ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: গত বুধবার দিল্লি থেকে শ্রীনগরের (Indigo Plane Turbulence) উদ্দেশে ঊর্ধ্বগামী ইন্ডিগো এয়ারলাইন্সের ৬ই২১৪২ ফ্লাইটের সামনের ‘নাক’ অংশ ভেঙে যাওয়ার ঘটনা আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এসেছে। বিমানে যাত্রী ছিলেন ২০০-এর বেশি, যাদের মধ্যে তৃণমূল কংগ্রেসের একটি প্রতিনিধিদলও ছিল। যদিও এই দুর্ঘটনায় কেউ হতাহত হননি, তবুও দুর্ঘটনার কারণ ও পরিস্থিতি জানতে ইতিমধ্যেই ভারতের অসামরিক বিমান চলাচল নিয়ন্ত্রণ সংস্থা ডিজিসিএ তদন্ত শুরু করেছে।
নর্দার্ন কন্ট্রোলে পথ পরিবর্তনের অনুমতি (Indigo Plane Turbulence)
বিবৃতিতে ডিজিসিএ জানিয়েছে, ওইদিন বিমানটি পথে প্রচণ্ড ঝড়-ঝাপটা এবং শিলাবৃষ্টির (Indigo Plane Turbulence) সম্মুখীন হয়। পঠানকোট এলাকার ওপর দিয়ে যাত্রা করার সময় পাইলট একটি বজ্রগর্ভ মেঘ দেখতে পান, যেটি বিমানটির জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। এ সময় পাইলট প্রথমে ভারতের বায়ুসেনার নর্দার্ন কন্ট্রোলে পথ পরিবর্তনের অনুমতি চেয়েছিলেন। বিমানের পক্ষে ছিল শিলাবৃষ্টির হাত থেকে বাঁচার জন্য আন্তর্জাতিক সীমান্তের কাছাকাছি বাঁ দিকে সরার প্রয়োজন। কিন্তু ভারতীয় বায়ুসেনা অনুমতি দেননি। এরপর পাকিস্তানের লাহৌর এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোলের সঙ্গে যোগাযোগ করে পাইলট একই অনুমতি চেয়েছিলেন, কিন্তু পাকিস্তানও তা মঞ্জুর করেনি।
বার বার ওঠানামা করছিল বিমান (Indigo Plane Turbulence)
এই দুই দেশের কাছ থেকে অনুমতি না পেয়ে পাইলট বাধ্য হয়ে বজ্রগর্ভ (Indigo Plane Turbulence) মেঘের মধ্য দিয়ে বিমান চালানোর সিদ্ধান্ত নেন। মেঘের ভেতরে প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গে বিমানটি প্রবলভাবে দুলতে শুরু করে। বিমানটির উচ্চতা বার বার ওঠানামা করছিল এবং তা বেশ ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতি তৈরি করেছিল। ডিজিসিএর বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বিমানটি একসময় ৮৫০০ ফুট নিচে নেমে গিয়েছিল, এবং তার গতিও ওঠানামা করছিল। জরুরি অবস্থায় পাইলট ‘অটোপাইলট’ প্রযুক্তি বন্ধ করে ‘ম্যানুয়াল’ নিয়ন্ত্রণে নিয়ে বিমান চালান।
ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতি
এরপরও বিমানটি সুষ্ঠুভাবে শ্রীনগর বিমানবন্দরে অবতরণ করলেও এই ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতির কারণে বিমানের সামনের অংশ ভেঙে যায়। কোনো যাত্রী আহত হননি। এটি অত্যন্ত উদ্বেগজনক যে পাকিস্তান ভারতকে আকাশসীমা ব্যবহার করতে দেয়নি, যার কারণে পাইলটকে ঝুঁকি নিয়ে এমন পরিস্থিতিতে বিমান চালাতে হয়। পহেলগাঁও জঙ্গি হামলার পর পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের উত্তেজনার কারণে পাকিস্তান তাদের আকাশসীমা ভারতীয় বিমানগুলোর জন্য বন্ধ করে রেখেছে, যা বিমান চলাচলের জন্য বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর প্রভাব স্পষ্টভাবে এই দুর্ঘটনায় প্রতিফলিত হয়েছে।

আকাশসীমার ব্যবহার নিশ্চিত
পরবর্তীতে ডিজিসিএ তদন্তের মাধ্যমে বিমান চালনার নিরাপত্তা ও নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী করার দিক নির্দেশনা দেওয়ার চেষ্টা করবে। এর পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বিমান চলাচল নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার মধ্যে সমন্বয় বাড়ানো ও আকাশসীমার ব্যবহার নিশ্চিত করা একান্ত জরুরি হয়ে উঠেছে, যাতে ভবিষ্যতে এমন বিপজ্জনক পরিস্থিতি এড়ানো যায়।
আরও পড়ুন: Folharini Kalipuja: ফলহারিণী অমাবস্যার দিন করুন এই কাজগুলো, জীবনে আসবে সুখ, দূর হবে সকল সংকট!
এই ঘটনাটি আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে, রাজনীতি ও কূটনীতির কারণে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা ঝুঁকিতে ফেললে তার দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব কতটা ভয়ানক হতে পারে। নিরাপদ ও নিরবিচ্ছিন্ন বিমান চলাচলের জন্য আন্তর্জাতিক সহযোগিতা অপরিহার্য।