ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ইরানের সঙ্গে বহুদিন ধরেই আমেরিকার সম্পর্কের টানাপোড়ন চলছে (Iran Refuse US Plan)। বিশেষ করে ইরানের পরমাণু প্রকল্প নিয়ে ব্যাপক অসম্মতি রয়েছে আমেরিকার। কিন্তু আমেরিকার অসম্মতির পরোয়া না করেই বার বার ইরান পরমাণু প্রকল্প এগিয়ে নিয়ে যাওয়া শুরু করেছিল। এজন্য বার বার আমেরিকার সঙ্গে উত্তেজনার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশটির। আমেরিকার একাধিক সন্দেহজনক পদক্ষেপের প্রমাণ দিয়েছে ইরান, যা তাদের পরমাণু প্রকল্পের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। আবারও নতুন করে ইরানকে দুমাসের ‘চূড়ান্ত সময়সীমা বেঁধে ডীল আমেরিকা। এই সময়সীমা না মানলে। ’
ইরানের বিরুদ্ধে অভিযোগ (Iran Refuse US Plan)
এমনকি আমেরিকার বিরুদ্ধে একাধিক সময় অভিযোগ উঠেছে (Iran Refuse US Plan)। ইরানের পরমাণু প্রকল্পকে স্থগিত করতে ইরানের কিছু উচ্চ পদস্থ আধিকারিক যারা পরমাণু প্রকল্পের সাথে যুক্ত রয়েছে তাদের ড্রোন ব্যবহার করে হত্যা পর্যন্ত করেছে। গত বছর ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইজি’র মৃত্যুর সময়েও তার বিমানটি দুর্ঘটনার কবলে পড়ার পেছনে আমেরিকার ও ইজরায়েলের হাত থাকতে পারে বলেও অভিযোগ উঠেছিল।
ইরানকে চূড়ান্ত সময়সীমা (Iran Refuse US Plan)
এমাসে ট্রাম্প নতুন পরমাণু চুক্তিতে রাজি হওয়ার জন্য ইরানকে দু’মাসের ‘চূড়ান্ত সময়সীমা’ বেঁধে দিয়েছেন (Iran Refuse US Plan)। এই চূড়ান্ত সময়সীমার মধ্যে কোনো পদক্ষেপ না নিলে তেহরানের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপ করা হতে পারে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন তিনি। আমেরিকার তরফ থেকে ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনেইকে একটি চিঠিতে এ বিষয় নিয়ে বার্তা দেওয়া হয়েছিল বলে জানা গেছে।

ট্রাম্পের চিঠি
আমেরিকার তরফ থেকে ট্রাম্পের চিঠি প্রসঙ্গে ইরানের বিদেশ মন্ত্রী আব্বাস ২০২৪ সালের ২৩ মে বলেছিলেন,আমেরিকার সঙ্গে কোনও বিষয় নিয়েই আলোচনা হতে পারে না যতক্ষণ কিছু বিষয় নিয়ে অবস্থান না বদল করে। কিন্তু অদ্ভুত বিষয় হল, আমেরিকার এই ঘটনার পরদিনই সুর কিছুটা নরম করে তিনি বলেছিলেন, ট্রাম্পের চিঠির বেশির ভাগই নাকি হুমকি ছিল। তবে সুযোগে কিছু নতুন দিগন্তও খুলে যেতে পারে। ইরান খুব দ্রুতই এই চিঠির জবাব দেবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদের তরফে আগেই জানানো হয়েছিল, ২০১৫ সালের খসড়া মেনে নতুন করে পরমাণু অস্ত্র নিরস্ত্রীকরণ করা হবে না।
আরও পড়ুন: Violent in Nepal: নেপালে হিন্দু রাজতন্ত্রের দাবি ঘিরে সংঘর্ষ, পুলিশ-বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষে মৃত ২
পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ
এরপর সেই চিঠির জবাব দিল ট্রাম্পের তরফে। ২০১৫ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ওবামার সময়ে ইরানের সঙ্গে তিন বছরের পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ চুক্তি করেছিল বিশ্বের ছয়টি শক্তিধর রাষ্ট্র। যাদের মধ্যে রয়েছে ব্রিটেন, ফ্রান্স, রাশিয়া, জার্মানি, চিন এবং আমেরিকা। এই চুক্তির নাম ছিল জয়েন্ট কমপ্রিহেনসিভ প্ল্যান অফ অ্যাকশন। ওই চুক্তি অনুসারে স্থির হয় ইরান পরমাণু অস্ত্র তৈরি বন্ধ রাখলে তেহরানের উপর থেকে সমস্ত নিষেধাজ্ঞা তুলে নেবে রাষ্ট্রপুঞ্জ-সহ আমেরিকা ও অন্যান্য বেশ কিছু দেশ। এই চুক্তির ফলে এক দিকে যেমন ইরানের পরমাণু প্রকল্পের আতঙ্ক থেকে হাঁপ ছেড়ে বেঁচে ছিল আমেরিকা। অন্যদিকে আমেরিকা-সহ পশ্চিমি দুনিয়া ইরানের ১০ হাজার ডলারের সম্পত্তি ফিরিয়ে দিয়েছিল।
আরও পড়ুন: Mayanmar Earthquake: মায়ানমার ও থাইল্যান্ডে ভূমিকম্পের জেরে মৃতের সংখ্যা ছাড়াল ১০০০
জাবাবি চিঠি
ট্রাম্পের সঙ্গে কোনো বৈঠক নয় বলে জবাবি চিঠিতে পরিস্কার জানিয়ে দিয়েছে আমেরিকা। আগেই দু’মাসের সময় সীমা জানানো হয়েছিল। এবার পরমাণু নিরস্ত্রীকরণের বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ না নিলে ট্রাম্প কী এবার সামরিক অভিযানের পথে হাঁটবে? সেই বিষয়ে এখনো ধোঁয়াশা রয়ে গেছে।