ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মন্তব্যে ক্ষুব্ধ তেহরান। পরমাণু চুক্তি নিয়ে আলোচনার আবহে ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতোল্লা আলি খামেনেইকে ‘অসম্মান’ করার অভিযোগে ট্রাম্পকে কড়া হুঁশিয়ারি দিলেন ইরানের বিদেশমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি (Iran US Relation)। শনিবার একটি সমাজমাধ্যম পোস্টে স্পষ্ট বার্তা দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘যদি ট্রাম্প সত্যিই কোনও চুক্তি চান, তবে তাঁকে আগে খামেনেইকে অসম্মান করা বন্ধ করতে হবে।’’
তীব্র আক্রমণ ট্রাম্পকে (Iran US Relation)
আরাগচি অভিযোগ করেন, ‘‘বারবার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প খামেনেইয়ের উদ্দেশে অবমাননাকর ভাষা ব্যবহার করছেন। এই অপমান ইরান মেনে নেবে না(Iran US Relation)। খামেনেই কেবল একজন নেতা নন, লক্ষ লক্ষ ইরানির আস্থা ও আত্মমর্যাদার প্রতীক। তাঁর বিরুদ্ধাচরণ মানেই গোটা জাতিকে অপমান করা।’’ বিদেশমন্ত্রী আরও বলেন, “আমরা ইজরায়েল এবং আমেরিকার সামনে মাথা নত করিনি, আর ভবিষ্যতেও করব না। ট্রাম্পকে বুঝতে হবে যে, শক্তিশালী ইরানের বিরুদ্ধে ভাষাগত আগ্রাসনও সমান ক্ষতিকর।”
পাল্টা অভিযোগ ট্রাম্পের (Iran US Relation)
এর আগেই সমাজমাধ্যমে দেওয়া এক বিবৃতিতে ডোনাল্ড ট্রাম্প (Donald J. Trump) দাবি করেন, তিনি চাইলেই খামেনেইকে হত্যা করতে পারতেন(Iran US Relation)। বলেন, “আমি জানতাম উনি কোথায় লুকিয়ে আছেন। কিন্তু আমি ইজ়রায়েল বা মার্কিন সেনাকে দিয়ে তাঁকে হত্যা করতে দিইনি। আমি তাঁকে একটি কুৎসিত মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচিয়েছি। অথচ কোনও কৃতজ্ঞতাই দেখাননি তিনি।” এছাড়াও ট্রাম্প দাবি করেন, তিনি ইরানের উপর থেকে নানা নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু তেহরান কেবল ‘‘ঘৃণা আর হুমকি’’ দিয়েই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। ফলত, এখন সেই প্রয়াসও তিনি বন্ধ করে দিয়েছেন।

আরও পড়ুন: Eurodrone : ভারতের সঙ্গে ইউরোড্রোন যৌথ উৎপাদনের প্রস্তাব ইউরোপীয় ইউনিয়নের, খতিয়ে দেখছে ডিআরডিও
যুদ্ধ-সংঘর্ষের প্রেক্ষাপট (Iran US Relation)
প্রসঙ্গত, ইজরায়েলের সঙ্গে টানা ১২ দিন সংঘর্ষে জড়িয়েছিল ইরান (Iran US Relation)। সেই যুদ্ধের শেষ দিকে আমেরিকাও সরাসরি অংশ নেয় এবং ইরানের তিনটি পরমাণুকেন্দ্রে হামলা চালায়। সেই আবহেই ঘোষণা করা হয় সংঘর্ষবিরতি। কিন্তু তার পরেও উত্তেজনা কমেনি। বরং রাজনৈতিক বিবৃতি ও নেতাদের ব্যক্তিগত আক্রমণ সেই উত্তেজনাকে আরও উস্কে দিয়েছে।

আরও পড়ুন: Iran Israel Conflict : আমেরিকার গালে থাপ্পড়—যুদ্ধবিরতির পর প্রথমবার মুখ খুললেন আয়াতোল্লা খামেনেই
আলোচনার ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত (Iran US Relation)
বিশেষজ্ঞদের মতে, ট্রাম্পের বক্তব্যের পর পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে(Iran US Relation)। রাজনৈতিক সৌজন্যের অভাব এবং ব্যক্তিগত আক্রমণের ফলে পরমাণু চুক্তির সম্ভাবনা আবারও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। ইরানের অবস্থান এখন স্পষ্ট— খামেনেইয়ের সম্মান রক্ষার শর্তেই তারা আলোচনায় বসবে। ইরানকে আলোচনার টেবিলে টানতে হলে আমেরিকাকে ভাষা ও ভঙ্গির ক্ষেত্রে আরও সংবেদনশীল হতে হবে— এমনটাই মত কূটনৈতিক মহলের একাংশের।
পরিস্থিতি ক্রমেই জটিল থেকে জটিলতর হয়ে উঠছে। চুক্তির সম্ভাবনা যতই গুরুত্বপূর্ণ হোক, ইরানের পক্ষে খামেনেইয়ের সম্মানকে পাশ কাটানো সম্ভব নয়। এখন দেখার, ট্রাম্প নিজের কৌশলে পরিবর্তন আনেন কি না— কারণ তাতে না হলে, তেহরানের দরজা আপাতত বন্ধই থাকছে।