ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে সম্প্রতি সংঘটিত ভয়াবহ জঙ্গি হামলার পর ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার আবহে শান্তির বার্তা নিয়ে এগিয়ে এল ইরান(Iran On India Pakistan Conflict)। ইরানের বিদেশমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি (Seyed Abbas Araghchi) সোমবার পাকিস্তান সফরে এসে ইসলামাবাদে উভয় দেশের মধ্যে মধ্যস্থতার প্রস্তাব দেন। চলতি সপ্তাহেই তিনি ভারত সফরে আসছেন, যেখানে শান্তি প্রতিষ্ঠা এবং কূটনৈতিক সমঝোতার বিষয়ে আলোচনা হবে বলে জানা গেছে।
পাকিস্তানের উপর দায় ভারতের (Iran On India Pakistan Conflict)
২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে সংঘটিত জঙ্গি হামলায় প্রাণ হারান অন্তত ২৬ জন(Iran On India Pakistan Conflict)। এই ঘটনায় ভারত সরাসরি পাকিস্তানকে দায়ী করে এবং পাল্টা প্রতিক্রিয়া হিসেবে একাধিক কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করে। স্থগিত করা হয় সিন্ধু নদ জলবণ্টন চুক্তি, বন্ধ করে দেওয়া হয় দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক আদান-প্রদান এবং আকাশসীমা ব্যবহারের অনুমতি। এর ফলে দুই প্রতিবেশী দেশের সম্পর্ক একপ্রকার ভেঙে পড়েছে বলেই মনে করছেন কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা।
পাকিস্তানে পৌঁছান আব্বাস আরাঘচি (Iran On India Pakistan Conflict)
এই উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যেই শান্তির বার্তা নিয়ে আব্বাস আরাঘচি পাকিস্তানে পৌঁছান(Iran On India Pakistan Conflict)। ইসলামাবাদের বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “আমরা ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনার প্রশমন চাই। পাকিস্তানে আমাদের বন্ধুদের সঙ্গে এই বিষয় নিয়ে কথা বলব। প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী এবং বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে আঞ্চলিক সমস্যা ও দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে।”

আরও পড়ুন: Jerusalem Wildfire : জেরুসালেমের দাবানলে হামাস যোগ! ইজ়রায়েলের অভিযোগের পেছনে কারণ কি?
ইরানি বিদেশ মন্ত্রীর বার্তা (Iran On India Pakistan Conflict)
আব্বাস আরাঘচি আরও জানান, ইরান দুই দেশের সঙ্গেই গভীর কূটনৈতিক সম্পর্ক বজায় রেখেছে এবং আঞ্চলিক শান্তি রক্ষায় তেহরান সবসময়ই অগ্রণী ভূমিকা নিতে প্রস্তুত(Iran On India Pakistan Conflict)। এর আগেও তিনি ঘোষণা করেছিলেন, নয়াদিল্লি এবং ইসলামাবাদের মধ্যে আলোচনার জন্য ইরানের দূতাবাসের পরিকাঠামো ব্যবহার করার অনুমতি দেওয়া হবে।ইরানের পক্ষ থেকে এই ধরনের মধ্যস্থতার প্রস্তাব বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ, বিগত কয়েক দশকে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক একাধিক সংঘর্ষ ও উত্তেজনার মুখোমুখি হয়েছে, তবে তৃতীয় কোনো শক্তির সরাসরি মধ্যস্থতার চেষ্টা খুব কমই দেখা গেছে।

সমস্যা বৃদ্ধি নয় (Iran On India Pakistan Conflict)
আন্তর্জাতিক মহল ইতিমধ্যেই এই পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে(Iran On India Pakistan Conflict)। আমেরিকা, চিন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং রাশিয়ার মতো প্রভাবশালী দেশ ও সংস্থাগুলি কূটনৈতিক পথে সমস্যার সমাধানের ডাক দিয়েছে। এবার ইরানও সেই একই বার্তা দিল, যা উপমহাদেশে কূটনৈতিক সমঝোতার নতুন দরজা খুলে দিতে পারে।জানা গেছে, পাকিস্তান সফর শেষ করে আব্বাস আরাঘচি ৭ ও ৮ মে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে আসবেন। বহু আগেই তাঁর ভারত সফরের দিন নির্ধারিত ছিল, তবে পহেলগাঁও হামলার কারণে সফর কিছুটা পিছিয়ে যায়।এখন দেখার বিষয়, এই উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে ইরানের এই কূটনৈতিক প্রয়াস কতটা ফলপ্রসূ হয় এবং ভারত-পাকিস্তানের সম্পর্ক নতুন করে শান্তির পথে এগিয়ে যায় কিনা।