ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ইরান ও ইজরায়েলের চলমান সংঘাতের আবহে বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (Iran Israel Conflict)। শুক্রবার তিনি দাবি করেন, ইরানের পাহাড়ের ভিতরে থাকা গভীর পরমাণুকেন্দ্রগুলিতে হামলা চালানোর মতো ক্ষমতা ইজরায়েলের নেই। তাঁর কথায়, “ওরা শুধু উপরের একটা ছোট অংশকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারবে। কিন্তু ভেতরের গুরুত্বপূর্ণ অংশে পৌঁছতে পারবে না। সেই ক্ষমতা ওদের নেই।”
কোন পরমাণুকেন্দ্রের কথা বলছেন ট্রাম্প? (Iran Israel Conflict)
ট্রাম্পের মন্তব্যের কেন্দ্রে রয়েছে ফোরদো নামের একটি ইরানি পরমাণুকেন্দ্র, যা পাহাড় কেটে মাটির প্রায় ৩০০ ফুট নিচে নির্মিত বলে দাবি বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার(Iran Israel Conflict)।
- এটি ইরানের অন্যতম গোপন ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্র।
- আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা ইতিমধ্যেই জানিয়েছে, সাম্প্রতিক ইজরায়েলি হামলায় কেন্দ্রটির বড়সড় কোনও ক্ষতি হয়নি।
‘বাঙ্কার বাস্টার’ ছাড়া সফল হামলা সম্ভব নয় (Iran Israel Conflict)
রিপোর্ট অনুযায়ী, ট্রাম্পের (Donald J. Trump) সঙ্গে আলোচনায় পেন্টাগনের আধিকারিকেরা জানিয়েছেন, আমেরিকার অত্যাধুনিক ‘বাঙ্কার বাস্টার’ বোমা ছাড়া এই ধরনের গভীর পরমাণু স্থাপনায় কার্যকর হামলা চালানো সম্ভব নয়(Iran Israel Conflict)। ট্রাম্পও স্বীকার করেন, “আমাদের নিশ্চিত হতে হবে, সত্যিই কি আমরা কেন্দ্রটি পুরোপুরি ধ্বংস করতে পারব। না হলে হামলা করে লাভ নেই।”
তাহলে কি আমেরিকা ইরানে হামলার পথে? (Iran Israel Conflict)
এই প্রশ্নে জবাবে ট্রাম্প কৌশলী ভঙ্গিতে বলেন, “ওটা হবে শেষ পদক্ষেপ।”
তিনি জানান—
- ইরানকে এখনই সময় দেওয়া হয়েছে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করতে।
- তবে আমেরিকার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত তিনি আগামী দু’সপ্তাহের মধ্যে নেবেন।
বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্পের এই মন্তব্য ইরানের বিরুদ্ধে মার্কিন হস্তক্ষেপের যুক্তি প্রতিষ্ঠা করার জন্য।
তিনি যেন বলতে চাইলেন, “ইজরায়েল যথেষ্ট নয়, তাই ইরানকে ঠেকাতে আমেরিকারই দরকার(Iran Israel Conflict)।”

ভূ-রাজনৈতিক বার্তা এবং প্রতিক্রিয়া (Iran Israel Conflict)
ট্রাম্পের এই বক্তব্যে কয়েকটি বার্তা স্পষ্ট,
- প্রথমত, ইজরায়েলের সামরিক সীমাবদ্ধতা তুলে ধরে তেহরানের আত্মবিশ্বাস নষ্ট করার কৌশল এটি।
- দ্বিতীয়ত, পেন্টাগনের সম্ভাব্য আগ্রাসনের পথ প্রশস্ত করার কৌশলগত ভূমিকা রয়েছে এর পেছনে।
ইজরায়েলের সরকার এই মন্তব্যে প্রকাশ্যে কোনও প্রতিক্রিয়া না জানালেও, প্রতিরক্ষামন্ত্রকের একটি অন্দর সূত্র বলেছে, “আমরা প্রস্তুত এবং একা নই। আমাদের মিত্রদের সঙ্গে মিলেই পদক্ষেপ নেব।”

আরও পড়ুন: Israel Hamas Conflict : শিশুহত্যা ও অত্যাচারের অভিযোগে ফের রাষ্ট্রপুঞ্জের কালো তালিকায় ইজরায়েল!
‘দু’সপ্তাহ পরের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত’ (Iran Israel Conflict)
ইরান-ইজরায়েল সংঘাতের আবহে মার্কিন প্রেসিডেন্টের এই প্রকাশ্য ‘সীমাবদ্ধতা স্বীকার’ কূটনৈতিকভাবে যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। এর মাধ্যমে একদিকে যেমন তেহরানকে বার্তা দেওয়া হচ্ছে, অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রকে কেন্দ্র করে সম্ভাব্য সামরিক অভিযানের জন্য মনস্তাত্ত্বিক প্রস্তুতি নিচ্ছে ওয়াশিংটন।এখন নজর থাকবে ট্রাম্পের সেই ‘দু’সপ্তাহ পরের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত’-এর দিকেই। তবে আন্তর্জাতিক রাজনীতি যে আরও উত্তপ্ত হতে চলেছে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।