ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে ভারত এবং আমেরিকার মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতার সম্ভাবনা আরও জোরদার হল (India US Relation)। সম্প্রতি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi) এবং টেসলা ও স্পেসএক্সের প্রধান নির্বাহী ইলন মাস্কের মধ্যে এক গুরুত্বপূর্ণ ফোনালাপ হয়। মোদী নিজেই এই ফোনালাপের কথা সমাজমাধ্যমে জানিয়ে বলেন, প্রযুক্তি, উদ্ভাবন এবং ভবিষ্যতের সম্ভাবনা নিয়ে তাঁদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে।
মোদী ও মাস্কের বৈঠক (India US Relation)
চলতি বছরের শুরুতে আমেরিকার রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে মোদী ও মাস্কের (Elon Musk) মধ্যে একটি সরাসরি বৈঠক হয়েছিল। সেই আলোচনার ধারাবাহিকতাতেই এই ফোনালাপ হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। মোদীর পোস্ট অনুযায়ী, প্রযুক্তি এবং উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে আমেরিকার সঙ্গে ভারতের অংশীদারিত্ব আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকারও করা হয়েছে।
ফোনালাপে নতুন ইঙ্গিত (India US Relation)
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ফোনালাপ একপ্রকার ইঙ্গিত দিচ্ছে যে, প্রযুক্তি খাতে ভারতের বাজারে টেসলার প্রবেশাধিকার আরও সুগম হতে চলেছে। যদিও এখনও পর্যন্ত টেসলা অফিসিয়ালি ভারতে তাদের কার্যক্রম শুরু করেনি, তবে কোম্পানির তরফে ইতিমধ্যেই বৈদ্যুতিন গাড়ি শিল্পে কর্মী নিয়োগের কাজ শুরু হয়েছে।

বিশ্বাস ও সহযোগিতা বৃদ্ধির চেষ্টা (India US Relation)
উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, অতীতে টেসলা ও ভারত সরকারের মধ্যে বৈদ্যুতিন গাড়ির আমদানি শুল্ক নিয়ে দ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছিল (India US Relation)। মাস্কের প্রধান উদ্বেগ ছিল, ভারতের উচ্চ আমদানি শুল্কের কারণে বিদেশি ইভি গাড়ির দাম বৃদ্ধি পায়, ফলে বাজার প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়তে হয়। তবে ২০২৪ সালের মার্চে ভারত সরকার বৈদ্যুতিন গাড়ির শুল্ক হ্রাসের সিদ্ধান্ত নেয়, যা এক বড় পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। এই সিদ্ধান্তের পরেই মোদী-মাস্ক বৈঠক এবং এবার ফোনালাপ— দুই পক্ষের মধ্যে বিশ্বাস ও সহযোগিতা আরও দৃঢ় হওয়ার ইঙ্গিত মিলছে।

ভারত-আমেরিকা সম্পর্ক (India US Relation)
এর পাশাপাশি রাজনৈতিক এবং কূটনৈতিক প্রেক্ষাপটও এই ফোনালাপকে তাৎপর্যপূর্ণ করে তুলেছে (India US Relation)। ট্রাম্প দ্বিতীয়বার প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর থেকে ভারত-আমেরিকা সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ করার প্রয়াস নিয়েছে মোদী সরকার। তবে ট্রাম্পের শুল্কনীতি ভারতকে কিছুটা সমস্যার মধ্যে ফেলে। ২০২৪ সালে ট্রাম্প ঘোষণা করেছিলেন, যে দেশ আমেরিকান পণ্যের উপর বেশি শুল্ক চাপাবে, আমেরিকাও সেই দেশের পণ্যের উপর সমান পাল্টা শুল্ক আরোপ করবে। এতে ভারতের উপর ২৬% পর্যন্ত শুল্ক বসানো হয়, যদিও পরে তা ৯০ দিনের জন্য স্থগিত হয়।

আরও পড়ুন : Donald Trump on Pakistan : ইরানের পর এবার পাকিস্তান? ট্রাম্পের মন্তব্য ঘিরে তুঙ্গে উত্তেজনা
শুল্কযুদ্ধ তীব্র (India US Relation)
এই সময়েই আমেরিকা ও চিনের মধ্যে শুল্কযুদ্ধ তীব্র হয় এবং বেজিং নয়াদিল্লিকে পাশে থাকার আবেদন জানায়। কিন্তু ভারত সরকার কোনও প্রতিক্রিয়া জানায়নি। এই জটিল পরিস্থিতির মধ্যেই মোদী-মাস্ক ফোনালাপ প্রযুক্তি ও অর্থনৈতিক কূটনীতির ক্ষেত্রে একটি ইতিবাচক বার্তা বহন করছে।এই আলোচনা যদি ফলপ্রসূ হয়, তাহলে ভবিষ্যতে ভারতের প্রযুক্তি ও ইভি বাজারে টেসলা এবং অন্যান্য মার্কিন কোম্পানির প্রবেশ দ্বার খুলে যেতে পারে। পাশাপাশি, এটি দুই দেশের কৌশলগত সম্পর্ককেও আরও মজবুত করতে পারে।