ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল : কানাডার (Canada) নতুন প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি ২৪ সদস্যের মন্ত্রিসভায় দুটি গুরুত্বপূর্ণ পদে দুই ভারতীয় বংশোদ্ভূত মহিলাকে স্থান দিয়েছেন। ইন্ডো-কানাডিয়ান রাজনীতিবিদ অনিতা আনন্দ এবং দিল্লির কামাল খেরা এবার মার্ক কার্নির মন্ত্রিসভায় যুক্ত হয়েছেন। শুক্রবার, কানাডার (Canada) ২৪তম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন মার্ক কার্নি। লিবারেল পার্টির নেতা এবং প্রাক্তন ব্যাঙ্কার কার্নিকে শপথ বাক্য পাঠ করান গর্ভনর জেনারেল মেরি সিমোন।
গুরুত্বপূর্ণ পদে দুই ভারতীয় বংশোদ্ভূত (Canada)
মার্ক কার্নির মন্ত্রিসভায় গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত অনিতা আনন্দ এবং কামাল খেরা। ৫৮ বছর বয়সী অনিতা সামলাবেন কানাডার (Canada) শিল্প, বিজ্ঞান এবং উদ্ভাবনী শক্তি বিষয়ক মন্ত্রকের দায়িত্ব। আর ৩৬ বছর বয়সী কামাল খেরা দায়িত্বে থাকবেন কানাডার স্বাস্থ্য মন্ত্রকের। ট্রুডোর মন্ত্রিসভা থেকে কার্নির মন্ত্রিসভায় স্থান পাওয়া কয়েকজন নির্বাচিত মন্ত্রীদের মধ্যে অনিতা আনন্দ এবং কামাল খেরা অন্যতম। তবে পূর্বে তাদের দফতর ছিল ভিন্ন। কানাডার নতুন প্রধানমন্ত্রী সোশ্যাল মিডিয়ায় মন্ত্রিসভার সদস্যদের ছবি পোস্ট করে তাদের পরিচয় করিয়েছেন।মার্ক কার্নির মন্ত্রিসভায় অনিতা ও কামাল ছাড়াও রয়েছেন আরও ৯ মহিলা এবং ১৩ জন পুরুষ সদস্য।
আরও পড়ুন : Sunita Williams:পৃথিবীতে ফিরছেন সুনীতারা, মহাকাশ স্টেশনে পৌঁছে গেল ক্রিউ-১০
কামাল খেরা (Canada)
২০১৫ সালে পশ্চিম ব্রাম্পটন ওয়েস্ট থেকে সর্বকনিষ্ঠ সাংসদ হিসেবে জেতেন কামাল খেরা (Kamal Khera)। সবচেয়ে কম বয়সে কানাডার (Canada) মন্ত্রী হয়ে রেকর্ড গড়েছিলেন কমল। তাঁর জন্ম দিল্লির খেরা পরিবারে। কমল স্কুলে পড়াকালীনই কানাডায় চলে যান। পরবর্তীতে টরন্টোর ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞানে বিভাগে স্নাতক হন। প্রথম বার ২০১৫ সালে ব্রাম্পটন ওয়েস্ট থেকে সাংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন কমল। কমিউনিটি ভলান্টিয়ার ও পলিটিক্যাল অ্যাক্টিভিস্ট হিসেবেও কাজ করেছেন তিনি।
কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নির ওয়েবসাইটে কমল খেরার সম্পর্কে লেখা হয়েছে, তিনি পেশায় নার্স ছিলেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী হওয়ার পর এক্স-এ একটি পোস্টে কমল বলেন, ‘‘নার্স হিসেবে আমি সব সময় রোগীদের পাশে থাকার চেষ্টা করতাম, এবং স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিসাবেও তা-ই করতে চাই। আমার উপর আস্থা রাখার জন্য মার্ক কার্নেকে ধন্যবাদ।’’ এর আগে, কমল কানাডার অভ্যন্তরীণ উন্নয়ন মন্ত্রক, স্বাস্থ্য মন্ত্রক এবং জাতীয় রাজস্ব মন্ত্রকের পার্লামেন্টারি সচিব হিসেবে কাজ করেছেন। এখন তিনি স্বাধীনভাবে কানাডার স্বাস্থ্য মন্ত্রক পরিচালনা করবেন। রাজনীতিতে আসার আগে, কমল টরন্টোর সেন্ট জোসেফ হেল্থ সেন্টারের অঙ্কোলজি বিভাগে নার্স হিসেবে কর্মরত ছিলেন। অতিমারির সময়, তিনি আবার নিজের পুরনো পেশায় ফিরে যান এবং ব্রাম্পটনের একটি হাসপাতালে নার্স হিসেবে কাজ শুরু করেন।
আরও পড়ুন : Iran Law: অ্যাপের মাধ্যমে নজরদারি, হিজাব না পরলেই পুলিশের কাছে নোটিফিকেশন!
অনিতা আনন্দ
জাস্টিন ট্রুডোর পর কানাডার সম্ভাব্য প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে ছিলেন অনিতা আনন্দ (Anita Anand)। তিনি একজন স্কলার, আইনজীবী, অধ্যাপক, গবেষক এবং অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদ। চলতি বছরের জানুয়ারিতে তিনি নিজেই সেই দৌড় থেকে সরে দাঁড়ান। সম্প্রতি, বিজ্ঞান, শিল্প ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের দায়িত্ব পাওয়ার পর একটি পোস্টে অনিতা সবাইকে ধন্যবাদ জানান। একইসঙ্গে, শুল্ক যুদ্ধ নিয়ে তিনি বিশেষ বার্তা দেন, বলেন, ‘‘নেগেটিভিটি দিয়ে বাণিজ্য যুদ্ধে জয় পাওয়া সম্ভব নয়, এমনকি জিনিসের দামও নেগেটিভিটি দিয়ে কমানো যায় না।’’
২০১৯ সালে ওকভিল থেকে নির্বাচিত হয়ে প্রথম পার্লামেন্টে প্রবেশ করেন অনিতা। তিনি তামিল পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন, এবং তার মা পাঞ্জাবি। এর আগে, কানাডার প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের দায়িত্বও তিনি সামলেছেন। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী অনিতা কোভিড মহামারীর সময় জনসেবা ও ক্রয় মন্ত্রী হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন, এবং কানাডায় ভ্যাকসিন আনার তার প্রচেষ্টা ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছিল। ২০২১ সালে তিনি প্রতিরক্ষা মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে ইউক্রেনের পাশে দাঁড়ান। কানাডার সেনাবাহিনীর দীর্ঘদিনের সমস্যাগুলো সমাধান করার চেষ্টা করেন। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে, তিনি পরিবহণ মন্ত্রীর দায়িত্ব পান।