ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ভারতীয় নৌবাহিনী, ২০২৫ সালের ১৮ জুন, বিশাখাপত্তনম নৌসেনা ডকইয়ার্ডে আনুষ্ঠানিকভাবে কমিশন করতে চলেছে প্রথম অ্যান্টি-সাবমেরিন শ্যালো ওয়াটার ক্রাফ্ট (ASW-SWC) যুদ্ধজাহাজ ‘আর্ণালা’ (Arnala)। এই বিশেষ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন প্রতিরক্ষা প্রধান জেনারেল অনিল চৌহান। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করবেন ইস্টার্ন নাভাল কমান্ডের ফ্ল্যাগ অফিসার কমান্ডিং-ইন-চিফ ভাইস অ্যাডমিরাল রাজেশ পেন্ধারকর। এছাড়াও অনুষ্ঠানে থাকবেন জাহাজ নির্মাণকারী সংস্থার প্রতিনিধি, নৌসেনার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এবং বিভিন্ন সংস্থার বিশিষ্ট অতিথিরা।
প্রথমবার ASW-SWC শ্রেণির জাহাজ নৌবাহিনীতে (Arnala)
এই আর্ণালা (Arnala) জাহাজটি হল মোট ১৬টি ASW-SWC শ্রেণির যুদ্ধজাহাজের মধ্যে প্রথম। এটি নির্মাণ করেছে কলকাতার গার্ডেন রিচ শিপবিল্ডার্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ার্স (GRSE), যেটি একটি পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ (PPP) প্রকল্পের আওতায় বানিয়েছে এল অ্যান্ড টি শিপবিল্ডার্সের সহযোগিতায়। এই প্রকল্প আত্মনির্ভর ভারত উদ্যোগের প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে সাফল্যের এক বড় দৃষ্টান্ত।
নৌসেনার হাতে হস্তান্তর ও ঐতিহাসিক নামকরণ (Arnala)
‘আর্ণালা’ (Arnala) যুদ্ধজাহাজটি ৮ মে ২০২৫-এ আনুষ্ঠানিকভাবে ভারতীয় নৌবাহিনীর হাতে তুলে দেওয়া হয়। এই যুদ্ধজাহাজের নাম রাখা হয়েছে মহারাষ্ট্রের ভাসাই উপকূলের ঐতিহাসিক ‘আর্ণালা দুর্গ’-এর নাম অনুসারে। যেভাবে সেই দুর্গ বহু বিপদের মুখে দাঁড়িয়ে সাহসিকতার সঙ্গে টিকে ছিল, ঠিক তেমনই এই যুদ্ধজাহাজটিকেও বানানো হয়েছে সমুদ্রে শক্তিশালী অবস্থান গড়ে তোলার জন্য।
দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি শক্তিশালী যুদ্ধজাহাজ
৭৭.৬ মিটার দীর্ঘ এই যুদ্ধজাহাজটির ওজন ১৪৯০ টনেরও বেশি এবং এটি ডিজেল ইঞ্জিন-ওয়াটারজেট কম্বিনেশন দ্বারা চালিত। এটি দেশের বৃহত্তম নৌযুদ্ধজাহাজ, যেটি এই প্রযুক্তিতে চালিত। এর ৮০ শতাংশেরও বেশি অংশ দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি। এতে যুক্ত হয়েছে ভারতের বিভিন্ন প্রতিরক্ষা সংস্থার উন্নত প্রযুক্তি, যেমন ভারত ইলেকট্রনিক্স লিমিটেড (BEL), এল অ্যান্ড টি, মহিন্দ্রা ডিফেন্স এবং MEIL।
এই প্রকল্পে অংশ নিয়েছে ৫৫টিরও বেশি মাইক্রো, স্মল অ্যান্ড মিডিয়াম এন্টারপ্রাইজ (MSME), যার ফলে দেশীয় শিল্প ও অর্থনীতির গতিবেগও বেড়েছে।
কী কী কাজে ব্যবহৃত হবে ‘আর্ণালা’?
এই যুদ্ধজাহাজটিকে মূলত সাবমেরিন শনাক্তকরণ ও প্রতিরোধ (Subsurface Surveillance), উদ্ধার কাজ (Search and Rescue), এবং নিম্ন-তীব্রতার সামুদ্রিক অপারেশন (Low-Intensity Maritime Operations)-এর জন্য তৈরি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: Tejashwi Yadav Convoy Rammed by Truck: ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনা, অল্পের জন্য রক্ষা পেলেন তেজস্বী যাদব
ভারতের নৌ-ক্ষমতায় নতুন অধ্যায়ের সূচনা
‘আর্ণালা’ যুদ্ধজাহাজ কমিশন হওয়ার মাধ্যমে ভারতের উপকূল প্রতিরক্ষা আরও শক্তিশালী হবে। এটি ভারতকে ভারত মহাসাগর অঞ্চলে আত্মনির্ভর ও কৌশলগতভাবে শক্তিশালী সামুদ্রিক শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠা করবে। এই জাহাজ কেবল একটি প্রতিরক্ষা সম্পদ নয়, বরং ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ ও ‘আত্মনির্ভর ভারত’-এর লক্ষ্য পূরণের এক উজ্জ্বল উদাহরণ।