ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ভারত-আমেরিকা বাণিজ্যচুক্তি নিয়ে জল্পনার অবসান ঘটিয়ে মুখ খুললেন ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রকের বিশেষ সচিব রাজেশ আগরওয়াল(India US Trade Deal)। বৃহস্পতিবার তিনি জানান, চলতি বছরের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসের মধ্যেই দু’দেশের মধ্যে প্রথম দফার বাণিজ্যচুক্তি সম্পন্ন করার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, তার আগেই একটি অন্তর্বর্তী সমঝোতা করার পরিকল্পনাও রয়েছে নয়াদিল্লির।
উল্লেখ্য, আগরওয়াল বর্তমানে আমেরিকার সঙ্গে চলা বাণিজ্য আলোচনা নিয়ে ভারতীয় প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। এই মুহূর্তে ওয়াশিংটনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য কাঠামো পুনর্গঠনের বিষয়ে আলোচনা চলছে। তবে এখনও পর্যন্ত কোনও আনুষ্ঠানিক সময়সূচি ঘোষণা হয়নি।
আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে ভারতের সক্রিয়তা (India US Trade Deal)
পিটিআই-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে রাজেশ আগরওয়াল (Rajesh Agarwal) জানান, ভারত ইতিমধ্যেই ২৬টি দেশের সঙ্গে ১৪টিরও বেশি মুক্ত বাণিজ্যচুক্তি (FTA) সম্পন্ন করেছে(India US Trade Deal)। তিনি বলেন, “আমরা এখন বিশ্বের বড় বাজারগুলির সঙ্গে একত্রিত হওয়ার প্রক্রিয়ায় রয়েছি। সদ্য ব্রিটেনের সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গেও আমাদের আলোচনা একটি নির্দিষ্ট স্তরে পৌঁছেছে। এখন আমরা আমেরিকার সঙ্গেও দ্রুত চুক্তি সম্পন্ন করতে চাইছি।”
তিনি আরও জানান, শুধু আমেরিকা নয়, দক্ষিণ আমেরিকার চিলি, পেরু-সহ আরও বেশ কিছু দেশের সঙ্গেও মুক্ত বাণিজ্যচুক্তির সম্ভাবনা নিয়ে কথা চলছে। এছাড়াও অস্ট্রেলিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি ও নিউ জিল্যান্ডের সঙ্গেও রয়েছে চলমান আলোচনা।
ট্রাম্প প্রশাসনের চাপ (India US Trade Deal)
এই পরিস্থিতিতে আরও তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠেছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাম্প্রতিক ঘোষণাগুলি(India US Trade Deal)। গত সপ্তাহে তিনি সাতটি দেশের উপর নতুন শুল্ক আরোপের কথা জানিয়েছেন। বাংলাদেশের মতো ভারতের তিন প্রতিবেশী দেশও শুল্ক-চিঠি পেয়েছে। যদিও ভারত এখনও এমন কোনও শুল্কের মুখোমুখি হয়নি, তবে ট্রাম্প বারবার দাবি করেছেন—আলোচনা প্রক্রিয়া শেষ পর্যায়ে রয়েছে। হোয়াইট হাউসে এক সাংবাদিক বৈঠকে ট্রাম্প বলেন, “আমরা ভারতের সঙ্গে চুক্তির খুব কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছি। ব্রিটেন ও চিনের সঙ্গে আমাদের চুক্তি ইতিমধ্যে সেরে গিয়েছে।”

বিশেষজ্ঞদের মতে, ট্রাম্প প্রশাসনের তরফে চাপ সৃষ্টি করার সম্ভাবনা প্রবল, বিশেষ করে যে পরিস্থিতিতে তিনি বাণিজ্য ঘাটতির অভিযোগ তুলে একাধিক দেশকে শুল্কের আওতায় আনছেন।

আরও পড়ুন: X Ceo Resigns : ইলন মাস্কের ‘এক্স’ ছাড়লেন লিন্ডা ইয়াক্কারিনো, বিতর্কের মাঝেই পদত্যাগ
ভবিষ্যতের দিশা (India US Trade Deal)
ভারতীয় বাণিজ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, আমেরিকার সঙ্গে চুক্তি হলে সেটি হবে মোদি সরকারের বড় কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক সাফল্য(India US Trade Deal)। তবে এই আলোচনায় কৃষি, প্রযুক্তি স্থানান্তর, ওষুধ শিল্প, পরিষেবা খাত ও শুল্কনীতি—এই সব বিষয়ে অমিল থাকাই চুক্তি সম্পন্ন হওয়ার পথে অন্যতম প্রধান চ্যালেঞ্জ। রাজেশ আগরওয়াল জানিয়েছেন, “আমাদের লক্ষ্য শুধুমাত্র চুক্তি স্বাক্ষর নয়, বরং একটি ভারসাম্যপূর্ণ ও দীর্ঘমেয়াদে লাভজনক কাঠামো তৈরি করা।” এখন দেখার, আগামী মাসগুলিতে এই চুক্তি কার্যকর হয় কি না এবং তার প্রভাব ভারতের বাণিজ্য ও আন্তর্জাতিক সম্পর্কের উপর কতটা পড়ে।