞ্চল বেআইনি দখল বলেই ভারতীয় অবস্থান দীর্ঘকাল ধরে।

শান্তির বার্তা না কৌশলগত ভারসাম্য? (India Pakistan Tensions)
বিশ্লেষকদের মতে, ডেভিড ল্যামির মন্তব্য একদিকে যেমন শান্তির বার্তা বহন করে, তেমনই ব্রিটেনের দক্ষিণ এশিয়ায় নতুন করে কূটনৈতিক ভারসাম্য বজায় রাখার ইঙ্গিতও দেয় (India Pakistan Tensions)। Brexit পরবর্তী সময়ে আন্তর্জাতিক মঞ্চে প্রভাব বাড়াতে আগ্রহী ব্রিটেন, এবং ভারত-পাক বিরোধ এমন একটি ইস্যু, যেখানে ব্রিটেন মধ্যস্থতার জায়গা খুঁজতে পারে।ডেভিড ল্যামির মন্তব্যে স্পষ্ট, আন্তর্জাতিক মহলে ভারত-পাক উত্তেজনা নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে। তবে ভারতের অবস্থান আপসহীন—সন্ত্রাসবাদ নির্মূল ও পিওকে নিয়ে নীতিগত লড়াই। আলোচনার পথ কতটা খোলা থাকবে, তা নির্ভর করছে পাকিস্তানের আচরণ এবং আন্তর্জাতিক চাপে তার প্রতিক্রিয়ার উপর।