ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: একসঙ্গে পাঁচটি বোয়িং ৭৪৭ বিমান চিন থেকে উড়ে গেল ইরানের দিকে—এমন তথ্য সামনে আসতেই বিশ্ব কূটনীতি ও প্রতিরক্ষা মহলে আলোড়ন (Iran Israel Conflict)। মার্কিন সংবাদমাধ্যম ‘ফক্স নিউজ়’ এবং বিমান চলাচল নজরদারি সংস্থা ‘ফ্লাইটরেডার২৪’-এর তথ্য অনুযায়ী, এই বিমানগুলির গতিপথ সন্দেহজনক এবং উদ্দেশ্য ‘রহস্যময়’ বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
ফ্লাইট রুটে ধোঁয়াশা (Iran Israel Conflict)
ফ্লাইটরেডার-এর তথ্য অনুসারে, বোয়িং বিমানগুলি উত্তর চিন থেকে উড়ে প্রথমে কাজ়াখস্তান, তার পর উজ়বেকিস্তান ও তুর্কমেনিস্তান হয়ে ইরানের দিকে এগোয়। কিন্তু এর পরেই বিমানগুলির রেডার সিগন্যাল নিখোঁজ হয়ে যায়। সাধারণত ইউরোপ বা মধ্যপ্রাচ্যগামী বোয়িং ৭৪৭ বিমানগুলির ট্র্যাকিং সম্ভব হয়। কিন্তু এই পাঁচটি বিমান কোথায় নামল বা আদৌ ইরানেই পৌঁছল কি না, তা জানা যায়নি।
কি ছিল বিমানে? খাদ্য, অস্ত্র, না অন্য কিছু? (Iran Israel Conflict)
বিমানগুলি যুদ্ধবিমান না হলেও, বোয়িং ৭৪৭ একটি বড় ক্ষমতাসম্পন্ন কার্গো বিমান। এসব উড়ানে অস্ত্র, সামরিক সরঞ্জাম, খাদ্যসামগ্রী কিংবা প্রযুক্তি সরবরাহ করাও সম্ভব। বিশেষজ্ঞদের অনুমান, ইরানের (Seyed Abbas Araghchi) সঙ্গে চলমান যুদ্ধে পরোক্ষ সমর্থন দিতে পারে বেজিং। যদিও চিন সরকার কিংবা সংশ্লিষ্ট উড়ান সংস্থা এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেনি।
চিন-ইরান কৌশলগত বন্ধুত্ব (Iran Israel Conflict)
বেজিং ও তেহরানের সম্পর্ক ঐতিহাসিক ভাবে ঘনিষ্ঠ (Iran Israel Conflict)। চিনের আমদানি করা জ্বালানির একটি বড় অংশ আসে ইরান থেকেই। পশ্চিম এশিয়ায় প্রভাব বিস্তারে ইরান চিনের গুরুত্বপূর্ণ সঙ্গী। অপরদিকে, মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোট যখন ইরানকে কোণঠাসা করতে চায়, তখন এই ধরনের আচরণকে ‘প্রতিরূপ কূটনৈতিক চালে’ রূপান্তর বলেই দেখছেন বিশ্লেষকেরা।
যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা প্রতিক্রিয়া (Iran Israel Conflict)
চিনের এই বিমানের গন্তব্য নিয়ে মার্কিন গোয়েন্দা মহলে উদ্বেগ বাড়ছে। যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, চিন ‘আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা’ এড়িয়ে তেহরানকে সাহায্য করতে চাইছে। যদিও সরাসরি প্রমাণ না থাকায় কোনও দেশের তরফেই এখনও আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আনা হয়নি। তবে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর ইতিমধ্যেই পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রেখেছে বলে ইঙ্গিত দিয়েছে।
চলমান সংঘাতে নতুন মোড়? (Iran Israel Conflict)
ইরান-ইজ়রায়েল সংঘাত সপ্তম দিনে প্রবেশ করেছে। এই প্রেক্ষাপটে চিনের পণ্যবাহী বিমানের ইরানের দিকে যাত্রা নতুন এক কূটনৈতিক সমীকরণের ইঙ্গিত দিতে পারে। যদি সত্যিই ওই বিমানে অস্ত্র বা সামরিক সহায়তা পাঠানো হয়ে থাকে, তবে পশ্চিম এশিয়ায় সংঘাত আরও ঘনীভূত হতে পারে।
আরও পড়ুন:California Unrest : ন্যাশনাল গার্ড নামিয়ে ভুল করেননি ট্রাম্প, জানাল মার্কিন ফেডেরাল আপিল আদালতের
বিশ্ব শক্তির সংঘাতে তৃতীয় পক্ষের অনুপ্রবেশ (Iran Israel Conflict)
যদিও এখনও পর্যন্ত এসব উড়ানের উদ্দেশ্য সম্পর্কে নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছে না, তবুও ‘রহস্যময় কার্গো বিমানের’ এমন প্রবেশ বিশ্ব রাজনীতিতে এক নতুন ধাঁধা তৈরি করেছে (Iran Israel Conflict)। চিন কি সত্যিই ইরানকে ঠেকায় পাশা খেলছে? নাকি এই উড়ান ছিল নিছকই বাণিজ্যিক? পরবর্তী কয়েকদিনের পর্যবেক্ষণ এবং সম্ভাব্য স্যাটেলাইট চিত্র বিশ্লেষণ হয়তো এই ‘গোপন উড়ান’-এর রহস্য ভেদ করতে পারবে। আপাতত বিশ্বজুড়ে নজর রয়েছে বেজিং এবং তেহরানের পরবর্তী পদক্ষেপের দিকে।
