ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল : ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলছে উত্তেজনার পরিস্থিতি। এসময় দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং যুদ্ধক্ষেত্রে প্রতিপক্ষকে টেক্কা দিতে ভারত একের পর এক আধুনিক ও ধ্বংসাত্মক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করেছে (Indian Top 5 Missiles)। দেশের প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থা (DRDO)-র নেতৃত্বে তৈরি হয়েছে এমন কিছু ক্ষেপণাস্ত্র, যেগুলি শুধু ভারতের সীমান্ত নয়, আন্তর্জাতিক স্তরেও ভয় জাগাতে সক্ষম। ভারতের সবচেয়ে বিধ্বংসী পাঁচটি ক্ষেপণাস্ত্র গুলি কি কি? যে ক্ষেপণাস্ত্র গুলির নাম শুনলেই ‘‘ত্রহি মাম’’ বলছে পাকিস্তান।
১. ব্রহ্মোস (Indian Top 5 Missiles)
ভারত ও রাশিয়ার যৌথ উদ্যোগে তৈরি এই সুপারসনিক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র বর্তমানে বিশ্বের অন্যতম দ্রুতগামী অস্ত্র(Indian Top 5 Missiles)। শব্দের তিন গুণ (মাক ২.৮–৩.০) বেগে ছুটে যাওয়া ব্রহ্মোস ২.৫ টন ওজনের ওয়ারহেড বহনে সক্ষম এবং প্রায় ৪০০ কিলোমিটার দূরে লক্ষ্যবস্তুতে নিখুঁত আঘাত হানতে পারে। এটি যুদ্ধজাহাজ, যুদ্ধবিমান, সাবমেরিন এবং স্থলভিত্তিক লঞ্চার থেকে উৎক্ষেপণযোগ্য। শত্রু রাডারের ফাঁকি দিয়ে সোজা টার্গেটে হানা দেওয়ার দক্ষতায় এটি বিশ্বের অন্যতম কার্যকরী ক্রুজ মিসাইল। ব্রহ্মোস বর্তমানে ভারতীয় সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর অস্ত্রভাণ্ডারে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে রয়েছে।
২. অগ্নি সিরিজ (Indian Top 5 Missiles)
ভারতের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির গর্ব ‘অগ্নি’। এর পাঁচটি সংস্করণ রয়েছে — অগ্নি-১ থেকে অগ্নি-৫ পর্যন্ত(Indian Top 5 Missiles)। এদের মধ্যে সবচেয়ে আধুনিক অগ্নি-৫, যা ৫,০০০–৮,০০০ কিলোমিটার পর্যন্ত পাল্লার এবং পারমাণবিক ওয়ারহেড বহনে সক্ষম। এটি আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র (ICBM) শ্রেণিভুক্ত। অগ্নি-১ তুলনামূলক ছোট পাল্লার (৭০০–১,২০০ কিমি), তবে অগ্নি-৪ এবং ৫-এর মতন ক্ষেপণাস্ত্র চীন কিংবা ইউরোপীয় দেশগুলিকেও নিশানায় নিতে পারে। এগুলি মোবাইল লঞ্চার থেকে উৎক্ষেপণযোগ্য এবং শত্রু প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভেদ করে আঘাত হানতে সক্ষম।

আরও পড়ুন: India Pak Tension : পাক সেনাপ্রধানের পর জয়শঙ্করকে ফোন রুবিয়োর! সংযমের বার্তা মার্কিন বিদেশসচিবের
৩. প্রলয় (Indian Top 5 Missiles)
সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি ‘প্রলয়’ ক্ষেপণাস্ত্র DRDO-র এক যুগান্তকারী সাফল্য(Indian Top 5 Missiles)। এটি একটি কল্পনাতীত গতিতে চলা ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র, যার পাল্লা ১৫০–৫০০ কিলোমিটার। এটি একাধিক ওয়ারহেড বহনে সক্ষম এবং মাঝ আকাশে নিজের গতিপথ বদলাতে পারে, যার ফলে শত্রুর ইন্টারসেপ্টর ক্ষেপণাস্ত্র এড়িয়ে নির্ভুল আঘাত হানতে পারে। প্রলয় হালকা ও উচ্চ বিস্ফোরক বহনে সক্ষম হওয়ায় এটি পার্বত্য বা দুর্গম এলাকাতেও সহজে ব্যবহারযোগ্য। এটি স্থলসেনা ও বায়ুসেনা উভয়েই ব্যবহার করতে পারে। গালওয়ান সংঘর্ষের পর ভারতের পূর্ব লাদাখ সীমান্তে এই ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন করা হয়েছিল।

৪. নির্ভয় (Indian Top 5 Missiles)
‘নির্ভয়’ একটি দীর্ঘ পাল্লার সাবসনিক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র, যা DRDO কর্তৃক সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি (Indian Top 5 Missiles)। এর পাল্লা ১,০০০ থেকে ১,৫০০ কিলোমিটার এবং এটি পরমাণু ওয়ারহেড বহনেও সক্ষম। বিশেষত্ব হল, এটি লো-অল্টিচিউডে শত্রুপক্ষের রাডারকে ফাঁকি দিয়ে চলতে পারে এবং বিভিন্ন ভূখণ্ড অনুযায়ী গতিপথ পরিবর্তন করতে পারে। শত্রু যুদ্ধজাহাজ, সামরিক ঘাঁটি ও অন্যান্য কৌশলগত লক্ষ্যবস্তুতে নিখুঁত আঘাত হানার ক্ষমতা রাখে নির্ভয়। ২০১৭ সালে এর সফল পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণের পর ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর হাতে এই মিসাইল তুলে দেওয়া হয়েছে।
৫. শৌর্য (Indian Top 5 Missiles)
‘শৌর্য’ হল ভারতের অত্যাধুনিক হাইপারসনিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র, যার গতি শব্দের পাঁচ গুণের বেশি (Indian Top 5 Missiles)। এটি ভূমি থেকে উৎক্ষেপণযোগ্য এবং ৭০০–৮০০ কিলোমিটার পর্যন্ত পাল্লার। পারমাণবিক ওয়ারহেড বহনে সক্ষম এই ক্ষেপণাস্ত্র শত্রু রাডার ফাঁকি দিয়ে চলার জন্য পরিচিত। শৌর্যের লঞ্চ পদ্ধতি অত্যন্ত জটিল ও গোপনীয়। এটি ক্যানিস্টার লঞ্চ পদ্ধতিতে উৎক্ষেপণ করা হয়, যার ফলে দ্রুত মোতায়েন করা যায় এবং গোপনে ব্যবহার সম্ভব।
আক্রমণের চেয়ে প্রতিরক্ষায় অগ্রাধিকার (Indian Top 5 Missiles)
যদিও ভারত কখনও আগ্রাসনের পথ নেয় না, তবে প্রতিপক্ষের আগ্রাসন প্রতিহত করতে তার প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা যে কতটা আধুনিক এবং কার্যকর, এই পাঁচটি ক্ষেপণাস্ত্রই তার প্রমাণ (Indian Top 5 Missiles)। DRDO এবং ভারতীয় সেনাবাহিনীর সমন্বয়ে গড়ে ওঠা এই ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি ভারতকে শুধু দক্ষিণ এশিয়াই নয়, গোটা বিশ্বে একটি শক্তিশালী সামরিক শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।বর্তমান ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতিতে ভারতের এই ক্ষেপণাস্ত্র সম্ভার শুধু প্রতিরক্ষা নয়, এক গভীর বার্তাও বহন করছে – সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে আপসহীন এবং সীমান্তের নিরাপত্তায় অটল।