ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতোল্লা আলি খামেনেইকে (Khamenei) হত্যা করতে চেয়েছিল ইজরায়েল!সাম্প্রতিক যুদ্ধবিরতির আবহে এই চাঞ্চল্যকর দাবি করলেন ইজরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইজরায়েল কাট্জ (Iran Israel Conflict)। তিনটি প্রধান ইজরায়েলি সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে তিনি স্বীকার করেন, ইরানের পরমাণুকেন্দ্রগুলির পাশাপাশি খামেনেইও ছিল তাদের ‘টার্গেট লিস্ট’-এ।
খুঁজেও পাওয়া যায়নি ‘টার্গেট নম্বর ওয়ান’ (Iran Israel Conflict)
ইজরায়েলের চ্যানেল ১৩-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কাট্জ় বলেন, “যদি উনি আমাদের নজরে থাকতেন, আমরা তাঁকে হত্যা করতাম। আমরা বহু চেষ্টা করেছি, কিন্তু তাঁকে খুঁজে বার করতে পারিনি (Iran Israel Conflict)।” আরও বিস্ফোরক দাবি করেছেন তিনি সরকারি সম্প্রচারমাধ্যম ‘কান’-এ। বলেন, “খামেনেই বুঝতে পেরেছিলেন আমরা তাঁকে টার্গেট করতে পারি। তাই তিনি গা ঢাকা দেন এবং ইরানের শীর্ষ সেনা-কমান্ডের সঙ্গে সমস্ত যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করেন। এই কৌশলের জন্যই তাঁকে শেষ পর্যন্ত খুঁজে পাওয়া যায়নি।”
মার্কিন অনুমতির প্রয়োজন হয়নি (Iran Israel Conflict)
প্রতিরক্ষামন্ত্রী স্পষ্ট ভাষায় জানিয়েছেন, ইজরায়েল এই পরিকল্পনা করতে আমেরিকার অনুমতির প্রয়োজন মনে করেনি। যদিও ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে গোয়েন্দা তথ্য আদানপ্রদান চলছিল, কিন্তু খামেনেইকে খুন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে সেটি ইজরায়েল একাই কার্যকর করত।

ট্রাম্পের হুঁশিয়ারি ও পিছু হটা (Iran Israel Conflict)
গত ১৭ জুন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এক বক্তব্যে খামেনেইকে সতর্ক করে বলেছিলেন, “আমরা জানি সে কোথায় লুকিয়ে আছে। আমরা চাইলে তাকে বের করে দিতে পারি— এখন না হলেও পরে (Iran Israel Conflict)।” তবে ট্রাম্প পরবর্তীতে সেই বক্তব্য থেকে সরে এসে জানান, আমেরিকার উদ্দেশ্য ইরানের শাসনব্যবস্থা পরিবর্তন নয়। তিনি বলেন, “আমরা শুধু পরমাণু কর্মসূচি বন্ধ চাই। শাসক পরিবর্তন নয়।”
যুদ্ধবিরতির পরে পরিকল্পনায় বদল (Iran Israel Conflict)
ইজরায়েল ও ইরানের মধ্যে সাম্প্রতিক সংঘর্ষ শুরু হয়েছিল ১৩ জুন। একের পর এক পাল্টা হানায় উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পশ্চিম এশিয়া। সেই আবহেই ইজরায়েল এই সাহসী পরিকল্পনা নেয়, যা বাস্তবায়িত না হলেও তেহরানের শীর্ষ নেতৃত্বে প্রবল চাপ সৃষ্টি করে। তবে যুদ্ধবিরতির পরে ইজরায়েল এখন আর খামেনেইকে হত্যার পরিকল্পনায় নেই বলেই জানান কাট্জ। তিনি বলেন, “আমাদের উদ্দেশ্য ছিল চাপ সৃষ্টি করা, শাসনব্যবস্থা ধ্বংস করা নয়(Iran Israel Conflict)।”
খামেনেইর পাল্টা দাবি “এই জয় ইরানের!” (Iran Israel Conflict)
সংঘর্ষ থেমে যাওয়ার পরেই এক বক্তব্যে আয়াতোল্লা খামেনেই ইরানবাসীকে ‘যুদ্ধজয়ে’ অভিনন্দন জানান। তিনি দাবি করেন, ইজরায়েল ও আমেরিকা ধরেই নিয়েছিল,মার্কিন সেনা না এলে ইজরায়েল টিকবে না (Iran Israel Conflict)। সেই কারণেই আমেরিকা সরাসরি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। খামেনেই বলেন, “আমাদের ধ্বংস করতে চেয়েছিল তারা। কিন্তু ইরানের সাহস ও ঐক্য তা হতে দেয়নি।”
খামেনেইকে হত্যার ইজরায়েলি পরিকল্পনার এই স্বীকৃতি নতুন করে উত্তেজনা ছড়াল পশ্চিম এশিয়ায়। যদিও এখন যুদ্ধবিরতি চলছে, কিন্তু এই ঘটনা ইঙ্গিত দিচ্ছে, সংঘাত কখনওই শুধু মিসাইল বা বোমা পর্যন্ত সীমিত থাকে না— রাজনৈতিক ও ধর্মীয় নেতৃত্বকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টাও সমান গুরুত্বপূর্ণ ‘অস্ত্র’(Iran Israel Conflict)। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই স্বীকারোক্তি ইরানকে আন্তর্জাতিক পরিসরে আরও বেশি সহানুভূতির জায়গায় নিয়ে যেতে পারে, আর ইজরায়েলকে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে ঘিরে ধরতে পারে। যুদ্ধ থেমেছে বটে, কিন্তু ছায়াযুদ্ধ চলছেই।