ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: পশ্চিম এশিয়ায় টানা ১২ দিনের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের (Donald J. Trump)মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতির ঘোষণা হলেও, বাস্তব পরিস্থিতি তেমন আশাব্যঞ্জক নয়(Iran Israel Conflict)। ইরান ও ইজরায়েলের মধ্যে বারংবার সংঘর্ষ থামার ইঙ্গিত মিললেও, পাল্টা হামলার অভিযোগে উত্তপ্ত হয়ে উঠছে অঞ্চলটি। এমনকি যুদ্ধবিরতির মূল ধারক হিসেবে ট্রাম্পকেই এখন বারবার ব্যাখ্যা দিতে হচ্ছে।
দুই দেশই যুদ্ধবিরতির শর্তে সম্মত (Iran Israel Conflict)
ট্রাম্পের দাবিতে, ইরান ও ইজরায়েল—দুই দেশই যুদ্ধবিরতির শর্তে সম্মত হয়েছিল(Iran Israel Conflict)। তাঁর সমাজমাধ্যম পোস্টে বলা হয়, প্রথমে ইরান সংঘর্ষ থামাবে, ১২ ঘণ্টা পর ইজরায়েল। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে টানা ১২ দিনের যুদ্ধ শেষ হবে। কিন্তু বাস্তবে এই পরিকল্পনার বাস্তবায়ন নিয়ে একাধিক প্রশ্ন উঠেছে।
যুদ্ধবিরতি ঘোষণার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ইজরায়েল অভিযোগ তোলে, ইরান আবারও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। দক্ষিণ ইজরায়েলের বেরশেবা শহরে হামলায় তিনজনের মৃত্যু হয়। পাল্টা জবাবে ইজরায়েলও উত্তর ইরানের আবাসন এলাকাকে নিশানা করে, যাতে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ১৬ জন। আহত হয়েছেন বহু। ফলে দুই দেশই যুদ্ধবিরতির শর্ত লঙ্ঘনের অভিযোগে একে অপরের দিকে আঙুল তুলেছে।
ইজরায়েলের আচরণে অসন্তোষ প্রকাশ ট্রাম্পের (Iran Israel Conflict)
ট্রাম্প একাধিকবার ইজরায়েলের আচরণে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন(Iran Israel Conflict)। মঙ্গলবার সকালে একটি পোস্টে তিনি লেখেন, “ যদি বোমা ফেলো, তা হলে যুদ্ধবিরতির শর্ত লঙ্ঘন হবে। এখনই পাইলটদের ফিরিয়ে নাও।” একই সঙ্গে তিনি জানান, পুতিন তাঁকে ফোন করে এই সংঘাত থামাতে সাহায্যের প্রস্তাব দেন। যদিও ট্রাম্প তা প্রত্যাখ্যান করে জানান, বরং রাশিয়াকেই সাহায্য করতে চান তিনি।

আরও পড়ুন: Iran Israel Conflict : পুতিনের ‘সাহায্য’ প্রত্যাখ্যান! ইরান-ইজরায়েল সংঘাতে একাই মধ্যস্থতায় ট্রাম্প
যুদ্ধবিরতিতে কাতার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা (Iran Israel Conflict)
কূটনৈতিক স্তরে এই সংঘর্ষ থামাতে কাতারের ভূমিকাও ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ(Iran Israel Conflict)। জাতিসংঘে নিযুক্ত ইরানের রাষ্ট্রদূত আমির সাইদ ইরভানি কাতারকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, “ইজরায়েলের আগ্রাসন রুখে যুদ্ধবিরতিতে কাতার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছে।” সৌদি আরব এবং ইরানও কূটনৈতিক আলোচনায় প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে খবর।
ইরানের পরমাণুকেন্দ্রে মার্কিন বাঙ্কার বোমার হামলা নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। ট্রাম্প এবং তাঁর প্রশাসনের দাবি, হামলায় তিনটি কেন্দ্র সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়েছে। কিন্তু মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্ট বলছে, ইউরেনিয়াম ও সেন্ট্রিফিউজগুলি অক্ষত রয়েছে। কয়েক মাসের জন্য কর্মসূচি বিলম্বিত হলেও কেন্দ্রগুলি ধ্বংস হয়নি। হোয়াইট হাউস এই রিপোর্টকে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলে উড়িয়ে দিয়েছে।
‘ঐতিহাসিক জয়’ দাবি ইরান ও ইজরায়েলের (Iran Israel Conflict)
ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু এবং ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান—দু’জনই নিজেদের ‘ঐতিহাসিক জয়’ দাবি করেছেন(Iran Israel Conflict)। জাতিসংঘে ইজরায়েলের প্রতিনিধি জানান, দুই দেশের মধ্যে শীঘ্রই কূটনৈতিক আলোচনার সম্ভাবনা রয়েছে।
যদিও ট্রাম্প শান্তি প্রক্রিয়ায় নেতৃত্বের দাবি করলেও, ইরান এখনও পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে যুদ্ধবিরতিতে সম্মতি দেয়নি। তেহরানের তরফে জানানো হয়েছে, শত্রু নতুন করে হামলা না চালালে তারাও সংঘর্ষে যাবে না। এই পরিস্থিতিতে বিশ্বের দৃষ্টি এখন কূটনীতির দিকেই। যুদ্ধ থামলেও, শান্তি এখনো বহু দূরের পথ।