ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে ভেবে নিশ্চিন্তে ঘুমাতে গিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (Donald J. Trump)। অন্তত তাঁর আগের রাতের পোস্টগুলো দেখে তাই মনে হচ্ছিল (Iran Israel Conflict)। কিন্তু মঙ্গলবার সকালে (ভারতীয় সময় বিকেল সাড়ে ৪টে নাগাদ) ঘুম ভেঙে ট্রাম্প যেন পেলেন যুদ্ধবিরতির ভাঙা স্বপ্নের মুখোমুখি হতে। এবং তখনই বিস্ফোরক সিদ্ধান্ত,বন্ধু ইজরায়েলকে সরাসরি নির্দেশ দিলেন, “ইরানে বোমা ফেলো না।”
ইজরায়েলের দিকে আঙুল (Iran Israel Conflict)
মঙ্গলবার সকালে নেটোর হেগ সম্মেলনে যোগ দেওয়ার আগে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ট্রাম্প বলেন, “ইরান ও ইজরায়েল—দু’পক্ষই যুদ্ধবিরতির শর্ত ভেঙেছে (Iran Israel Conflict)। কিন্তু ইজরায়েলের আচরণে আমি খুবই হতাশ।” এর কিছুক্ষণ পরেই নিজের সমাজমাধ্যমে একটি পোস্টে তিনি লেখেন, “ওই বোমাগুলি ছুড়ো না। তুমি যদি এটা করো, তবে বড় লঙ্ঘন হবে। এখনই তোমার পাইলটদের ফিরিয়ে নাও।” এই বার্তায় স্পষ্ট, ওয়াশিংটন চাইছে যুদ্ধ আর না বাড়ুক। তবে ট্রাম্পের হতাশা বোঝা যাচ্ছে, যুদ্ধবিরতি ঘোষণার ১২ ঘণ্টার মধ্যেই পরিস্থিতি আবার উত্তপ্ত।
ইজ়রায়েলের দাবি, ইরানের আগ্রাসন (Iran Israel Conflict)
সোমবার রাতে ট্রাম্পের তৃতীয় পোস্টে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা ছিল: ইরান ও ইজ়রায়েল ১২ দিনের যুদ্ধ শেষ করে শান্তির পথে হাঁটবে (Iran Israel Conflict)। ইজ়রায়েল সেই প্রস্তাবে সম্মতি জানিয়েছিল এবং প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে সমর্থন করে বিবৃতি দেয়। কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যেই ইজ়রায়েল দাবি করে, ইরান যুদ্ধবিরতি ভেঙে হামলা চালিয়েছে। তাই তেহরানের দিকে হামলার নির্দেশ দেন দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী।

ইরানের পাল্টা বক্তব্য (Iran Israel Conflict)
এই অভিযোগ নস্যাৎ করে ইরান দাবি করে, তাদের সামরিক বাহিনী কোনও যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করেনি। উলটে, ইজ়রায়েলই যুদ্ধবিরতির নামে কৌশলী আগ্রাসন চালাচ্ছে বলে দাবি তেহরানের। ইরানের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের বিবৃতি জানায়, “জায়নবাদী শত্রু এবং তাদের সমর্থকদের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই শেষ হয়েছে। আমরা যুদ্ধবিরতির পথেই হাঁটছি।” তবে ইরান সতর্ক করে দেয়, শত্রু পক্ষ যদি যুদ্ধবিরতি ভাঙে, তাহলে তার উপযুক্ত জবাব দেওয়া হবে।
যুদ্ধবিরতির ভবিষ্যৎ (Iran Israel Conflict)
ঘটনার এই ঘনঘটায় প্রশ্ন উঠছে—যুদ্ধবিরতি আদৌ কার্যকর আছে কি? যদিও ট্রাম্প যুদ্ধবিরতি রক্ষার শেষ চেষ্টা করছেন বলেই মনে করা হচ্ছে। তাঁর সাম্প্রতিক পোস্ট সেই আশারই ইঙ্গিত দেয়। তবে যদি ইজ়রায়েল তেহরানে হামলা চালায়, তাহলে ইরানের পাল্টা জবাব যে আসবে, তাতে সন্দেহ নেই। আর তখনই যুদ্ধবিরতি সম্পূর্ণভাবে ভেঙে পড়তে পারে।

কূটনীতির দিশা কোথায়? (Iran Israel Conflict)
হোয়াইট হাউস সূত্রে খবর, কাতার এখনও মধ্যস্থতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে (Iran Israel Conflict)। তবে পরিস্থিতি যেভাবে দ্রুত বদলাচ্ছে, তাতে শান্তির পথ খুঁজে বের করা সহজ হবে না। ইজ়রায়েলের অভ্যন্তরীণ মহলে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার প্রবল চাপ রয়েছে, আবার ইরানও চাইছে পরমাণু কর্মসূচি রক্ষায় কঠোর মনোভাব রাখতে। ট্রাম্প চাইলেও যুদ্ধ থামছে না। আর যদি যুদ্ধবিরতি ভাঙে ইজ়রায়েল, তাহলে হয়তো ওয়াশিংটনের সঙ্গে তেল আভিভের সম্পর্কে নতুন চাপ তৈরি হতে পারে। এই মুহূর্তে বিশ্বজুড়ে প্রশ্ন একটাই, ট্রাম্পের “না ফেলো বোমা”—এই বার্তা আদৌ শুনবে ইজ়রায়েল?